Last Updated on 1 month by zajira news
নিউজ ডেস্ক, জাজিরা নিউজ: সব ধরনের কর্মকাণ্ডে নিষেধাজ্ঞা আরোপের পর অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের এবার রাজনৈতিক দল হিসেবে তাদের নিবন্ধনও স্থগিত করা হল।
নির্বাচন কমিশনের বৈঠকের পর কমিশন সচিব আখতার আহমেদ সোমবার (১২ মে) সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের এ সিদ্ধান্ত জানান।
যার ফলে পথ বন্ধ হয়ে গেল, ছয় মেয়াদে দুই যুগের বেশি সময় সরকারে থাকা দেশের অন্যতম প্রাচীন এ দলের নির্বাচনে অংশগ্রহণ।
এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশনের জারি করা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, “সরকার যেহেতু সন্ত্রাসবিরোধী আইনের আওতায় আওয়ামী লীগ এবং এর সকল অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনের সব ধরনের কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে, সেহেতু বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন রাজনৈতিক দল হিসাবে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন (নম্বর-০০৬ তারিখ: ০৩/১১/২০০৮) স্থগিত করল।“
জুলাই অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতাদের দল জাতীয় নাগরিক পার্টি, জামায়াতে ইসলামীসহ ধর্মভিত্তিক কয়েকটি দলের দাবির মুখে গত শনিবার আওয়ামী লীগের বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত দলটির কার্যক্রম নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নেয় অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ।
বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া দলটিকে জুলাই আন্দোলন দমনে ‘মানবতাবিরোধী’ অপরাধের অভিযোগে বিচারের মুখোমুখি করতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন সংশোধন করে রোববার প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
এরপর সোমবার বিকালে আসে নিষেধাজ্ঞার প্রজ্ঞাপন। সেখানে বলা হয়, “ট্রাইব্যুনালে বিচারকার্য সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এবং এর সকল অঙ্গসংগঠন, সহযোগী সংগঠন ও ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন কর্তৃক যে কোনো ধরনের প্রকাশনা, গণমাধ্যম, অনলাইন ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যে কোনো ধরনের প্রচারণা, মিছিল, সভা-সমাবেশ, সম্মেলন আয়োজনসহ যাবতীয় কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হল।”
ওই প্রজ্ঞাপন জারির পর সন্ধ্যা পৌনে ৬টায় রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে বৈঠকে বসে নির্বাচন কমিশন। প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে ওই বৈঠকেই আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিতের সিদ্ধান্ত আসে।
বৈঠকের পর ইসি সচিব বলেন, “আপনারা জানেন যে আজ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, তার অঙ্গ সংগঠন ও ভাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোকে কার্যক্রম নিষিদ্ধ করেছে। তার ধারাবাহিকতায় ইলেকশন কমিশন সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত করা হল। সে অনুযায়ী আমরা গেজেট নোটিফিকেশন জারি করেছি।”
‘কোন গ্রাউন্ডে’ এই নিবন্ধন স্থগিত করা হল জানতে চাইলে ইসি সচিব বলেন, “স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যে প্রজ্ঞাপন, তার ধারাবাহিকতায় আমরা এটা করেছি।”
