সময়ের জনমাধ্যম

অজিত কুমার ডোভাল: ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার প্রধান মস্তিষ্ক

Zajira News

Last Updated on 10 months by admin

মোহাম্মদ এন. হক, জৌষ্ঠ বার্তা সম্পাদক, জাজিরা নিউজ: বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে অজিত ডোভালের ভূমিকা সম্পর্কে নানা মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে। বলা হয়ে থাকে, হাসিনা সরকারের সাথে ভারত সরকারের সম্পর্ক বজায় রাখতে এবং নিরাপত্তা ইস্যুতে অজিত ডোভাল কৌশলগত ভূমিকা পালন করেছেন। বর্তমানে হাসিনা সরকারের পতনের পর অজিত ডোভালকে দিয়ে ভারত সরকার নতুন পরিকল্পনা করছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

৫ই আগস্ট ২০২৪ তারিখে, শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে ভারতে পালিয়ে যান। তার বিমান হিন্দন বিমানবন্দরে অবতরণ করলে, তাকে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত কুমার ডোভাল স্বাগত জানান।

অজিত কুমার ডোভাল ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার একজন অনন্য কৌশলী এবং দেশের নিরাপত্তা রক্ষার জন্য তিনি অমূল্য ভূমিকা পালন করেছেন। তার জীবনের বিভিন্ন মিশন এবং কর্মযজ্ঞ তাকে ভারতের সর্বোচ্চ স্তরের নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

অজিত কুমার ডোভাল ১৯৪৫ সালের ২০ জানুয়ারি ভারতের উত্তরাখণ্ড রাজ্যের গড়ওয়ালে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা ছিলেন একজন সেনা অফিসার, ফলে ছোটবেলা থেকেই শৃঙ্খলাবদ্ধ জীবনযাপনের মধ্যে বেড়ে উঠেছেন। তিনি আগ্রা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ছোটবেলা থেকেই তার মধ্যে বুদ্ধিমত্তা এবং কৌশলগত চিন্তাভাবনার প্রবণতা ছিল। যা তাকে পরবর্তীকালে একজন অসাধারণ গোয়েন্দা অফিসার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে।

পুলিশের দায়িত্ব এবং গোয়েন্দা অভিযানের শুরু

অজিত ডোভাল ১৯৬৮ সালে ইন্ডিয়ান পুলিশ সার্ভিসে (আইপিএস) যোগদান করেন। তার কর্মজীবনের শুরু থেকে তিনি ঝুঁকিপূর্ণ এবং কৌশলগত মিশনগুলিতে অবদান রাখেন। বিশেষ করে গোয়েন্দা সংস্থার সাথে কাজের মাধ্যমে তার মেধা প্রকাশ পায়। তিনি বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অপারেশন পরিচালনা করে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থায় এক বিশেষ স্থান করে নেন।

তার জীবনের বিভিন্ন মিশন এবং কর্মযজ্ঞ

কেরালা দাঙ্গা: মেধা ও মনোবলের সংঘাত
১৯৭০-এর দশকে কেরালায় সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা শুরু হয়, যা ধর্মীয় এবং রাজনৈতিক বিরোধের কারণে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এই দাঙ্গায় একাধিক গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয় এবং প্রায়শই সহিংসতা মারাত্মক রূপ নেয়। সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার কারণে সাধারণ মানুষের জীবনযাপন বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে রাজ্য সরকারের নিয়ন্ত্রণ দুর্বল হয়ে পড়েছিল। পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়েছিল যে, স্থানীয় প্রশাসন এবং পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ হয়।

অজিত ডোভালের ভূমিকা:
এই জটিল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ইন্ডিয়ান ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো (আইবি) থেকে অজিত ডোভালকে কেরালায় পাঠানো হয়। তার কাজ ছিল দাঙ্গার পেছনে থাকা মূল নেতৃত্ব এবং সন্ত্রাসী উপাদানগুলিকে শনাক্ত করা এবং পরিস্থিতি নিরসনের কৌশল নির্ধারণ করা। ডোভাল সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করার জন্য প্রথমে স্থানীয় সমাজের নেতাদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা শুরু করেন। তিনি অত্যন্ত কৌশলে উভয় সম্প্রদায়ের মধ্যে মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করেন। পাশাপাশি, দাঙ্গাকারীদের চিহ্নিত করে তাদের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য পুলিশকে সহায়তা করেন।

