সময়ের জনমাধ্যম

কাজ না পেয়ে মালয়েশিয়াতে প্রবাসী বাংলাদেশীর মৃত্য

ছবি: সংগৃহীত

Last Updated on 2 years by admin

মালয়েশিয়া প্রতিনিধি, জাজিরা নি্উজ: গত বছর ২০২৩ এর ৫ আগস্ট ৭১ জন বাংলাদেশী শ্রমিক পেত্রা জেহরা বারহাদ নামে একটি কন্সট্রাকশান কোম্পানিতে কাজ নিয়ে মালয়েশিয়ায় আসেন। স্বপ্নের দেশ মালয়েশিয়াতে আসার পরপরই তাদের স্বপ্ন ভঙ্গ হয় ।

প্রায় পাঁচ মাস কাজ না পেয়ে ক্ষুধা আর চিকিৎসার অভাবে মানবেতর জীবন যাপন করছে এসব প্রবাসীরা। কষ্টের অভিযোগ বলতে গেলেই নির্মম নির্যাতনের শিকার হন তারা।

এদের মধ্যেই একজন পাবনা প্রবাসী মো. শফিকুল ইসলাম (৩৩)। ইউনিক নামে একটি রিক্রুটিং এজেন্সির মাধ্যমে মালয়েশিয়ায় আসেন তিনি। গত শুক্রবার (১ মার্চ) সকাল সাড়ে নয়টায় মারা যান তিনি।

 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, সে অসুস্থ ছিলো, চিকিৎসা দেওয়া হয়নি, প্রতিদিনের মতো রাতে ঘুমাতে গেলেও আর ঘুম থেকে ওঠেনি।

সেখানে অবস্থানরত বাকি বাংলাদেশীদের অবস্থাও ভালো নয়। কাজের অনিশ্চয়া, ভয় আর আতঙ্কে সময় কাটে তাদের। এসব প্রবাসীদের নিয়োগকর্তার নিয়োগকৃত লোকের দ্বারা নিয়মিতই নির্যাতনের শিকার হতে হয়। ৫ অক্টোবর মালয়েশিয়ায় আসলেও এখনও মেলেনি ভিসা কিংবা কাজ।

কাজ না পাওয়ার অভিযোগ নিয়ে মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনেও যান এদের মধ্যে বেশ কয়েকজন। আশ্বাস মিললেও চূড়ান্ত কোন সুরাহা করতে পারিনি হাইকমিশন।

এ বিষয়ে মালয়েশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের লেবার কাউন্সিলর, সৈয়দ শরিফুল ইসলাম বলেন, পেত্রা জেহরা বারহাদ কোম্পানির বিরুদ্ধে অভিযোগ অনেক, তাদের বিরুদ্ধে আমরা ইতোমধ্যে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি। ভবিষ্যতে এই কোম্পানি যাতে নতুন কোন কর্মী না আনতে পারে সে বিষয়ে পদক্ষেপ নিয়েছে হাইকমিশন। এখনও কাজ না পাওয়া কর্মীদের সমস্যা সমাধানে হাইকমিশন কাজ করছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

নিহত শফিকুল ইসলামে’র মরদেহ কোম্পানির মাধ্যমে দেশে পাঠাতে কাজ করছে হাইকমিশন। একই সঙ্গে বৈধভাবে আসায় তার পরিবার ক্ষতিপূরণ পাবে বলেও জানান এ কর্মকর্তা।

এদিকে, এ বিষয়ে কথা হয় পেত্রা জেহরা বারহাদ কোম্পানি’তে কর্মরত ইফতেকার নামে এক বাংলাদেশীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ভুক্তভোগীদের অভিযোগ সঠিক নয়, তাদের গায়ে হাত তোলা হয়নি, কোম্পানি থাকা খাওয়ারও সু-ব্যবস্থা করেছে। ট্যাক্স জটিলতার কারনে পাঁচ মাস ধরে তাদের বসিয়ে রাখতে হয়েছে। তবে ৪/৫ মার্চের মধ্যে সমস্যা সমাধান হয়ে সবাই ভিসা পাবে বলেও জানান তিনি।

ইফতেখার আরো জানান, মারা যাওয়ার খবর পাওয়ার পর শফিকুল ইসলাম’কে সেপাং হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করে।

কলিং ভিসায় এসে কাজ না পাওয়া কর্মীদের অনেকেই মানবেতর জীবন যাপন করছে। মালয়েশিয়ার বিভিন্ন প্রান্ত থেকে নিয়মিতই এমন অভিযোগ আসছে হাইকমিশনে। এ বিষয়ে মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত হাইকমিশনার সম্প্রতি সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, যারা এমন কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত তাদের কোন ছাড় নেই। অভিযোগ রয়েছে এমন কোম্পানিকে পরবর্তীতে কর্মী নিয়োগের অনুমোদন দিতে চিন্তা করবে বাংলাদেশ হাইকমিশন।