সময়ের জনমাধ্যম

মুর্শিদাবাদে সহিংসতায়, প্রেস সচিবের মন্তব্যকে ‘অযাচিত’ বলছে ভারত

Last Updated on 2 months by zajira news

অনলাইন ডেস্ক, জাজিরা নিউজ: ভারতে ওয়াকফ আইন সংশোধনের প্রতিবাদে বিক্ষোভের সময় পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদে সহিংসতার ঘটনায় বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব যে নিন্দা জানিয়েছেন, ভারত তার সমালোচনা করেছে ।

এনডিটিভি লিখেছে, ঢাকার মন্তব্যকে ‘অযাচিত’ ও ‘লোক দেখানো নৈতিকতা’ বর্ণনা করে দিল্লি তার পূবের প্রতিবেশীকে পরামর্শ দিয়েছে- যাতে তারা নিজেদের দেশে সংখ্যালঘুদের সুরক্ষার দিকে মনোযোগ দেয়।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বৃহস্পতিবার ফেইসবুক পোস্টে লেখেন, “মুর্শিদাবাদের সাম্প্রদায়িক সহিংসতার সঙ্গে বাংলাদেশকে জড়ানোর যে কোনো প্রচেষ্টাকে আমরা জোরালোভাবে প্রত্যাখ্যান করছি। আমরা মুসলমানদের ওপর হামলা এবং তাদের জীবন ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতির তীব্র নিন্দা জানাই।

“সংখ্যালঘু মুসলিম জনগোষ্ঠীর পূর্ণ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ভারত ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারকে সব ধরনের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানাই।”

এর প্রতিক্রিয়ায় ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল বলেন, “ওই মন্তব্য ভারতের উদ্বেগের সঙ্গে তুলনা টানার একপ্রকার অসৎ ও প্রচ্ছন্ন চেষ্টা, যেখানে বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর চলমান নিপীড়নের ঘটনায় অপরাধীরা এখনও অবাধে ঘুরে বেড়াচ্ছে।” পাশাপাশি বাংলাদেশের ‘সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষায়’ নজর দিতে বলেছে দিল্লি।

ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর গত মাসে দেশটির পার্লামেন্টে বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতা শুরু হওয়ার পর ২০২৪ সালে বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে ‘২ হাজার ৪০০টি নৃশংসতার’ ঘটনা ঘটেছে। ২০২৫ সালে এখন পর্যন্ত এই সংখ্যা ‘৭২’।

এনডিটিভি লিখেছে, ভারতের এই প্রতিক্রিয়া এমন একদিনে এসেছে, যখন পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস সহিংসতার কবলে পড়া মুর্শিদাবাদে সফরের ঘোষণা দিয়েছেন এবং ‘যেকোনো মূল্যে শান্তি প্রতিষ্ঠার’ ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন।

আর পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় পরিস্থিতি ‘ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে’ দাবি করে রাজ্যপালকে তার সফর স্থগিত করার অনুরোধ জানিয়েছেন।

পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের প্রতিবেদনের বরাতে এনডিটিভি লিখেছে, মুর্শিদাবাদের জঙ্গিপুরের থানা এলাকায় ৪ এপ্রিল শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল; কিন্তু ৮ এপ্রিল উমরপুরে পাঁচ হাজার জনতা মহাসড়ক অবরোধ করলে তা সহিংস হয়ে ওঠে। পুলিশের ওপর ইট, লোহার রড, ধারালো অস্ত্র ও আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে হামলা চালানো হয় বলে অভিযোগ উঠেছে। সরকারি গাড়িকেও নিশানা করা হয়।

১১ এপ্রিল সুতি ও সমশেরগঞ্জে নতুন করে সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ে, যার মধ্যে সরকারি-বেসরকারি সম্পত্তির ক্ষতি করা হয়। পুলিশের ভাষ্য, কর্মকর্তা ও সাধারণ নাগরিক- উভয়কেই রক্ষা করতেই সুতির সাজুর মোরে গুলি চালিয়েছিল পুলিশ। মুর্শিদাবাদ জুড়ে এখনও পর্যন্ত ২৭৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

বার্তা সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, ১১ ও ১২ এপ্রিল ওই অঞ্চলের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ, হামলা ও ভাঙচুর মিলিয়ে যে অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে, তাতে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে।

Reendex

Must see news