সময়ের জনমাধ্যম

ব্রাজিলের স্বপ্নভঙ্গ টাইব্রেকারে, সেমিতে উরুগুয়ে

Last Updated on 3 months by zajira news

স্পোর্টস ডেস্ক, জাজিরা নিউজ: কোপা আমেরিকার সেমিফাইনালে ওঠার লড়াই, কিন্তু প্রথমার্ধ তো বটেই পুরো ম্যাচেই কোনো গোল করতে পারেনি ব্রাজিল ও উরুগুয়ে। অথচ ৭৪ মিনিটে মিডফিল্ডার নাহিতাস নান্দেজ লাল কার্ড দেখে দশজনের দলে পরিণত হয় উরুগুয়ে।

কিন্তু সেই সুযোগও কাজে লাগাতে ব্যর্থ দরিভাল জুনিয়রের ব্রাজিল। শেষপর্যন্ত গোলশূন্য ম্যাচ গড়ায় টাইব্রেকারে। যেখানে দুটি ব্যর্থ শটে স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে ব্রাজিলের, সেমিফাইনালে উরুগুয়ে।

পুরো ম্যাচে কেমন উত্তেজনা ছিল সেটি টাইব্রেকার শুরুর আগমুহূর্তে চোখ রাখলেও টের পাওয়া যায়। কারণ দরিভাল-বিয়েলসার শিষ্যরা তখনও উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ে জড়িয়েছে। এরপর পেনাল্টি শ্যুট আউটে উরুগুয়ের শুরুটা গোল দিয়ে করেন ফ্রেডরিকো ভালবার্দে। অন্যদিকে, ব্রাজিলের প্রথম শট নিতে এসেই ব্যর্থ অভিজ্ঞ ডিফেন্ডার মিলিটাও। উরুগুয়ের গোলরক্ষক রচেট সেই শট ফিরিয়ে ব্রাজিলের মনে কাঁপন ধরিয়ে দেন।

ম্যাচে কার্ড জটিলতায় মাঠের বাইরে ছিলেন ব্রাজিলের তারকা ফুটবলার ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। তার স্থলাভিষিক্ত হয়েছিলেন ১৭ বছর বয়সী তরুণ স্ট্রাইকার এন্দ্রিক ফেলিপ। বড় ম্যাচে তার ভূমিকা দেখার অপেক্ষায় ছিল ব্রাজিলভক্তরা, তবে মাঠের খেলায় তিনি সেভাবে নজর কাড়তে পারেননি তিনি।

একদিকে ফর্মের তুঙ্গে থাকা উরুগুয়ে, অন্যদিকে নিজেদের সেরা ফর্ম খুঁজে ফেরা ব্রাজিল। তবে দুই দলই মাঠের পারফরম্যান্সে মলিন। গোলের সুযোগ হাতছাড়া করলো সমানভাবে। ১০ মিনিটের মাথায় দারউইন নুনিয়েজ সুযোগ পেয়েছিলেন উরুগুয়ের হয়ে লিড নেওয়ার। তবে তিনি হেড দেওয়ার চেষ্টায় ঠিকমতো মাথা ছোঁয়াতে পারেননি।

ব্রাজিলও বড় সুযোগ মিস করে ২৮তম মিনিটে। এন্দ্রিকের বাড়ানো বল ডি বক্সের ভেতর পেতে পারতেন রাফিনহা। কিন্তু এই সেলেসাও উইঙ্গার বলের কাছেই পৌঁছাতে পারেননি। উরুগুয়ে বিপদমুক্ত হয়ে একটু পরই পাল্টা আক্রমণে যায়। এবারও দৃশ্যপটে নুনিয়েজ, তবে এবার তার হেড চলে যায় গোলপোস্টের ওপর দিয়ে। প্রথমার্ধের শেষদিকে ব্রাজিল ও উরুগুয়ে আরও কয়েকবার গোল পেয়েও পায়নি! এভাবে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণেও বিরতির আগ পর্যন্ত কেউ গোলের দেখা পায়নি।

গোলশূন্য প্রথমার্ধের পর দ্বিতীয়ার্ধে গোলের জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে দুই দলই। প্রথমার্ধের তুলনায় দ্বিতীয়ার্ধে শারীরিক শক্তির প্রয়োগ বেশি করতে দেখা যায় উরগুয়েকে। ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড রদ্রিগোকে বাজেভাবে ফাউল করে লালকার্ড দেখেছেন উরুগুয়ে ডিফেন্ডার। ৭২ মিনিটে উরুগুয়ের অর্ধে বল নিয়ে আক্রমণে যাচ্ছিলেন রদ্রিগো। এমন সময় পেছন থেকে এসে রদ্রিগোকে থামানোর জন্য পায়ে আক্রমণ করেন নাহিতান নন্দেজ। এতে প্রথমে তাকে হলুদ কার্ড, পরে ভিএআর দেখে লালকার্ড দেখানের সিদ্ধান্ত নেন রেফারি। ফলে ১০ জনের দলে পরিণত হয় উরুগুয়ে।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুর দিকে আক্রমণে এগিয়ে ছিল উরুগুয়ে। ৫৩ মিনিটেই দুইবার গোলচেষ্টা চালায় তারা। প্রথমটি রুখে দেন ব্রাজিলের ডিফেন্ডাররা। পরেরটি চলে যায় গোলবারের বাইরে দিয়ে। ৬৮ মিনিটে ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড লুকাস পাকেতার একটি আক্রমণ ব্লক করে দেয় উরুগুয়ের রক্ষণভাগ। উরুগুয়ে ১০ জনের দলে পরিণত হলে আক্রমণের ধার বাড়াতে থাকে ব্রাজিল। ম্যাচের শেষদিকে ব্রাজিলের আক্রমণের ধারা অব্যাহত থাকে তবে গোলের দেখা মেলেনি নির্ধারিত সময়ে।

মূলত ব্রাজিল টাইব্রেকারের স্নায়ুচাপ সামলাতে পারেনি । সর্বশেষ কাতার বিশ্বকাপের পর থেকেই নিজেদের ছন্দ খুঁজে ফেরা দলটি লাস ভেগাসের অ্যালিগায়েন্ট স্টেডিয়ামেও ভিন্ন কিছু করতে পারেনি। দরিভাল জুনিয়র অল্প সময়ে দলটিকে গুছিয়ে তোলার আভাস দিলেও, ফিনিশিং ও মাঝমাঠে তাদের দুর্বলতা টের পাওয়া গেছে হাড়ে হাড়ে। যার সমাপ্তি ঘটিয়ে টাইব্রেকারে উরুগুয়ে জিতেছে ৪-২ গোলে।