Last Updated on 1 year by zajira news
নিউজ ডেস্ক, জাজিরা নিউজ: বর্ষবরণ ১৪৩১ উপলক্ষে শনিবার (৬ এপ্রিল) ছায়ানট সংস্কৃতি-ভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মলনে উপস্থিত ছিলেন ডা. সারওয়ার আলী, নির্বাহী সভাপতি; আতিউর রহমান, সহ-সভাপতি; খায়রুল আনাম শাকিল, সহ-সভাপতি; লাইসা আহমদ লিসা, সাধারণ সম্পাদক; জয়ন্ত রায়, যুগ্ম সম্পাদক প্রমুখ।
বিশ্বব্যাপী, বস্তুর প্রতি মানুষের আকর্ষণ যেভাবে বেড়েছে সেভাবে কমেছে মানুষের প্রতি মমত্ববোধ, যার ফলে ক্ষয়ে চলেছে মানবতা, ক্রমান্বয় অবক্ষয় ঘটছে মূল্যবোধের।
মানুষের সঙ্গে মানুষের দূরত্বের ক্রমবৃদ্ধিতে, অন্য মানুষের প্রতি আচরণের অস্বাভাবিকতায় আজ আমরা মুখোমুখি নতুন সংকটের। তবে এই সংকটে আমরা আশাহত হই না, দিশা হারাই না, বিশ্বাস করি মানুষের কাছে গিয়ে, মানুষের হাতে হাত রেখে সকলের সাথে মিলবার, চলবার, গাইবার সাধনাই মানুষকে আবার ফিরিয়ে আনবে মানুষের কাছে। স্বাভাবিকতা ও পরস্পরের প্রতি সম্প্রীতির সাধনায় আমাদের যুক্ত হতে হবে। মানুষের প্রতি মানুষের ভালবাসার শক্তিতে বাঙালি মনুষ্যত্বের জয়গান গাইবে, উচ্চারণ করবে কত শতাব্দী করেছি মা পাপ মানুষেরে করি ঘৃণা, জানি মা মুক্তি পাব না তাহার প্রায়শ্চিত্ত বিনা, পরম প্রত্যয়ে বলবে হিংসা আর নিন্দা ছাড়ো মনটা করো পরিষ্কার ।
মানুষকে ভালবেসে নিজেকে সার্থক মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে । আঁধার রজনী শেষে নবীন আলোয় নবীন আশায় নবীন জীবন লাভ করে সুদিনের পথে চলব আমরা, বাঙালিকে বলব, নাই নাই ভয় হবে হবে জয়।
এবারের নববর্ষের প্রথম প্রভাতে, আমরা মানুষের জয়গান করবো, ভোগবাদ নয়, স্বার্থপরতা নয় মনুষ্যত্বকে পাওয়ার অভিলাষী ছায়ানটের আহ্বান, স্বাভাবিকতার সাধনা এবং সম্প্রীতির ধ্যান ‘দূর করো আত্মকেন্দ্রিকতা, আপনি জ্বালো এই তো আলো’।
ভোরের আলো ফুটতেই আহীর ভৈরব রাগে বাঁশির সুরে এবারের নতুন বছর আবাহনের শুরু। পুরো অনুষ্ঠান সাজানো হয়েছে নতুন স্নিগ্ধ আলোয় স্নাত প্রকৃতির গান, মানবপ্রেম-দেশপ্রেম আর আত্মবোধন-জাগরণের সুরবাণী দিয়ে। যোগ হয়েছে, জাতীয় কবির কালজয়ী সৃষ্টির বিজাতীয় অবমাননার প্রতিবাদ এবং লেখনীর দুর্দম শক্তিতে বাঙালির গণজাগরণে স্ফুলিঙ্গ ছড়িয়ে চলা আবু বকর সিদ্দিককে স্মরণ।
বর্ষবরণ সার্থক করতে আন্তরিক নিষ্ঠায় প্রায় আড়াই মাস আগে থেকেই গান তোলা আর গলা মেলানোর কাজে নেমেছে শতাধিক ক্ষুদে ও বড় শিল্পী। রমনা উদ্যানে দুঘণ্টাব্যাপী এই আয়োজন সরাসরি সম্প্রচার করবে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতার। দেখা যাবে ছায়ানটের ইউটিউব চ্যানেলেও (www.chhayanaut.com/digitalplatformchhayanaut)।
আয়োজনের প্রস্তুতিপর্ব থেকেই আমাদের নিরন্তর প্রেরণা যুগিয়ে চলে গণমাধ্যমের খোঁজ-খবর নেয়া, প্রচার।
বরাবরের মতোই নতুন বাংলা বছরকে বরণ করার এই আয়োজন সার্থক করে তুলতে অক্লান্ত সেবা দিয়ে চলেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারীবাহিনী এবং গণপূর্ত অধিদপ্তর। ছায়ানট কর্মীদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে নিরলস শ্রম দিয়ে চলেছেন স্বেচ্ছাসেবীরা, লাউড ওয়ার্কস এবং থার্টিনথ হুসার্স ওপেন রোভার গ্রুপ সদস্যরা। এবারে নিরাপত্তা বেষ্টনীর প্রবেশপত্র নির্মাণে আধুনিক প্রযুক্তিগত সুবিধা করে দিয়েছেন ছায়ানট সুহৃদ্ শারমিন আরা ও ছায়ানট প্রাক্তনী শাহরিয়ার হাবিব। শ’দেড়েক শিল্পী-কর্মী ধারণ করতে সমর্থ মঞ্চনির্মাণের কাজ চলছে। মঞ্চ সজ্জায় সহযোগী হয়েছেন আরেক প্রাক্তনী রন্জিত রায়।
সকলকে নিয়ে শুভ কর্মপথে চলবার, কণ্ঠে নির্ভয় গান তুলে নেবার ছায়ানটের এই আয়োজন সার্থক হবে সর্বজনের সমর্থন, অংশগ্রহণ এবং উপলব্ধিতে।