Last Updated on 1 year by zajira news
খুলনা প্রতিনিধি, জাজিরা নিউজ: ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে বিধ্বস্ত সুন্দরবনে মিলছে বন্যপ্রাণীর মৃতদেহ। দুদিনে ৩৯টি হরিণের এবং একটি শুকরের মৃতদেহ উদ্ধারের কথা জানিয়েছে বনবিভাগ।
রেমালের আঘাতের পর সোমবার প্রথম দুটি হরিণের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছিল। মঙ্গলবার সকালে ২৪টি এবং দুপুরের দিকে আর ১৩টি হরিণের মৃতদেহ নদী দিয়ে ভেসে আসে। এ সময় ভেসে আসা আরও আটটি জীবিত হরিণ উদ্ধার করেছে বনবিভাগ। এভাবে একের পর এক বন্যপ্রাণীর মৃতদেহ ভেসে আসায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
বনবিভাগের খুলনা অঞ্চলের বনসংরক্ষক (সিএফ) মিহির কুমার দো সাংবাদিকদের বলেন, মঙ্গলবার (২৮ মে) সকালে সুন্দরবন পূর্ব বিভাগের শরণখোলা রেঞ্জের কটকা অভয়ারণ্যের জামতলা এলাকা থেকে ভেসে আসা মৃত ২৪টি হরিণ উদ্ধার করা হয়।
তিনি বলেন, দুপুরের দিকে সুন্দরবন করমজল কুমির প্রজনন কেন্দ্র এলাকার সামনের পশুর নদী থেকে আরও ১৪টি প্রাণীর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। এর মধ্যে ১৩টি হরিণের এবং একটি শুকরের। “উচ্চ জোয়ারের পানি সুন্দরবনে গহীনে উঠে যাওয়ায় হরিণগুলো ভেসে গিয়ে সাঁতরে কূলে উঠতে না পেরে মারা যেতে পারে বলে ধারণা করছি।”
বনসংরক্ষক বলেন, “ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবের দফায় দফায় উচ্চ জোয়ারে সুন্দরবনের সব নদীখাল উপচে বনের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়ে। এই জোয়ারের উচ্চতা ছিল ১০ ফুটের উপরে। ওই পানি দেখে সুন্দরবনের বন্যপ্রাণীকূলের মৃত্যুর আশঙ্কা করছিলাম। দুইদিনে ২৬টি হরিণের মৃতদেহ পাওয়া গেছে। এতে বনবিভাগ উদ্বিগ্ন।”
মৃত হরিণগুলো কটকাতে মাটি চাপা দেওয়া হয়েছে। আর জীবিত হরিণ বনে অবমুক্ত করা হয়েছে বলে জানায় বনবিভাগ। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বন বিভাগের ২৫টি টহল ফাঁড়ি। লবণপানি ঢুকে নষ্ট হয়েছে কমপক্ষে ৮০টি মিষ্টিপানির পুকুর।
সুন্দরবন পূর্ব বন বিভাগের করমজল বন্যপ্রাণী প্রজনন কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির বলেন, ‘সুন্দরবনের প্রাণিরা জলোচ্ছ্বাসের সাথে অভ্যস্ত। সাধারণত জলোচ্ছ্বাস হলে বন্যপ্রাণীরা উঁচু স্থান ও গাছে আশ্রয় নেয়। ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে বনের ভেতর অধিক উচ্চতায় (৮-১০ ফুট উচ্চতার) জলোচ্ছ্বাস হয়েছে। ফলে বনের উঁচু স্থান তলিয়ে যাওয়ায় প্রাণীদের আশ্রয় নিতে সমস্যায় পড়তে হয়েছে। উচ্চ জ্বলোচ্ছ্বাসের ফলে নিরাপদ আশ্রয়ে না যেতে পেরে হরিণগুলোর মৃত্যু হয়েছে।”
ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে উচ্চ জোয়ারের পানিতে রোববার থেকে দফায় দফায় সুন্দরবনের বিস্তৃীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। এ সময়ে বাগেরহাটের প্রধান প্রধান নদনদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয় বলে জানিয়েছিল পানি উন্নয়ন বোর্ড।