সময়ের জনমাধ্যম

গোপালগঞ্জে ৪ মামলায় তিন হাজার আসামি, গ্রেপ্তার ২৭৭

Last Updated on 2 weeks by zajira news

নিউজ ডেস্ক, জাজিরা নিউজ: জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)র গোপালগঞ্জের কর্মসূচি ঘিরে হামলা-সংঘর্ষের ঘটনায় চারটি মামলা হয়েছে, যেখানে আসামি করা হয়েছে তিন হাজারের বেশি মানুষকে।

এসব মামলার আসামির তালিকায় আওয়ামী লীগ ও দলটির ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনগুলোর নেতাকর্মীসহ ৩৫৮ জনের নাম রয়েছে। ‘অজ্ঞাত’ আসামি ২৬৫০ জন। এসব মামলায় ২৭৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। সবগুলো মামলাই করেছে পুলিশ। সবশেষ মামলাটি হয় শুক্রবার রাতে; গোপালগঞ্জ সদর থানায়।

গোপালগঞ্জ সদর থানার ওসি মির মোহাম্মদ সাজেদুর রহমান বলেন, পুলিশের ওপর হামলা, মারামারি ও গাড়ি পোড়ানোর অভিযোগে এসআই শামীম আল-মামুন এ মামলা করেছেন। এতে আসামি করা হয়েছে আওয়ামী লীগ ও ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনের ৪০৪ নেতাকর্মীকে।

আগের দিনও এসব দল ও সংগঠনের নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে একই থানায় একই অভিযোগে আরেকটি মামলা হয়। এতে আসামি করা হয় ৫৭৫ জনকে। বাদী হয়েছেন পরিদর্শক আহম্মেদ আলী বিশ্বাস। বুধবারের ওই সহিংসতার ঘটনায় আরও দুটি মামলা হয় বৃহস্পতিবার রাতে। একটি মামলা হয় কোটালীপাড়া থানায়; আরেকটি কাশিয়ানীতে।

কোটালীপাড়া থানার ওসি আবুল কালাম আজাদ বলেন, বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা মামলায় বাদী হয়েছেন এসআই উত্তম কুমার সেন। এতে আসামি করা হয়েছে আওয়ামী লীগ ও ভ্রাতৃপ্রতীম সংগঠনের ১ হাজার ৬৫৫ জনকে।

আর কাশিয়ানীতে আসামির সংখ্যা ৩৭৪। এটাও বিশেষ ক্ষমতা আইনে করা মামলা; বাদী হয়েছেন এসআই নূর আলম মিয়া। এ মামলায় ৩৭৪ জনকে আসামি করার তথ্য দিয়েছেন কাশিয়ানী থানার ওসি কামাল হোসেন। সব মিলিয়ে চার মামলায় পুলিশ ২৭৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। এর মধ্যে বৃহস্পতিবার ১৬৭ জনকে ও শুক্রবার ১১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। শনিবারের গ্রেপ্তারের তথ্য পুলিশ এখনও দেয়নি। গোপালগঞ্জ থানা পুলিশ ধরেছে ৯২ জনকে, মুকসুদপুর থানা ৭৯ জনকে, কাশিয়ানী থানা ৫৭ জনকে, কোটালীপাড়া থানা ২২ জনকে ও টুঙ্গিপাড়া থানা ২৭ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

গোপালগঞ্জ আদালত পুলিশের পরিদর্শক সিরাজুল ইসলাম বলেন, পাঁচ থানা থেকে গ্রেপ্তার ২৭৭ জনকে আদালতে আনা হয়। পরে বিচারক তাদের জেলা কারগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

জুলাই পদযাত্রার অংশ হিসেবে গত বুধবার জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশ ঘিরে নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের কর্মীদের হামলা এবং আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে দফায় দফায় সংঘর্ষে রণক্ষেত্রে পরিণত হয় গোপালগঞ্জ। টানা ৫ ঘণ্টার ওই সংঘাতে নিহত হন অন্তত চারজন। পরে আহতদের মধ্যে একজন বৃহস্পতিবার রাতে হাসপাতালে মারা যান।

পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে আটকা পড়া এনসিপির কেন্দ্রীয় নেতারা সেদিন সেনাবাহিনীর সাঁজোয়া যানে করে গোপালগঞ্জ ত্যাগ করেন। এ সহিংসতার প্রেক্ষাপটে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট প্রথমে ১৪৪ ধারা জারি করেন। পরে বুধবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়। সেই সময় শেষে কারফিউ না তুলে তা অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত জানায় সরকার।

সেদিন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, শুক্রবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টার বিরতি দিয়ে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কারফিউ চলমান থাকবে।

এরপর শুক্রবার বিকালে কারফিউয়ের মেয়াদ শনিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত বাড়ানোর কথা এবং সর্বশেষ রাত ১১টার দিকে শনিবার সকাল ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত কারফিউ শিথিল থাকার কথা জানায় গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসন। এর মধ্যে শনিবার বিকাল পৌনে ৫টায় জেলা প্রশাসন জানায়, রোববার সকাল ৬টা পর্যন্ত কারফিউ বলবৎ থাকবে। এরপর রাতে আবার জেলা প্রশাসন জানায়, রোববার সকাল ৬টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি থাকবে।