Last Updated on 2 weeks by zajira news
নিউজ ডেস্ক, জাজিরা নিউজ: ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে খসড়া আচরণ বিধিমালার বিষয়ে অনলাইনে নাগরিকদের মতামত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
যারা মতামত দিয়েছেন, তাদের অনেকেই আসন্ন নির্বাচনে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা— এআইয়ের অপব্যবহার নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
ইসি বলছে, উদ্বেগের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে বিধিমালা পরিমার্জন করা হবে।গত ১৯ জুন ‘রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীদের আচরণ বিধিমালা ২০২৫’ চূড়ান্ত করে ইসি। এরপর নাগরিকদের মতামত নিতে ২৯ জুন সেটি প্রকাশ করা হয় ইসির ওয়েবসাইটে।
ই-মেইলের (opinion@ecs.gov.bd) মাধ্যমে ইসির জ্যেষ্ঠ সচিব বরাবর এ মতামত পাঠাতে বলে ইসি। মতামত পাঠানোর সময় ছিল ১০ জুলাই পর্যন্ত।
শুক্রবার নির্বাচন কমিশন সচিব আখতার আহমেদ বলেন, “আমরা অনেক ধরনের মতামত পেয়েছি, তার মধ্যে এআই একটা। আগামী সপ্তাহে এটা কমিশনে উপস্থাপন করতে পারি।”
ভোটে এআইয়ের অপব্যবহার নিয়ে উদ্বেগ থাকার কথা বলছেন প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরাও।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. আব্দুর রাজ্জাকের মতে, মানুষ যদি নেতিবাচক কিছু করতে চায়, তাহলে এআইয়ের মাধ্যমে নানাভাবে তা করতে পারে।
“এআই বিভিন্ন ধরনের কৃত্রিম ছবি তৈরি করে দিতে পারে; যেগুলোর আসলে কোনো অস্তিত্ব নাই। কারো ক্ষতি করতে চাইলে এ ধরনের ছবি, ভিডিও ইত্যাদি তৈরি করে সোশাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দিতে পারে।
“কিন্তু একটা ‘প্র্যাক্টিক্যাল’ অনুষ্ঠানের ছবি, আর এআই দ্বারা তৈরি ছবি— দুইটা কিন্তু আলাদা করা সম্ভব। এখন প্রশ্ন হলো, কতজন মানুষ সেটা করতে পারবেন? দেশের সব মানুষ হয়ত এটা করতে পারবেন না।”
প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে একমত ইসির অতিরিক্ত সচিব কেএম আলী নেওয়াজও। তার আশঙ্কা, এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীরা একে অপরকে নিয়ে বিভ্রান্তিকর তথ্য ছড়াতে পারেন।
“এআইয়ের অপব্যবহার রোধের বিষয়টি ইসির নজরে রয়েছে। বিষয়টি আচরণবিধিতে কীভাবে যুক্ত করা যায়, তা তুলে ধরা হবে। বলা যায়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম নিয়ে যে ধরনের বিধিনিষেধ রয়েছে, এআইয়ের প্রসঙ্গটিও সেভাবে যুক্ত হতে যাচ্ছে আচরণবিধিতে।”
অধ্যাপক রাজ্জাক বলছেন, “যেটা করা উচিত, সেটা হল বর্তমান সময়ে নির্বাচনের এই পদ্ধতিগুলোকে আরও বেশি স্বচ্ছ করা; সবার জন্য সমান ক্ষেত্র তৈরি করা।”
‘সমান ক্ষেত্রের’ বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে গিয়ে এ প্রযুক্তিবিদ বলেন, “কেউ যেন কারো পোস্টার ছিড়তে না পারে, সেজন্য যেমন একটা টিম থাকে; তেমনি সাইবার স্পেসেও কেউ যেন কারো ক্ষতি করতে না পারে, সেজন্যও বিশেষজ্ঞ দল থাকা উচিত।”
এ ধরনের বিশেষজ্ঞ দলের কাজের ধরন তুলে ধরতে গিয়ে তিনি বলেন, “তারা নির্ধারণ করবে, কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হলো কিনা। আবার এআই দিয়ে কী কী করা যাবে, কী কী করা যাবে না, সেটাও তারা নির্ধারণ করবে।
“ডোমেইন বিশেষজ্ঞ যারা আছেন, একাডেমিক এক্সপার্ট, প্রফেশনাল এক্সপার্ট— তাদের সমন্বয়ে কমিটি তৈরি করে একটা সমন্বিত উদ্যোগ নেওয়া দরকার।”
তিনি বলেন, “সাধারণ মানুষের ‘পারসেপশন’ থেকে দু-চার লাইন লিখলাম, সেটা আসলে যথেষ্ট হবে না। বিশেষজ্ঞ যারা আছেন, তাদের সম্পৃক্ত করে সোশ্যাল মিডিয়ায়, ইমেইলের মাধ্যমে, ওয়েবসাইটের মাধ্যমে, এআই মেশিন লার্নিংসহ অন্যান্য টেকনোলজি ব্যবহার করে এটা করতে হবে।”
নির্বাচনে সবার জন্য সমান সুযোগ তৈরি করা এবং বিধি লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার এখতিয়ার ইসির।