Last Updated on 1 week by zajira news
অনলাইন ডেস্ক, জাজিরা নিউজ: কয়েক দশক ধরে রেসলিং প্রেমীদের বুঁদ করে রাখা কিংবদন্তি রেসলার হাল্ক হোগান আর নেই। ৭১ বছর বয়সে মারা গেছেন বলে জানিয়েছে ডব্লিউডব্লিউই। হোগানের আসল নাম টেরি বোলিয়া।
হোগানের ম্যানেজার ক্রিস ভোলো এনবিসি লস অ্যাঞ্জেলেসকে জানিয়েছেন, রেসলার ফ্লোরিডার ক্লিয়ারওয়াটারে নিজ বাড়িতে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন। মৃত্যুর সময় তিনি পরিবার-পরিজন পরিবেষ্টিত ছিলেন।
গত মাস থেকে অসুস্থ ছিলেন হোগান। বেশ কয়েক বার তাঁর অস্ত্রোপচার হয়েছিল। শোনা গিয়েছিল, অস্ত্রোপচারের পর থেকে কোমায় রয়েছেন তিনি। কিন্তু তাঁর স্ত্রী সেই খবর গুজব বলে উড়িয়ে দেন। তার পরেই তাঁর মৃত্যুর খবর পাওয়া গেল
হোগান আশির ও নব্বইয়ের দশকের সবচেয়ে খ্যাতিমান পেশাদার রেসলার ছিলেন। পরে বিনোদনের অন্যান্য মাধ্যমেও খ্যাতি অর্জন করেন। হোগানের অভিষেক হয় ১৯৭৭ সালে। এরপর ধীরে ধীরে তিনি এই শিল্পের পুরোধা ব্যক্তিত্বে পরিণত হন।
লাল-হলুদ পোশাক ‘রিয়েল আমেরিকান’ শিরোনামের প্রবেশ সংগীত ও ‘হাল্কাম্যানিয়াক’ নামে পরিচিত বিশাল ভক্তবাহিনীর জন্য তিনি বিখ্যাত ছিলেন। বয়স পঞ্চাশের কোঠায় পৌঁছানোর পরও তিনি রেসলিং চালিয়ে গেছেন।
বর্ণবাদী মন্তব্যের জন্য ডব্লিউডব্লিউই হল অভ ফেম থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার পর ২০১৮ সালে তিনি ফের সেখানে ঠাঁই পান।
আশির দশকে ৬ ফুট ৭ ইঞ্চি উচ্চতা ও ২৯৫ পাউন্ড ওজনের এই রেসলার ছিলেন ভিন্স ম্যাকম্যাহন জুনিয়রের কোম্পানির প্রধান মুখ, যা তখন ওয়ার্ল্ড রেসলিং ফেডারেশন নামে পরিচিত ছিল। হোগানের প্রভাব চলচ্চিত্র, টেলিভিশন, ভিডিও গেম, মার্চেন্ডাইজ এমনকি একটি পাস্তা রেস্তোরাঁর চেইনসহ পপ সংস্কৃতির প্রতিটি কোনায় পৌঁছেছিল।
১৯৮২ সালের বক্সিং চলচ্চিত্র ‘রকি থ্রি’-তে থান্ডারলিপস নামক অতিমানবীয় রেসলারের চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি। এর দুই বছর বাদে হাল্ক হোগান চরিত্রটি জনপ্রিয়তার শিখরে পৌঁছায়।
১৯৮৫ সালের প্রথম রেসলম্যানিয়ার মূল আকর্ষণ ছিলেন তিনি। বছরের পর বছর ধরে তিনি ছিলেন এই আয়োজনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। আন্দ্রে দ্য জায়ান্ট, র্যান্ডি স্যাভেজ থেকে শুরু করে দ্য রক, এমনকি কোম্পানির চেয়ারম্যান ভিন্স ম্যাকমোহনের মতো তারকাদেরও তিনি মোকাবিলা করেছেন।
হোগান অন্তত ছয়বার ডব্লিউডব্লিউই চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেছেন; ২০০৫ সালে ডব্লিউডব্লিউই হল অভ ফেমে জায়গা পান।
২০১৬ সালে ফ্লোরিডার একদল জুরি গকার মিডিয়ার বিরুদ্ধে করা সেক্স টেপ মামলায় হোগানকে ১১৫ মিলিয়ন ডলার দেওয়ার রায় দেয়। এরপর শাস্তিমূলক ক্ষতিপূরণ হিসেবে আরও ২৫ মিলিয়ন ডলার যোগ করে। ২০১২ সালে গকার তার প্রাক্তন ঘনিষ্ঠ বন্ধুর স্ত্রীর সঙ্গে যৌনমিলনের একটি ভিডিও প্রকাশ করলে হোগান এই মামলা করেন। তিনি দাবি করেন, এই পোস্ট তার ব্যক্তিগত গোপনীয়তা লঙ্ঘন করেছে। তিন সপ্তাহব্যাপী এই মামলার শুনানির পুরো সময়টাতেই হোগান হাসিমুখে ছিলেন এবং কালো পোশাক পরেছিলেন।
ডব্লিউডব্লিউই এক্স-এ দেওয়া এক পোস্টে হোগানের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে। পোস্টে বলা হয়, ‘পপ সংস্কৃতির অন্যতম পরিচিত মুখ হোগান ১৯৮০-র দশকে ডব্লিউডব্লিউইকে বিশ্বব্যাপী পরিচিতি অর্জনে সহায়তা করেন। ডব্লিউডব্লিউই হোগানের পরিবার, বন্ধু ও ভক্তদের প্রতি সমবেদনা জানাচ্ছে।’