সময়ের জনমাধ্যম

মেজর সাদিক-সুমাইয়া-গুলশান আরা ষড়যন্ত্র: দূতাবাস, হাসপাতাল ও সংখ্যালঘু সম্প্রদায় ছিল টার্গেটে

বিশ্বস্ত সূত্রে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, পরিকল্পনার লক্ষ্য ছিল অক্টোবর-নভেম্বরে দেশে অরাজকতা সৃষ্টি, আন্তর্জাতিক চাপ বাড়ানো ও অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন নিশ্চিত করা— ভারতীয় গোয়েন্দাদের সরাসরি সম্পