Last Updated on 3 months by zajira news
আন্তর্জাতিক ডেস্ক, জাজিরা নিউজ: উত্তর গাজার একটি স্কুলে ইসরায়েলি বিমান হামলায় আশ্রয় নেওয়া বহু নিরীহ মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। ইসরায়েলিদের চলমান সামরিক অভিযানে গাজার সংকট ক্রমেই গভীরতর হচ্ছে।
ফিলিস্তিনি চিকিৎসা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) গাজার বিভিন্ন স্থানে ইসরায়েলি হামলায় অন্তত ১১২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে ২৭ জনেরও বেশি মানুষ ছিলেন এক স্কুলে, যেখানে তারা নিরাপত্তার আশায় আশ্রয় নিয়েছিলেন।
ইসরায়েল বলছে, তারা হামাসের বিরুদ্ধে চাপ সৃষ্টি করতে এবং গাজার এই গোষ্ঠীকে নির্মূল করতে তাদের অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।
গাজার তুফফাহ পাড়ার ওই স্কুল থেকে ১৪টি শিশুর নিথর দেহ উদ্ধার করা হয়েছে, সঙ্গে আরও পাঁচ নারীও নিহত হয়েছেন। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জাহের আল-ওয়াহিদি জানিয়েছেন, আহতদের মধ্যে অন্তত ৭০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক, ফলে মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
এছাড়া, গাজার শুজাইয়া এলাকায় বেশ কয়েকটি বাড়িতে চালানো বিমান হামলায় আরও ৩০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। আল-আহলি হাসপাতালের রেকর্ড অনুযায়ী, নিহতদের অনেকেই ছিলেন সাধারণ নাগরিক।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী বলছে, তারা গাজা সিটিতে একটি হামাস কমান্ড ও নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে এবং বেসামরিক হতাহতের সংখ্যা কমানোর জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে, আগের দিনও একই দাবিতে একটি জাতিসংঘ পরিচালিত আশ্রয়কেন্দ্রে হামলা চালানো হয়, যেখানে অন্তত ১৭ জন নিহত হন।
ইসরায়েলি বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, ১৮ মার্চ যুদ্ধবিরতি ভঙ্গের পর থেকে তারা গাজায় ৬০০টিরও বেশি স্থানে হামলা চালিয়েছে এবং হামাসের সামরিক ও রাজনৈতিক শাখার ১২ জন শীর্ষ নেতাসহ ২৫০ জনের বেশি সদস্যকে হত্যা করেছে।
হামাস এই হামলাকে নিরীহ মানুষের ওপর বর্বরোচিত গণহত্যা বলে বর্ণনা করেছে এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে যে তারা যেন এই ধরনের আক্রমণ বন্ধ করতে উদ্যোগী হয়।
এরই মধ্যে, ইসরায়েল উত্তর গাজার বাসিন্দাদের তাদের এলাকা ছেড়ে পশ্চিম ও দক্ষিণের আশ্রয়কেন্দ্রগুলোর দিকে যেতে নির্দেশ দিয়েছে। সামরিক বাহিনী হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, আমরা এই এলাকায় কঠোরভাবে অভিযান চালাবো—যা আরও প্রাণহানির আশঙ্কা বাড়িয়ে তুলেছে।
গাজায় দিন দিন নিরাপদ আশ্রয় সংকুচিত হয়ে আসছে, যেখানে সাধারণ মানুষ শুধু বেঁচে থাকার জন্যই লড়াই করছে।