সময়ের জনমাধ্যম

‘গদি কখন চলে যায়’, ‘ক্রাইসিসে’ তথ্য উপদেষ্টা

Last Updated on 3 weeks by zajira news

অনলাইন ডেস্ক, জাজিরা নিউজ: নিজের ‘গদি কখন চলে যায়’, তা নিয়ে ‘ক্রাইসিসে’ থাকায় দাপ্তরিক অনেক কাজই করতে পারছেন না বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য উপদেষ্টা মাহফুজ আলম।

ছাত্র প্রতিনিধি হিসেবে উপদেষ্টা পরিষদে জায়গা পাওয়া আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার দপ্তরেও এক মাস ধরে ‘কাজ বন্ধ’ থাকার কথা বলেছেন তিনি।

তথ্য উপদেষ্টা বলেন, “এই সরকারের বড় ক্রাইসিস আছে, যেটা বললাম, আমার গদি কখন চলে যাবে, সেটা নিয়ে ক্রাইসিস।

“আরেকটা ক্রাইসিস হচ্ছে, গত এক মাস ধরে গুঞ্জন শোনা যাচ্ছিল মিডিয়া পাড়ায়, এখানে ওখানে যে, উপদেষ্টা, ছাত্র উপদেষ্টারা নেমে যাবেন। আমি আপনাদেরকে বলি, ছাত্র উপদেষ্টারা নেমে যাবেন। ছাত্র উপদেষ্টাদের দপ্তর কাজ করা বন্ধ করে দিছে গত এক মাস ধরে। কাজ শ্লথ হয়ে গেছে।”

রোববার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকালে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘গণমাধ্যমের স্ব-নিয়ন্ত্রণ ও অভিযোগ ব্যবস্থাপনা: রাজনৈতিক ও নীতিগত দৃষ্টিভঙ্গি’ শীর্ষক সংলাপে তথ্য উপদেষ্টা এ কথা বলেন।

সেন্টার ফর গভর্ন্যান্স স্টাডিজ (সিজিএস) এ সংলাপ আয়োজন করে। এতে সহযোগিতা করেছে যুক্তরাজ্য সরকার এবং ‘দ্য এশিয়া ফাউন্ডেশন’।

আমলাদের ভাবনা তুলে ধরে উপদেষ্টা বলেন, “তারা ভাবেন ওনারা (ছাত্র উপদেষ্টা) চলে যাবেন; আরেকজন আসবেন। তার সঙ্গে কাজ করব আমরা। অনেকগুলো প্রমাণ আছে। এগুলো হচ্ছে সেলফ ক্রিটিক। কোন ব্যক্তি বা আমলাকে বলছি না, কিন্তু এটা হচ্ছে বাস্তবতা।”

গত ১৩ জুন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের সঙ্গে লন্ডনে দেড় ঘণ্টা ধরে একান্ত বৈঠক করেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস। ২০০৮ সালের ১১ সেপ্টেম্বর তারেক রহমান চিকিৎসার জন্য লন্ডন যাওয়ার পর কোনো সরকারপ্রধানের সঙ্গে এটিই ছিল তার প্রথম বৈঠক। বৈঠক শেষে ওখানেই সরকার ও বিএনপির তরফে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের ঘোষণা আসে।

ওই বৈঠকের দিকে ইঙ্গিত করে উপদেষ্টা মাহফুজ বলেন, “যখন ১৩ জুন ঘটল লন্ডনে, এরপর বাংলাদেশের পুরো ল্যান্ডস্কেইপ বদলে গেল। “এজন্য রাজনৈতিক দলগুলোর সামনে এই কথাগুলো বলছি। কারণ চাইলে আমি বসে এক মাসের মধ্যে একটা আইন করে দিতে পারব। কিন্তু যদি না চায়, সদিচ্ছা না থাকে, কারণ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আমলারা যুক্ত। আমলারা বসে আছেন, কখন পরবর্তী সরকার আসবে, তখন এই আইনগুলো তারা পাস করবেন।”

সম্প্রচার নীতিমালা, সাংবাদিকের ওয়েজবোর্ড, বিটিভি ও বেতারে স্বায়ত্তশাসন প্রতিষ্ঠাসহ নানা বিষয়ে এই সরকারের অবস্থান নিয়ে যেসব আলোচনা-সমালোচনা চলছে, তা নিয়ে আলোচনা করেন মাহফুজ। রাজনৈতিক দল ও আমলাদের সহযোগিতা না পাওয়ায় অসহায়ত্বও তুলে ধরেন তিনি।

উপদেষ্টা বলেন, “সম্প্রচার আইন যেটা শুরু করেছিল, শেখ হাসিনা করে যেতে পারে নাই। বাট ওরা শুরু করেছিল ওই নীতিমালাটা। সম্প্রচার নীতিমালা, নট আইন। ওইটার সংশ্লেষে গণমাধ্যম কমিশন হবে। এর অন্তর্ভুক্ত বা এর সঙ্গে সম্পৃক্ত হবে বিটিভি-বেতার। যেমন বিটিভি ও বেতারের, উনাদের আমি রাজি করাইতে পারলাম, উনারা একসঙ্গে হবে।

“ক্রাইসিস হলো, আমি আজ একটু বেশি খোলামেলা করে বলি, কারণ কালও বলতে হবে; নামলেও বলতে হবে। যেটা হচ্ছে, বেতারে আমাদের ৮০০ জনের মতো কর্মকর্তা আছেন সার্ভিসের অধীনে। এখন সরকারি সার্ভিসের কেউ কিন্তু স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে সাধারণ থাকতে পারেন না; উনাকে কোনো না কোনো উপায়ে আমাকে রাখতে হবে।”

তথ্য উপদেষ্টা বলেন, “বেতারকে যদি আমি স্বায়ত্তশাসন দেই, তারা রাজি। দুইটাই রাজি যে তারা একীভূত হবে। এবং আমাদের জায়গা খরচ হচ্ছে। আমাদের ১৪ কি ১৩টার মতো উপকেন্দ্র আছে। এগুলো খালি পড়ে আছে। বেতারের অনেক জায়গা আছে, যা অনেক ভালো কাজে লাগানো সম্ভব।”

বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা (বাসস) আলাদা থাকতে চাচ্ছে মন্তব্য করে উপদেষ্টা বলেন, সেখানে কিছু নতুন লোক নিয়োগ হয়েছে, কিছু অস্থায়ী ভিত্তিতে নিয়োগ হয়েছে।