Last Updated on 3 weeks by zajira news
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি, জাজিরা নিউজ: গোপালগঞ্জে জাতীয় নাগরিক পার্টি-এনসিপির ‘মার্চ টু গোপালগঞ্জ’ কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, অগ্নিসংযোগ ও হামলার ঘটনার পর শহরে কারফিউ জারি করা হয়েছে।
গতকাল বুধবার রাতে শুরু হওয়া কারফিউয়ের কারণে আজ বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) সকালেও শহরজুড়ে নেমে এসেছে নিস্তব্ধতা। অধিকাংশ দোকানপাট বন্ধ, জনসাধারণ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না, শহরের রাস্তা প্রায় জনশূন্য।
বুধবার রাতেই অভিযান চালিয়ে ১৪ জনকে আটক করেছে যৌথ বাহিনী। গোপালগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মির মো. সাজেদুর রহমান জানান, আটক ব্যক্তিদের থানায় হস্তান্তর করা হলেও এখনো কোনো মামলা হয়নি।
এর আগে বুধবার সকালে পৌর পার্কে কর্মসূচি শুরুর আগেই এনসিপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ শুরু হয়। এ সময় পুলিশের গাড়িতে আগুন এবং ইউএনওর গাড়িতে হামলার ঘটনা ঘটে। শহরে ঢোকার পরপরই এনসিপি নেতাদের ঘিরে উত্তপ্ত পরিস্থিতি সামাল দিতে সেনা সদস্যদের সাজোঁয়া যান ও বিজিবির চার প্লাটুন মোতায়েন করা হয়।
দফায় দফায় সংঘর্ষে শহরের উলপুর, টেকেরহাট ও পৌর পার্ক এলাকায় সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে। সমাবেশ মঞ্চে হামলার ঘটনা ঘটে বেলা দেড়টার দিকে। পরে সমাবেশ সংক্ষিপ্ত করে পুলিশ ও সেনা পাহারায় এনসিপি নেতারা মাদারীপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দেন, তবে লঞ্চঘাট এলাকাতেও তাদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠে।
গোটা গোপালগঞ্জ শহর পরিণত হয় রণক্ষেত্রে। হাতবোমা, সাউন্ড গ্রেনেড, কাঁদুনে গ্যাস ছোড়ার শব্দ এবং ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। শহরের অধিকাংশ দোকান ও বাজার বন্ধ হয়ে যায়।
গোপালগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে চারজনের মরদেহ আনা হয়েছে বলে জানা গেছে। আহত অন্তত ১৫ জনের মধ্যে তিনজনকে গুরুতর অবস্থায় ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
বিকেলে ১৪৪ ধারা জারি করেও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে না আসায় সন্ধ্যার পর পুরো শহরে কারফিউ জারি করা হয়। কারফিউ জারির পর শহর পরিণত হয় ভুতুড়ে নগরীতে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনী ও পুলিশের উপস্থিতি থাকলেও রাতভর ছিল এক ধরনের নিস্তব্ধতা।