সাফল্য:
ডোভালের কৌশলী পদক্ষেপ এবং নেতৃত্বের ফলে কেরালায় সহিংসতা নিয়ন্ত্রণে আসে এবং দ্রুত শান্তি পুনঃস্থাপন হয়। তার কার্যকরী কৌশল এবং গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের দক্ষতার জন্য তিনি কেরালায় দাঙ্গা দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এই সফলতার পর তার কৌশলগত দক্ষতা এবং নেতৃত্বের প্রশংসা করা হয়, এবং তাকে দিল্লিতে আইবির গুরুত্বপূর্ণ পদে স্থানান্তর করা হয়।

মিজোরামের বিদ্রোহ: চতুর কৌশলের বিজয়

১৯৬০-এর দশকে মিজোরামে বড় ধরনের বিদ্রোহ দেখা দেয়, যা মিজো জাতিগোষ্ঠীর স্বায়ত্তশাসনের দাবিতে শুরু হয়। মিজোরামের বিদ্রোহীরা মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্ট (MNF) গঠন করে এবং তারা ভারতের থেকে স্বাধীনতা দাবি করে। MNF-এর সঙ্গে ভারতীয় সেনাবাহিনীর সংঘর্ষ অনেক বছর ধরে চলে এবং এর ফলে প্রচুর প্রাণহানি ঘটে ও স্থানীয়রা ভীষণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মিজোরামের এই সংকট ভারতীয় কেন্দ্রীয় সরকারের জন্য এক বড় ধরনের নিরাপত্তা হুমকি হয়ে দাঁড়ায়।

অজিত ডোভালের ভূমিকা:
১৯৭০-এর দশকে অজিত ডোভাল ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর একজন কর্মকর্তা হিসেবে মিজোরামে যান। তার কাজ ছিল বিদ্রোহীদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে পরিস্থিতি শান্ত করা এবং তাদের আত্মসমর্পণ করানো। ডোভাল অত্যন্ত চতুরতার সঙ্গে মিজো নেতাদের সাথে ব্যক্তিগত যোগাযোগ স্থাপন করেন এবং তাদের সাথে আলোচনার জন্য গোপনে একাধিক বৈঠক করেন। তার নেতৃত্বে আইবি বিদ্রোহীদের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়। তিনি স্থানীয় জনগণের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব তৈরি করার জন্য কৌশল নেন এবং MNF-এর অনেক শীর্ষ নেতাকে ভারতীয় সরকারের পক্ষে আত্মসমর্পণে প্ররোচিত করেন।

সাফল্য:
অজিত ডোভালের কৌশলী এবং ধৈর্যশীল প্রচেষ্টার ফলে মিজো ন্যাশনাল ফ্রন্টের নেতারা ধীরে ধীরে অস্ত্র ত্যাগ করতে এবং ভারতীয় সংবিধানের অধীনে শান্তিপূর্ণ সমাধান গ্রহণ করতে সম্মত হন। ১৯৮৬ সালে মিজোরাম শান্তিচুক্তি (Mizoram Accord) স্বাক্ষরিত হয়, যার মাধ্যমে মিজোরাম সমস্যার সমাধান হয় এবং শান্তি পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়। ডোভালের এই কৌশলী ভূমিকার জন্য তাকে গোয়েন্দা সংস্থার মধ্যে একজন অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব হিসেবে গণ্য করা হয়।

