Last Updated on 10 months by zajira news
নিউজ ডেস্ক, জাজিরা নিউজ: তাবলিগ জামাতের একাংশ সাদপন্থিরা আগামী দুই সপ্তাহের জন্য অবস্থান নিতে ঢাকার কাকরাইল মসজিদে জড়ো হয়েছেন ।
শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) সকাল ৮টার পর তারা কাকরাইল মসজিদে প্রবেশ করে ‘সমঝোতার ভিত্তিতে’ তাবলীগের অপর অংশ জোবায়েরপন্থিদের কাছ থেকে ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব বুঝে নিয়েছেন বলে পুলিশের ভাষ্য।
সারাদেশ থেকে আসা সাদপন্থিরা এদিন সকাল থেকেই কাকরাইল মসজিদ অভিমুখে আসতে থাকেন। ঢাকার বিভিন্ন এলাকা হয়ে হাজার হাজার সাদপন্থিকে কাকরাইল মসজিদের দিকে যেতে দেখা যায়।
ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) জুয়েল রানা জানান, নিরাপত্তা নিশ্চিতে কাকরাইল মসজিদ ও আশপাশের এলাকায় পর্যাপ্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে ।
তিনি বলেন, “তাবলিগ জামাতের দুই পক্ষই সমঝোতার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিয়েছে- কাকরাইল মসজিদে চার সপ্তাহ থাকবেন জুবায়ের পন্থিরা আর দুই সপ্তাহ থাকবেন সাদপন্থিরা। সে অনুযায়ী সাদপন্থিরা আজ জমায়েত হয়েছেন।
“আজ থেকে আগামী দুই সপ্তাহের জন্য তারা কাকরাইল মসজিদে থাকবেন। কিন্তু সারা দেশ থেকে উলামায়ে-মাশায়েখরা এসেছেন, তাদের অধিকাংশই জুমার নামাজে অংশ নিতে এসেছেন। নামাজের পর চলে যাবেন। আর একটি অংশ মসজিদে থেকে তাদের নিয়মিত কার্যক্রম চালিয়ে যাবেন।” এই ব্যাপক জমায়েত ঘিরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
সাদপন্থিদের ওপর হামলার কোনো আশঙ্কা রয়েছে কি না, এমন প্রশ্নের উত্তরে পুলিশ কর্মকর্তা জুয়েল রানা বলেন, “না, তেমন কোনো আশঙ্কা নেই। সকাল ৮টার সময় সাদপন্থিরা মসজিদে প্রবেশ করে আমাদের সামনেই জুবায়েরপন্থিদের কাছ থেকে রান্নার সরঞ্জাম থেকে শুরু করে সবকিছু বুঝে নিয়েছেন।
“অপরপক্ষ কোলাকুলি করে বের হয়ে গেছেন, দুই সপ্তাহ পর তারা আবার আসবেন। আর এখন যারা থাকবেন তারা দুই সপ্তাহ পর বের হয়ে যাবেন। আমরা কোন ধরনের ঝামেলার আশঙ্কা করছি না।”
কাকরাইল মসজিদ ও টঙ্গীর বিশ্ব ইজতেমার মাঠে সাদপন্থিদের প্রবেশের সুযোগ দিলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ঢাকা অচলের হুঁশিয়ারি গত ১২ নভেম্বর দেন জুবায়েরপন্থিরা।
এর আগে ৫ নভেম্বর ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের ‘ওলামা-মাশায়েখদের ইসলামি মহাসম্মেলন’ থেকে সাদপন্থিদের নিষিদ্ধ করাসহ ৯ দফা দাবি জানা জুবায়েরপন্থিরা, যারা নিজেদের ‘শুরায়ে নিজাম’ পরিচয় দিয়ে থাকেন।
দিল্লির মাওলানা সাদ কান্ধলভি এবং বাংলাদেশের কাকরাইল মারকাজের মাওলানা জুবায়ের আহমদের অনুসারীরা নিজেদের মধ্যে বিভেদে জড়িয়ে পড়েন ২০১৯ সালে।
এক পর্যায়ে দুই পক্ষ বিশ্ব ইজতেমা দুইবারে করার সিদ্ধান্ত নেন। মাঝে কোভিড মহামারীর কারণে ইজতেমা দুই বছর বন্ধও রাখা হয়। পরে ২০২২ সাল থেকে ফের ইজতেমা হচ্ছে দুই পর্বের আয়োজনে।
কয়েক বছর ধরে তাবলিগ জামাতের মধ্যে যে বিবাদ চলছে সম্প্রতি তা নতুন রূপ পেয়েছে। সাদপন্থিদের নিষেধাজ্ঞার দাবিতে সরকারকে আল্টিমেটামও দিতে দেখা গেছে জুবায়েরপন্থিদের। এর মধ্যেই সাদপন্থিদের ব্যাপক জমায়েত দেখা গেল।