Last Updated on 9 months by zajira news
জুমার খুৎবা-পূর্ব বয়ান, মো. মাহমুদুল হাসান (মাইনুল): অনাবৃষ্টি, অতিবৃষ্টি ও অসহনীয় তাপমাত্রা আল্লাহ তায়ালার ক্রোধের বহিঃপ্রকাশ। মানুষের অপকর্ম, অপরাধ ও গুনাহের শাস্তির সতর্ক সঙ্কেত। যাতে মানুষ সর্বপ্রকার গুনাহের কাজ পরিহার করে আল্লাহর হুকুম পালনে আগ্রহী হয়। আসুন! বিরাজমান অতিরিক্ত তাপমাত্রা ও অনাবৃষ্টির বিপর্যয় থেকে মুক্তির জন্য তওবা ইস্তিগফার করি। আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পণ করি। আল্লাহ তায়ালাই রহমতের বৃষ্টি নাযিল করে অতিরিক্ত তাপমাত্রা দূর করে দিবেন। গতকাল জুমার খুৎবা-পূর্ব বয়ানে পেশ ইমাম এসব কথা বলেন।
মীরপুরের ঐতিহ্যবাহী বাইতুল মামুর জামে মসজিদের খতিব মুফতি আব্দুর রহিম কাসেমী গতকাল জুমার খুৎবা-পূর্ব বয়ানে বলেন, অনাবৃষ্টি, অতিবৃষ্টি ও অসহনীয় তাপমাত্রা আল্লাহ তায়ালার ক্রোধের বহিঃপ্রকাশ। মানুষের অপকর্ম, অপরাধ ও গুনাহের শাস্তির সতর্ক সঙ্কেত। যাতে মানুষ সর্বপ্রকার গুনাহের কাজ পরিহার করে আল্লাহর হুকুম পালনে আগ্রহী হয়। বান্দার গুনাহের কাজ পরিহার ও নেক আমলের বদৌলতে আল্লাহ তায়ালা আসমান থেকে রহমতের বৃষ্টি নাযিল করে মৃত জমিনকে উর্বর করেন। আর আসমান ও জমিনের বারাকাত সমূহ বান্দার উপকারে উন্মুক্ত করে দেন ।
আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন, জলে স্থলে যে বিপর্যয় আসে তা মানুষের নিজেদের হাতের কর্মফল। (আল কুরআন)। আল্লাহ তায়ালা আরও ইরশাদ করেন, জনপদের অধিবাসীরা যদি আল্লাহর উপর পরিপূর্ণ বিশ্বাস স্থাপন এবং তাকওয়া অবলম্বন পূর্বক গুনাহের কাজ পরিহার করত তাহলে আমি আসমান ও জমিন বারাকাত সমূহ নাযিল করে দিতাম। তিনি আরও বলেন, আল্লাহ তার পক্ষ থেকে বৃষ্টির সুসংবাদ হিসাবে ঠাণ্ডা বাতাস প্রেরণ করেন এবং আসমান থেকে পবিত্র পানি তথা বৃষ্টি বর্ষণ করেন। (সূরা ফুরকান, আয়াত নং ৪৮ ও ৪৯)।
আল্লাহ সর্ব শক্তিমান। তাঁর কোন প্রস্তুতি নেবার প্রয়োজন নেই। তিনি যা এরাদা বা ইচ্ছা করেন তা হতে বললেই হয়ে যায়। সুতরাং তাঁর সমীপে পূর্ণাঙ্গ আত্মসমর্পণ করতে হবে। যে সর্ব শক্তিমান আল্লাহ আমাদের মত সাধারণ তাপমাত্রার দেশে ৪২⁰ ডিগ্রী সেলসিয়াসের উপরে তাপমাত্রা দিলেন, তিনি কি পারেন না আরো ৫⁰/১০⁰ ডিগ্রী বাড়িয়ে দিতে? আবার এই সময়ই আধুনিক বিজ্ঞান প্রযুক্তির দেশ, চাঁদে যারা গবেষণাগার প্রতিষ্ঠার পরিকল্পনা করছে সেই চীনের ওয়াংডং প্রদেশে প্রবল বৃষ্টিপাতে ভয়াবহ বন্যা সৃষ্টি করলেন, আরব আমীরাতের দুবাই বিমান বন্দর অচল করে দিলেন আরও প্রবল বৃষ্টি ঝড়িয়ে, তিনি কি পারেন না গোটা আরব জাহানের মরুভূমি অঞ্চলকে আরও প্রবল বৃষ্টি ঝরিয়ে নূহের বন্যার মত প্রবল বন্যা সৃষ্টি করতে? ঐ বন্যার সূচনাতো মরুভূমির দেশে থেকেই শুরু হয়েছিল।
দুনিয়ার জ্ঞানে, বিজ্ঞানে, প্রযুক্তিতে সর্বশ্রেষ্ঠ দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একাঞ্চলকে তীব্র তাবদাহে অগ্নি জ্বালিয়ে যিনি ছাই করে দিতে পারেন, তিনি কি মুহূর্তের মধ্যে গোটা দুনিয়াকে অগ্নিকুণ্ডে পরিণত করতে পারেন না? সাগর তলদেশে সম্প্রতি আবিষ্কৃত আট বছর আগে নির্মিত এক শহরকে যেমন বিধ্বংস, বিধ্বস্ত করে দিয়েছেন, বিশ্বের তামাম শহর বন্দরকে পারেন না কি তেমন ধ্বংস, বিধ্বংস করে দিতে? কওমে লুতের কোলাহলপূর্ণ জনপদকে উল্টিয়ে দিয়ে যিনি বানিয়ে দিছেন ডেড’সি, নমরুদ ও তার হস্তি বাহিনীকে অতি ক্ষুদ্র মশাক দিয়ে নিশ্চিহ্ন করে দিলেন যিনি, এমনি আরো বহু ঘটনো মালিক যিনি, পূর্ণ শক্তি, পূর্ণ ক্ষমতা, পূর্ণ শান শওকাত, তিনি যেমন বিদ্যমান ছিলেন, বিদ্যমান আছেন ও বিদ্যমান থাকবেন, তার জড়া নেই, নিদ্রা নেই, মৃত্যু নেই। তিনি অজড়, অমর। তাঁর সন্তুষ্টি ছাড়া রক্ষা পাওয়ার উপায় নেই, বাঁচার উপায় নেই। তিনি ক্রোধান্বিত হলে সব ধ্বংস হবে। তিনি চাইলে আবার এক নয়া দুনিয়া গড়ে নিবেন। তিনি কারো মুখাপেক্ষী নন, দুনিয়ার তাতাম সৃষ্টি তাঁর মুখাপেক্ষী। তাই আসুন তাঁর কাছে পূর্ণ আত্মসমর্পণ করি, তাওবা করি, তাঁর রহমত প্রার্থনা করি। আল্লাহ আমাদের তাওফিক দান করুন। আমিন।