খাহুতা পারমাণবিক প্ল্যান্ট: গোপন মিশনের মাস্টার

১৯৭০-এর দশকের শেষ দিকে এবং ১৯৮০-এর দশকের শুরুর দিকে পাকিস্তান তার খাহুতা নিউক্লিয়ার প্ল্যান্টে পারমাণবিক বোমা তৈরির কাজ শুরু করে। পাকিস্তানের এই পারমাণবিক প্রকল্প ভারতের জন্য একটি বড় ধরনের নিরাপত্তা হুমকি হিসেবে দেখা দেয়। পাকিস্তান তাদের পারমাণবিক কর্মসূচির জন্য চীন এবং উত্তর কোরিয়ার কাছ থেকে প্রযুক্তিগত সহায়তা নিচ্ছিল। ভারত এই প্রকল্প সম্পর্কে স্পষ্ট তথ্য না পাওয়ায় এটি বন্ধ করার জন্য কোনো কার্যকর কৌশল নিতে পারছিল না। ইন্দিরা গান্ধী সরকারের সময় এই পারমাণবিক কর্মসূচি ভারতের জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু হয়ে দাঁড়ায়।

অজিত ডোভালের ভূমিকা:
ইন্দিরা গান্ধী অজিত ডোভালকে পাকিস্তানের খাহুতা নিউক্লিয়ার প্ল্যান্ট নিয়ে তদন্ত করার এবং এটি বন্ধ করার কৌশল নির্ধারণের দায়িত্ব দেন। ডোভাল অত্যন্ত বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে পাকিস্তানে বেশ কয়েকবার গোপনে প্রবেশ করেন এবং সেখান থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করেন। তিনি খাহুতা প্ল্যান্টের বিজ্ঞানীদের কাছ থেকে তাদের চুলের নমুনা সংগ্রহের জন্য একটি চতুর পদ্ধতি ব্যবহার করেন, যা পরে ভারতীয় গবেষণাগারে পরীক্ষা করা হয় এবং তা থেকে পাকিস্তানের পারমাণবিক কর্মসূচির উন্নতির বিষয়ে তথ্য পাওয়া যায়। এর ফলে ভারত পাকিস্তানের পারমাণবিক সক্ষমতা সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা লাভ করে।

সাফল্য:
ডোভালের নেতৃত্বে এই মিশন অত্যন্ত সফল হয়, কারণ তার সংগ্রহ করা তথ্য ভারতের নিরাপত্তা সংস্থাগুলোকে পাকিস্তানের পারমাণবিক কর্মসূচির বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে সহায়ক হয়। ডোভালের এই প্রচেষ্টার জন্য তাকে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার ইতিহাসে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এবং চতুর গোয়েন্দা কর্মকর্তা হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

খালিস্তান আন্দোলন: অপারেশন ব্লু স্টারের নায়ক

১৯৮০-এর দশকে পাঞ্জাবে শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন, যা খালিস্তান আন্দোলন নামে পরিচিত, ভারতের অখণ্ডতার জন্য বড় ধরনের হুমকি হয়ে দাঁড়ায়। শিখ বিচ্ছিন্নতাবাদীরা খালিস্তান নামে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দাবি করে এবং তারা ভারতীয় সরকারের বিরুদ্ধে সশস্ত্র আন্দোলন শুরু করে। ১৯৮৪ সালে, শিখ বিদ্রোহীরা অমৃতসরের গোল্ডেন টেম্পলে আশ্রয় নেয় এবং এটি তাদের সামরিক ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করতে থাকে। পরিস্থিতি গুরুতর হলে ভারত সরকার সেনাবাহিনী প্রেরণ করে এবং অপারেশন ব্লু স্টার শুরু হয়, যার লক্ষ্য ছিল বিদ্রোহীদের নির্মূল করা।

অজিত ডোভালের ভূমিকা:
অপারেশন ব্লু স্টার শুরু হওয়ার আগে অজিত ডোভাল শিখ ভক্তের ছদ্মবেশে গোল্ডেন টেম্পলে প্রবেশ করেন। তিনি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতির মধ্যে গিয়ে বিদ্রোহীদের অভ্যন্তরীণ তথ্য সংগ্রহ করেন, যার ভিত্তিতে সেনাবাহিনী অপারেশন পরিচালনা করে। তার সংবেদনশীল গোয়েন্দা তথ্যের কারণে ভারতীয় সেনাবাহিনী গোল্ডেন টেম্পলে বিচ্ছিন্নতাবাদীদের অবস্থা এবং অস্ত্রের বিষয়ে নির্ভুল ধারণা পায়।

