Last Updated on 3 weeks by zajira news
মালয়েশিয়া প্রতিনিধি, জাজিরা নিউজ: ত্যাগের মহিমা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে শনিবার (৭ জুন) মালয়েশিয়ায় উদযাপিত হয় মুসলিম বিশ্বের অন্যতম প্রধান ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদ উল আযহা। এই উৎসব মালয়েশিয়ার প্রবাসজীবনে ব্যস্ততার মাঝেও একাত্মতা ও আনন্দময় পুনর্মিলনের এক বিরল সুযোগ সৃষ্টি করে।
কুয়ালালামপুরসহ দেশটির প্রধান শহরগুলোর স্থানীয় মসজিদগুলোতে ঈদের নামাজ আদায়ে সমবেত হয় প্রবাসী বাংলাদেশী, ইন্দোনেশিয়ান এবং পাকিস্তানিরা সহ ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। চারদিকে ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠে ইদের প্রাঙ্গণ, যা ত্যাগের মহিমান্বিত এই দিনটিকে এক ভিন্ন মাত্রা দেয়।
ঈদের দিন সকালেই পুত্রা মসজিদ, জাতীয় মসজিদ নেগারা, শাহ আলম, সুঙ্গাই বুলহ, ক্লাং, রাওয়াং, পুচং মসজিদসহ বিভিন্ন জেলার বড় মসজিদগুলোতে মুসল্লিদের ঢল নামে। মসজিদে স্থান সংকুলান না হওয়ায় অনেকে খোলা মাঠে, রাস্তায় কিংবা মসজিদের চত্বরে নামাজ আদায় করেন।
এদিন ভোর থেকেই ঈদের প্রস্তুতি শুরু হয়ে যায় এবং সকাল ৮টা থেকে সাড়ে ৮টার মধ্যে বেশিভাগ মসজিদে ঈদের নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। নামাজ শেষে মুসল্লিরা একে অপরকে আলিঙ্গন করে ঈদের শুভেচ্ছা জানান। দীর্ঘদিনের পরিচিতজনের সাথে পুনর্মিলনের এই সুযোগ প্রবাসীদের জন্য এক বিশেষ আনন্দের বার্তা নিয়ে আসে।
ঈদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো কোরবানি। মালয়েশিয়ায় প্রবাসীরা ব্যক্তিগত বা সম্মিলিতভাবে এই ত্যাগের বিধান পালন করেন। স্থানীয় মসজিদ কমিটি, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও প্রবাসী কমিউনিটিগুলো কোরবানির সুব্যবস্থা করে থাকে। পশু কোরবানির পর গোশত পরিমাণ অনুযায়ী আত্মীয়-স্বজন, বন্ধু-বান্ধব ও দরিদ্রদের মধ্যে বিতরণ করা হয়। অনেকেই প্রিয়জনদের সাথে মিলিত হয়ে ভোজের আয়োজন করেন, যা এই দিনের আনন্দকে আরো বাড়িয়ে তোলে।
বাংলাদেশ হাইকমিশনসহ অন্যান্য দেশের দূতাবাসগুলো প্রবাসীদের ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বার্তা প্রকাশ করে। কোথাও কোথাও বিশেষ দোয়া মাহফিল ও মিলনমেলার আয়োজনও করা হয়। এই আয়োজন ও অংশগ্রহণ মালয়েশিয়ার মুসলিম প্রবাসীদের শক্তিশালী অবস্থান এবং তাদের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য রক্ষার অঙ্গীকারের প্রতিফলন। ঈদুল আজহার এই দিনে প্রবাসীদের জন্য সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মিলনমঞ্চে পরিণত হয়- যেখানে নতুন করে জেগে ওঠে ঐক্য, পারস্পরিক সহযোগিতা ও ভালোবাসা।