সময়ের জনমাধ্যম

গর্ভে থাকা সন্তানের লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশ করা যাবে না: হাইকোর্টের রায়

Last Updated on 11 months by admin

নিউজ ডেস্ক, জাজিরা নিউজ : গর্ভের সন্তানের লিঙ্গ প্রকাশ করা যাবে না বলে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে হাসপাতাল, ডায়গোনস্টিক সেন্টারগুলোকে এ সংক্রান্ত নীতিমালা কঠোরভাবে মেনে চলার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত দ্বৈত বেঞ্চ এ রায় দেন।

২০২০ সালের ২৬ জানুয়ারি গর্ভে থাকা শিশুর লিঙ্গ পরিচয় জানার উদ্দেশ্যে পরীক্ষা ও লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশ বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে রিট করেন অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান। এরপর এ বিষয়ে রুল জারি করেন আদালত। গত ২৯ জানুয়ারি মাতৃগর্ভে থাকা অবস্থায় অনাগত শিশুর লিঙ্গ প্রকাশ করা যাবে না মর্মে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের গঠিত কমিটি হাইকোর্টে প্রতিবেদন দাখিল করে। এই নীতিমালা অনুযায়ী কোনো ব্যক্তি, হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টার বা ল্যাবরেটরি কোনো লেখা বা চিহ্ন বা অন্য কোনো উপায়ে শিশুর লিঙ্গ প্রকাশ করতে পারবে না।

এর আগে ১৯ ফেব্রুয়ারি চূড়ান্ত শুনানি শেষে গর্ভের শিশুর লিঙ্গ-পরিচয় শনাক্ত রোধ প্রশ্নে রুলের ওপর রায়ের জন্য ২৫ ফেব্রুয়ারি দিন রেখেছিলেন হাইকোর্ট।

আইনজীবী ইশরাত হাসান জানান, এ রায়ে বলা হয়েছে কোনো হাসপাতাল, ডায়াগনিস্টক সেন্টার, ল্যাবরেটরি ও কোনো মাধ্যমে অনাগত শিশুর লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশ করতে পারবে না। অর্থাৎ গর্ভের সন্তান ছেলে না মেয়ে তা আজকের পর থেকে জানার কোনো সুযোগ নেই। এ রিট চলমান থাকবে। অমান্য করলে পরে ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।

রিটকারী আইনজীবী ইশরাত হাসান বলেন, গর্ভে থাকা শিশুর লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশ পেলে মাতৃগর্ভেই লিঙ্গ বৈষম্যের শিকার হতে হয়। এতে গর্ভপাতের মতো ঘটনাও ঘটে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট আইন রয়েছে, লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশ করলে তিন বছরের জেলের ব্যবস্থা আছে বলেও জানান রিটকারী। যদিও সম্প্রতি লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে একটি নীতিমালা করেছে স্বাস্থ্য অধিদফতর।

ইশরাত হাসান জানান, গর্ভের সন্তানের পরিচয় প্রকাশ না করার বিষয়টি একেবারে কোনো প্রকার আপত্তি ছাড়াই মেনে নিয়েছে সরকার। এটি জানার অধিকার কারো নেই। কারণ এতে মা মানসিক চাপের শিকার হতে পারেন। এতে মা ও অনাগত সন্তান উভয়েরই ক্ষতি হতে পারে। এটা বাস্তবায়ন হলে আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে যেমন গর্ভের সন্তান ছেলে না মেয়ে তা ভূমিষ্ঠ হওয়ার আগে জানতে পারে না, তেমনি এ বিষয়টি জানানো বন্ধ হয়ে যাবে যে মাতৃগর্ভের সন্তান ছেলে না মেয়ে। যার ফলে আমরা একটা সুস্থ সন্তান পাব। অনেক সময় দেখি গর্ভের সন্তান কন্যা থাকলে বিভিন্ন ধরনের নির্যাতনের শিকার হন মায়েরা, সেগুলো থেকে মা ও শিশু রক্ষা পাবে। এ ছাড়া কন্যা সন্তান হলে কোনো কোনো ক্ষেত্রে অ্যাবরশনের ঝুঁকি থাকে, সেগুলো থেকে মায়েরা নিস্তার পাবেন।