সাফল্য:
অজিত ডোভালের এই সাহসী ও ঝুঁকিপূর্ণ অভিযান অপারেশন ব্লু স্টারের সাফল্যে বড় ভূমিকা পালন করে। তার গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ভারতীয় সেনাবাহিনী সফলভাবে বিদ্রোহীদের নির্মূল করতে সক্ষম হয়। যদিও এই অপারেশনকে ঘিরে অনেক বিতর্ক রয়েছে, তবুও ডোভালের কার্যকর কৌশল তাকে একজন দক্ষ গোয়েন্দা কর্মকর্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে।

সিকিম সংযুক্তি: কৌশলের মাস্টারপ্ল্যান

সিকিম একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ১৯৭০-এর দশকে ভারত এবং চীনের মধ্যে একটি কৌশলগত স্থান হিসেবে বিবেচিত হতো। সিকিমের রাজা চোগিয়াল লেন্দুপ দর্জি আমেরিকার ঘনিষ্ঠ মিত্র হিসেবে কাজ করছিলেন, যা ভারতের জন্য কৌশলগতভাবে সমস্যার কারণ ছিল। সেই সময়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী সিদ্ধান্ত নেন সিকিমকে ভারতের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। সিকিমের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং চীনের আগ্রাসন এই অঞ্চলে ভারতের প্রভাব বৃদ্ধির জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ ছিল।

অজিত ডোভালের ভূমিকা:
ইন্দিরা গান্ধীর নির্দেশে, ডোভালকে সিকিমে একটি গুরুত্বপূর্ণ মিশনের জন্য পাঠানো হয়। তার কাজ ছিল সিকিমের রাজা এবং রাজপরিবারের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক কার্যকলাপ পর্যবেক্ষণ করা এবং ভারতের স্বার্থ রক্ষার জন্য কার্যকরী পদক্ষেপ নেওয়া। ডোভাল অত্যন্ত চতুরতার সাথে সিকিমের রাজপরিবার এবং স্থানীয় রাজনীতিবিদদের মধ্যে মতবিরোধ সৃষ্টি করেন, যা পরে সিকিমকে ভারতের অন্তর্ভুক্ত করার ক্ষেত্রে সহায়ক হয়। তিনি সিকিমের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে ভারসাম্য তৈরি করে ভারতের প্রভাব বৃদ্ধি করতে সাহায্য করেন।

সাফল্য:
অজিত ডোভালের এই মিশন অত্যন্ত সফল হয়, কারণ তার কৌশল এবং কার্যকরী নেতৃত্বের মাধ্যমে সিকিম ১৯৭৫ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে ভারতের অন্তর্ভুক্ত হয়। তার এই সফল কর্মকাণ্ডের জন্য তাকে “প্রেসিডেন্ট পুলিশ মেডেল” প্রদান করা হয়। সিকিমকে ভারতের অংশ করে তোলার প্রক্রিয়ায় ডোভালের ভূমিকা ইতিহাসে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ এবং কৌশলগত বলে বিবেচিত হয়।

দাউদ ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে অভিযান
দাউদ ইব্রাহিমকে ধরে আনার পরিকল্পনায়ও অজিত ডোভালের ভূমিকা ছিল। যদিও এ পরিকল্পনা সম্পূর্ণভাবে সফল হয়নি, তবুও তার গোপন কৌশল এবং অভিযান পরিচালনা দক্ষতার পরিচয় রাখে।

২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর অজিত ডোভালকে ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা (NSA) নিযুক্ত করা হয়। ডোভালের কাজ হল দেশের অভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা, কৌশলগত পরিকল্পনা এবং গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কার্যক্রম তত্ত্বাবধান করা। তিনি সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর অধীনে কাজ করেন এবং ভারতের নিরাপত্তা সংক্রান্ত প্রধান সিদ্ধান্তগুলোতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তার অধীনে ভারতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অভিযান সফলভাবে পরিচালিত হয়েছে। বিশেষ করে পাকিস্তানের বালাকোটে বিমান হামলার পরিকল্পনা এবং কাশ্মীর থেকে আর্টিকেল ৩৭০ বাতিলের সময় তার ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