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী সরকার ঘোষিত নিষিদ্ধ দলের নিবন্ধন বাতিলের বিধান রয়েছে। কমিশন সভায় প্রধান নির্বাচন কমিশনার ছাড়াও নির্বাচন কমিশনার আনোয়ারুল ইসলাম সরকার ও আব্দুর রহমানেল মাছউদ উপস্থিত ছিলেন। নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদ, আইন শাখার যুগ্ম সচিব ফারুক আহমেদসহ কর্মকর্তারা সেখানে আইনি দিকগুলো তুলে ধরেন। ২০০৮ সালে নবম সংসদ নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের নিয়ম চালু করে নির্বাচন কমিশন। আওয়ামী লীগের নিবন্ধন নম্বর ছিল ৬, প্রতীক নৌকা।
গত ১৭ বছরে সব মিলিয়ে ৫৫টি দলকে নিবন্ধন দেওয়া হলেও বিভিন্ন কারণে জামায়াতে ইসলামীসহ পাঁচটি দলের নিবন্ধন বাতিল হয়। আওয়ামী লীগের নিবন্ধন স্থগিত হওয়ায় এখন নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত দল থাকল ৪৯টি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় টানা চতুর্থবার প্রধানমন্ত্রী হন শেখ হাসিনা। বিএনপিবিহীন ভোট নিয়ে ওঠা সমালোচনার মধ্যে পঞ্চমবার সরকার প্রধানের দায়িত্ব নেন দলটির প্রধান শেখ হাসিনা।
সরকার গঠনের আট মাসের মাথায় সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কার নিয়ে গড়ে ওঠা আন্দোলন সরকার পতনের আন্দোলনে রূপ নিলে তুমুল জনরোষের মুখে ক্ষমতা ছাড়তে হয় তাকে। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ২০২৪ সালের ৫ অগাস্ট আওয়ামী লীগের ১৫ বছরের শাসনের অবসান ঘটে। দলটির নেতা শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রিত্ব ছেড়ে ভারতে পালিয়ে যান।
এর তিন দিনের মাথায় মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেয়। জুলাই-অগাস্টের অভ্যুত্থানের সময় হতাহতের ঘটনায় শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের মন্ত্রী, এমপিসহ বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে ডজন ডজন মামলা হতে থাকে।
আওয়ামী লীগের সময়ে যে ট্রাইব্যুনাল গঠন করে শীর্ষ জামায়াত নেতাদের একাত্তরের যুদ্ধাপরাধের দায়ে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছিল, সেই একই ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনাসহ তার সহযোগীদের বিচারের উদ্যোগ নেয় অন্তর্বর্তী সরকার। অভ্যুত্থান দমাতে গিয়ে গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি হয়।
সোমবার তার দল আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনগুলোর কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধের প্রজ্ঞাপন জারির আগে দুপুরে জুলাই অভ্যুত্থান দমানোর চেষ্টায় মানবতাবিরোধী অপরাধের পাঁচটি অভিযোগ এনে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা।
প্রতিবেদন জমা হওয়ার পর চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম এ বিষয়ে সাংবাদিকদের বলেন, “তদন্ত কর্মকর্তা তদন্ত শুরু করার ৬ মাস ২৮ দিনের মধ্যে জুলাই অভ্যুত্থান চলাকালীন সময়ে দেশব্যাপী যে মানবতাবিরোধী অপরাধ, হত্যাকাণ্ড, গুলি করে আহত করা, লাশ পুড়িয়ে দেওয়ার মত যে সমস্ত অমানবিক কর্মকাণ্ড হয়েছিল, এই সমস্ত কর্মকাণ্ডগুলো তদন্ত করে প্রধান মাস্টারমাইন্ড এবং হুকুমদাতা হিসেবে সুপিরিয়র কমান্ডার হিসেবে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত রিপোর্ট দাখিল করেছেন।”
এ ট্রাইব্যুনালেই বিচার শেষ না হওয়া পর্যন্ত শেখ হাসিনা ও তার দল আওয়ামী লীগের সব ধরনের কার্যক্রমে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের অধীনে নিষেধাজ্ঞা দেয় অন্তর্বর্তী সরকার।
