Last Updated on 2 months by zajira news
অনলাইন ডেস্ক, জাজিরা নিউজ: বাংলাদেশের ফ্রিল্যান্সাররা ঘরে বসে কোনো ধরনের খরচ ছাড়াই স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকে একাউন্ট খোলার সুযোগ পাচ্ছেন। আনুষ্ঠানিকভাবে ব্যাংকটি এই কার্যক্রম শুরু করেছে।
রোববার (২০ এপ্রিল) রাজধানীর একটি হোটেলে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকের ওয়েলথ অ্যান্ড রিটেইল ব্যাংকিং বিভাগের প্রধান লুৎফুল হাবিব এবং বাংলাদেশ ফ্রিল্যান্সার ডেভেলপমেন্ট সোসাইটির (বিএফডিএস) চেয়ারম্যান ডা. তানজিবা রহমান এই উদ্যোগের উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে জানানো হয়, একজন ফ্রিল্যান্সার ঘরে বসে প্রয়োজন অনুযায়ী বিশেষ ব্যবস্থায় ব্যাংক হিসাব খুলতে পারবেন।
অনুষ্ঠানে লুৎফুল হাবিব জানান, ফ্রিল্যান্সাররা কোনো প্রকার একাউন্ট খোলার ফি ছাড়াই ঘরে বসে ডলারে ও টাকায় দুটি হিসাব খুলতে পারবেন। একাউন্ট পরিচালনায় কোনো চার্জ নেই, আন্তর্জাতিক ডেবিট কার্ড পাওয়াতেও থাকছে না অতিরিক্ত খরচ। রেমিট্যান্স সার্টিফিকেট সংগ্রহের জন্যও কোনো ফি লাগবে না। এছাড়াও ফ্রিল্যান্সাররা ব্যক্তিগত ঋণের ক্ষেত্রে প্রসেসিং ও বার্ষিক ফিতে বিশেষ ছাড় পাবেন।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর বাংলাদেশে প্রথম এলসি (লেটার অব ক্রেডিট বা ঋণপত্র), প্রথম ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ড এবং প্রথম কলসেন্টার চালু করে স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংক। এরই ধারাবাহিকতায় দেশের ফ্রিল্যান্সিং খাতে অবদান রাখতে নতুন এ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।
লুৎফুল হাবিব বলেন, বাংলাদেশ বর্তমানে ভারতের পর বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ফ্রিল্যান্সিং দেশ। প্রতিবছর প্রায় ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বৈদেশিক আয় এ খাত থেকে আসে। আমাদের লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে এটিকে ২ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত করা। সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে জনশক্তি প্রস্তুত করতে হবে।
বাংলাদেশ ফ্রিল্যান্সার ডেভেলপমেন্ট সোসাইটির চেয়ারম্যান ডা. তানজিবা রহমান বলেন, ‘দেশে বসে কোটি কোটি মানুষের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে কাজ পাচ্ছেন ফ্রিল্যান্সাররা। সে জন্য তাঁদের সম্মান দেওয়া উচিত। বিদেশ থেকে টাকা আনতে হয়রানি হতে হয়। এখন বিদেশি ব্যাংক এই সেবা দেওয়ায় অনেকে এই পেশায় আসতে আগ্রহী হবেন।’
ডা. তানজিবা রহমান বলেন, বাংলাদেশের ১০ লাখের বেশি ফ্রিল্যান্সার স্বউদ্যোগে প্রশিক্ষিত হয়ে কাজ করছেন। তাদের আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতায় এগিয়ে নিতে যথাযথ সুযোগ ও প্রাতিষ্ঠানিক প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা জরুরি। তিনি মনে করেন, দেশের তরুণদের দক্ষ করে তুলতে পারলে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ট কাজে লাগিয়ে বাংলাদেশ বৈশ্বিক ফ্রিল্যান্সিং বাজারে আরও এগিয়ে যেতে পারবে।
এ পেশায় টিকে থাকার হার ৩৫ শতাংশ। সম্মান পেলে আরও অনেকে এই সেবায় থেকে যাবে বলে মনে করেন তানজিবা রহমান। অভিভাবকেরা সন্তানদের এই পেশায় পাঠাতে আগ্রহী হবেন। এখন দেশের সাড়ে ১০ লাখ মানুষ ফ্রিল্যান্সিং পেশার সঙ্গে যুক্ত। বছরে ১ বিলিয়ন ডলার বা ১০০ কোটি ডলার আসে ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে। এখন আয়ের মাত্র ৩০ শতাংশ টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে আসছে, কারণ ব্যাংকগুলো সহযোগিতা করছে না।
ডা. তানজিবা রহমান আরও বলেন, চিকিৎসক, প্রকৌশলী ও আইনজীবীরাও এখন ফ্রিল্যান্সার হিসেবে কাজ করছেন। এআইয়ের কারণে অনেক চাকরি চলে যাবে, তবে এআইয়ের পেছনে কাজ করার জন্য অনেক মানুষের প্রয়োজন হবে। ফ্রিল্যান্সার কত আয় করছেন, তা প্রচার না করে কী কাজ করছেন, তাঁর যোগ্যতা কী, সেটাও প্রচারের আহ্বান জানান তিনি।