 

সোর্স:

এই লেখার তথ্যগুলো সাধারণত বিভিন্ন উন্মুক্ত উৎস, প্রামাণ্য নিবন্ধ, এবং অজিত কুমার ডোভালের ওপর প্রকাশিত সংবাদ, বই এবং সরকারি নথির ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে। বিশেষ করে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর কার্যকলাপ এবং বিভিন্ন ঐতিহাসিক ঘটনার তথ্য নিম্নোক্ত উৎসগুলোর উপর ভিত্তি করে নেওয়া হয়েছে:

অজিত ডোভালের জীবনী এবং কর্মজীবন:
অজিত ডোভাল সম্পর্কে তথ্য মূলত ইন্ডিয়ান পুলিশ সার্ভিস, ইন্টেলিজেন্স ব্যুরো এবং জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রতিবেদনের উপর নির্ভরশীল। এছাড়া, বিভিন্ন প্রকাশিত নিবন্ধে তার কর্মজীবন এবং অপারেশন সম্পর্কিত বিশদ তথ্য পাওয়া যায়।
সূত্র: The Economic Times, India Today, The Wire, NDTV, The Indian Express

কেরালা দাঙ্গা এবং মিজোরাম ইস্যু:
কেরালা এবং মিজোরামে অজিত ডোভালের ভূমিকা ইন্ডিয়ান পুলিশের আর্কাইভ এবং ইন্টেলিজেন্স ব্যুরোর বিভিন্ন রিপোর্টের ওপর ভিত্তি করে জানা যায়।
সূত্র: India Today, The Hindu, Hindustan Times

পাকিস্তানের খাহুতা নিউক্লিয়ার প্ল্যান্ট:
খাহুতা নিউক্লিয়ার প্ল্যান্ট এবং পাকিস্তানের নিউক্লিয়ার কর্মসূচি সম্পর্কে ডোভালের কাজ নিয়ে বিভিন্ন বই ও সাংবাদিক রিপোর্ট রয়েছে, যেখানে এই মিশনের বর্ণনা রয়েছে।
সূত্র: Times of India, BBC, The Diplomat

গোল্ডেন টেম্পল ও খালিস্তান আন্দোলন:
গোল্ডেন টেম্পল এবং খালিস্তান আন্দোলনে অজিত ডোভালের কৌশলী কর্মকাণ্ড নিয়ে ভারতের সামরিক এবং গোয়েন্দা সংস্থার দলিলপত্র এবং গণমাধ্যমের প্রতিবেদনে উল্লেখ রয়েছে।
সূত্র: The Tribune, The Print, The Indian Express

সিকিম এবং দাউদ ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে অভিযান:
সিকিমে তার দায়িত্ব এবং দাউদ ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে তার কর্মকাণ্ড বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট এবং ঐতিহাসিক গবেষণা নিবন্ধ থেকে সংগৃহীত হয়েছে।
সূত্র: Scroll.in, Outlook India, Hindustan Times

আর্টিকেল ৩৭০ এবং বিজেপি সরকারের আমলে ডোভালের ভূমিকা:
বিজেপি সরকারের অধীনে তার কাজ এবং আর্টিকেল ৩৭০ বাতিল নিয়ে ভারতের জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে বিভিন্ন নিবন্ধ এবং বিশ্লেষণ পাওয়া যায়।
সূত্র: Al Jazeera, The Print, Hindustan Times

বাংলাদেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট:
বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্পর্ক এবং হাসিনা সরকারের সঙ্গে ডোভালের ভূমিকা নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক বিশ্লেষণ পাওয়া যায় বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম ও রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের নিবন্ধে।
সূত্র: Dhaka Tribune, The Daily Star, India Today

Zajira News