টানা চার মেয়াদের নির্বাচনে ভোটে জিতে দেড় দশক ধরে ক্ষমতায় থাকা দলটি ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকেই নিষিদ্ধ করার দাবির মুখে পড়েছিল। অভ্যুত্থানের নেতৃত্বে থাকা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা শুরু থেকেই এ দাবির পাশাপাশি দলের বিচার দাবি করে আসছিল। তবে ওই দাবিতে জোরালো আন্দোলন শুরু হয় গত সপ্তাহের শেষে।
বৃহস্পতিবার রাতে সরকারপ্রধানের বাসভবন যমুনার সামনে শুরু হওয়া এই আন্দোলনের নেতৃত্বে ছিলেন অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতাদের দল জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ। জামায়াতে ইসলামী, এবি পার্টি, ইসলামী ছাত্রশিবির, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, হেফাজতে ইসলাম এবং বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীসহ বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা এ কর্মসূচিতে সংহতি প্রকাশ করেন।
শুক্রবার জুমার পর তারা মিন্টো রোডের প্রবেশ মুখে মঞ্চ বানিয়ে সেখানে সমাবেশ করেন। সন্ধ্যায় সেখান থেকে গিয়ে তারা শাহবাগ অবরোধ করে দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত সেখানে অবস্থানের ঘোষণা দেন। শনিবার বিকালে সেখানে গণজমায়েত করে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করাসহ তিন দফা দাবি তারা তুলে ধরেন। এক পর্যায়ে দাবি পূরণের জন্য সরকারকে এক ঘণ্টা সময় বেঁধে দেওয়া হয়।
সেদিন রাতেই রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের জরুরি বৈঠক বসে। পরে সংবাদ সম্মেলনে এসে আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত জানান। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আন্তর্জাতিক অপরাধ (ট্রাইব্যুনাল) আইন সংশোধনের গেজেট জারি হয় রোববার।
আইনের দুটি ধারায় এই সংশোধনের মধ্য দিয়ে সম্ভাব্য মানবতাবিরোধী অপরাধে জড়িত রাজনৈতিক দল বা সংগঠন, তার অঙ্গ বা সহযোগী সংগঠন বা সমর্থক গোষ্ঠীর বিচারের সুযোগ তৈরি করার পাশাপাশি শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয় ট্রাইব্যুনালকে।
।
সংশোধিত আইনের বলা হয়, কোনো সংগঠন যেমন রাজনৈতিক দল বা তার সহযোগী কোনো সত্তা যদি এ আইনের আওতাভুক্ত কোনো অপরাধে জড়িত থাকে বলে ট্রাইব্যুনালের কাছে প্রতীয়মান হয়, তাহলে ওই সংগঠনের কার্যক্রম স্থগিত বা নিষিদ্ধ করা, নিবন্ধন বা লাইসেন্স বাতিল এবং সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার ক্ষমতা ট্রাইব্যুনালের থাকবে।
গণজাগরণ মঞ্চের আন্দোলনের মুখে ২০১৩ সালে ট্রাইব্যুনাল আইনে যে সংশোধনী আনা হয়, সেখানে ব্যক্তির পাশাপাশি সংগঠনের বিচারের সুযোগও রাখা হয়। কিন্তু সংগঠনের সাজা কী, সেটি উল্লেখ করা ছিল না। একাত্তরের ভূমিকার জন্য দল হিসেবে জামায়াতে ইসলামীর বিচার করতে সে সময় আইনটি আবারও সংশোধন করবে বলেছিল শেখ হাসিনার সরকার। কিন্তু এক দশক ঝুলিয়ে রেখেও আওয়ামী লীগ সরকার তা করেনি।
এখন ট্রাইব্যুনাল আইনে সেই সংশোধনী এনে দল হিসেবে খোদ আওয়ামী লীগের বিচারের পথ তৈরি করা হল।একাত্তরের ভূমিকার জন্য জামায়াতকে নিষিদ্ধ না করলেও আওয়ামী লীগ সরকার তাদের মেয়াদের শেষ সময়ে এসে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করেছিল।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সহিংসতার অভিযোগে গত ১ অগাস্ট জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী ছাত্রশিবির এবং তাদের সহ অঙ্গ সংগঠনকে নিষিদ্ধ করা হয়। সেই সঙ্গে ২০০৯ সালের সন্ত্রাসবিরোধী আইন অনুযায়ী জামায়াত এবং এর সকল অঙ্গ সংগঠনকে ‘সন্ত্রাসী সত্তা’ হিসেবে তালিকাভুক্ত করে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
তার চার দিনের মাথায় আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর ২৮ অগাস্ট জামায়াতের আবেদনে সেই নিষেধাজ্ঞাও তুলে নেওয়া হয়। নয় মাসের মাথায় এখন সেই সন্ত্রাসবিরোধী আইনেই নিষিদ্ধ হল আওয়ামী লীগের সব কার্যক্রম। এর ঘণ্টা পাঁচেক পর বাংলাদেশের ইতিহাসের অন্যতম প্রাচীন রাজনৈতিক দলটির নিবন্ধন স্থগিতের সিদ্ধান্ত জানাল নির্বাচন কমিশন।
১৯৪৯ সালের ২৩ জুন গঠিত আওয়ামী লীগ নানা উত্থান পতনের মধ্যে দিয়ে ৭৫ বছর অতিক্রম করেছে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়া দলটি ১৯৭৩ সালে প্রথমবার সংসদ নির্বাচনে জয়ী হয়। তখন সরকার গঠন করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
এর দুই বছর পর ১৯৭৫ সালে তিনি সপরিবারে নিহত হলে বড় ধরনের অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়ে দলটি। কয়েক বছর বিদেশে কাটিয়ে দেশে ফিরে দলের হাল ধরেন শেখ মুজিবুরের বড় মেয়ে শেখ হাসিনা। দীর্ঘ বিরতির পর ১৯৯৬ সালে আবার তার নেতৃত্বে সরকার পরিচালনায় আসে আওয়ামী লীগ। তবে ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপির কাছে হেরে ক্ষমতা থেকে নেমে যেতে হয় দলটিকে।
এরপর ২০০৭ সালে সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় শেখ হাসিনা গ্রেপ্তার হলে আবার চাপে পড়ে আওয়ামী লীগ। সেই ধাক্কা কাটিয়ে উঠে দলটি আবার রাষ্ট্র ক্ষমতায় ফেরে ২০০৯ সালের নির্বাচনে জিতে। এরপর দোর্দণ্ড প্রতাপ বজায় রেখে সব সমালোচনা গায়ে না মেখে বিরোধী দল ছাড়া ও ভোটারবিহীন পরের তিন নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা আদায় করে নেয় দলটি।
২০১৪ সালে বিএনপি যখন নির্বাচন বর্জন করেছিল, অর্ধেকের বেশি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে গিয়েছিল আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা, যা নিয়ে এখনও দলটিকে নিন্দা-মন্দ শুনতে হয়। পরের বার একাদশ সংসদ নির্বাচনে ২০১৮ সালে নানা নাটকীয়তা শেষে বিএনপি ভোটে এলে আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ’আগের রাতেই ব্যালটে সিল মেরে’ জয়ী হওয়ার অভিযোগ ওঠে। এ অভিযোগে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) অনুসন্ধানেও নেমেছে।
সমালোচনার ঢেউ থামাতে ২০২৪ সালের নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়া ঠেকাতে আওয়ামী লীগ বেছে নেয় নতুন কৌশল। কোনো আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীরা যাতে একলা পড়ে না যান, সেজন্য মনোনয়নের বাইরে থাকা দলের নেতাদেরও স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ার পথ খুলে দেওয়া হয়। তবে এরপরও ভোটারদের ভোট কেন্দ্রে টানতে পারেনি টানা ক্ষমতায় থাকা দলটি। ‘রাতের ভোট’ আর কেন্দ্রে কম ভোটার উপস্থিতির এসব ভোট নিয়ে দেশে-বিদেশে নানা প্রশ্ন উঠলেও সেগুলোকে সঙ্গী করেই ক্ষমতায় থেকে গেছে আওয়ামী লীগ।
তবে ছাত্র-জনতার তুমুল জনরোষে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পরের ঘটনাপ্রবাহের মধ্যে এবার বিচারের মুখোমুখি হওয়া এবং সব ধরনের কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধ হওয়ার মধ্যে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন স্থগিত হওয়ায় আওয়ামী লীগ ইতিহাসের সবচেয়ে বড় অনিশ্চিয়তার মধ্যে পড়ল ।