সময়ের জনমাধ্যম

করদাতার জন্য গুরুত্বপূর্ন পরামর্শ, জিরো বা শূন্য রিটার্ন মানে সবকিছু শূন্য নয়

Last Updated on 2 weeks by zajira news

অনলাইন ডেস্ক, জাজিরা নিউজ: করদাতাদের বার্ষিক আয়কর বিবরণী বা রিটার্ন জমার ক্ষেত্রে সাম্প্রতিক সময়ে ‘শূন্য রিটার্ন’ নিয়ে বেশ আলোচনা হচ্ছে। যাঁরা অনলাইনে রিটার্ন জমা দিয়েছেন, তাঁদের প্রায় ৭০ শতাংশ শূন্য রিটার্ন দিয়েছেন।

আয়কর আইনে শূন্য রিটার্ন বলতে কিছু নেই। যখন রিটার্ন জমা দিয়ে কোনো কর দিতে হয় না, সেটাই শূন্য রিটার্ন বলে ধরে নেওয়া হয়। অনেকের মধ্যে ভুল ধারণা আছে যে শূন্য রিটার্ন মানে আয়কর রিটার্ন ফরম খালি রেখে জমা দেওয়া। বাস্তবে তা নয়।

মনে রাখতে হবে, শূন্য রিটার্ন মানে রিটার্ন ফরমে সবকিছু শূন্য দেখানো নয়। শুধু সাড়ে তিন লাখ টাকার কম আয় হলে কেউ চাইলে শূন্য রিটার্ন দিতে পারেন। এ ছাড়া কিছু বাধ্যবাধকতার জন্য সাড়ে তিন লাখ টাকার কম আয় হলেও রিটার্ন জমা দিতে হয়। তবে রিটার্ন ফরমের সবকিছু পূরণ করতে হয়।

শূন্য রিটার্ন বলতে কী বোঝায়?

কারও যদি করযোগ্য আয় না থাকে, তখন ওই করদাতা যদি রিটার্ন জমা দেন। কিন্তু কোনো কর দেননি। তাহলে সেই রিটার্নকে শূন্য রিটার্ন বলে ধরে নেন কর কর্মকর্তারা। অর্থাৎ রাষ্ট্রের কোনো কর প্রাপ্তি হয়নি।

শূন্য রিটার্ন জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু গুরুত্বপূর্ন পরামর্শ :

১) বার্ষিক করযোগ্য আয় সাড়ে তিন লাখ টাকা কম আয় হলে করদাতা চাইলে শূন্য রিটার্ন দিতে পারেন।

২) শূন্য রিটার্ন হলো, করযোগ্য আয় নেই। কিন্তু রিটার্ন দিচ্ছেন। তাই রিটার্নের ফরমের প্রয়োজনীয় অংশ পূরণ করতে হয়। একটি কর রিটার্নের মধ্যে অনেকগুলো অংশ থাকে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো করযোগ্য আয় নির্ধারণ, আয় ও কর হিসাব, রেয়াত হিসাব, সম্পদ ও দায় বিবরণী তৈরি, পারিবারিক ব্যয় প্রদর্শন ইত্যাদি। এগুলো যথাযথভাবে করতে হবে।

৩) আয়কর রিটার্ন জমা দেওয়ার সময় যে জীবনযাত্রার ব্যয় বিবরণী জমা দিতে হয়, সেই ফরম পূরণ করতে হবে। আপনাকে আপনার পুরো বছরের সংসার খরচ, ঘুরে বেড়ানো, বাড়িভাড়া, শিক্ষা খরচসহ যাবতীয় খরচ দেখাতে হবে।

৪) শূন্য রিটার্ন জমা দিলেও সম্পদ বিবরণীও দিতে হবে। আপনি যদি সরকারি কর্মচারী হন; আপনার সম্পদের পরিমাণ যদি ৫০ লাখ টাকা পেরিয়ে যায় কিংবা আপনি যদি ওই করবর্ষে বাড়ি, গাড়ির মালিক হলে অবশ্যই সম্পদ বিবরণী জমা দিতে হবে।

৫) মনে রাখতে হবে, কোনো সম্পদ নিজের নামে থাকার পরেও সেটা না দেখানো একটা বড় ভুল কাজ। তাই শূন্য রিটার্ন দেওয়ার আগে বুঝেশুনে রিটার্ন ফরম পূরণ করতে হবে। তাহলে আপনি ঝামেলামুক্ত থাকবেন। ভুলভাবে জমা দিলে যেকোনো সময় পড়তে পারেন মহাবিপদে।

৬) শূন্য রিটার্ন জমা দেওয়া অনেক সময় প্রয়োজনীয় ও উপকারী হলেও তা জমা দেওয়ার আগে নিজের আর্থিক অবস্থা, আইনগত বাধ্যবাধকতা ও ভবিষ্যতের প্রয়োজন বিবেচনায় রাখা দরকার। প্রয়োজনে একজন আয়কর পরামর্শকের সাহায্য নিতে পারেন।

৭) বর্তমানে ৩৯ ধরনের সরকারি-বেসরকারি সেবা নিতে হলে রিটার্ন জমার প্রমাণপত্র দেখাতে হয়। অনেকেই এই সেবাগুলো পেতে শূন্য রিটার্ন দেন। এই ৩৯ সেবার তালিকায় আছে সঞ্চয়পত্র কেনা, ঋণ নেওয়া, বাড়ি, গাড়ির মালিক হওয়া, অভিজাত ক্লাবের সদস্য হওয়া, পেশাজীবী সংগঠনের সদস্য হওয়া ইত্যাদি।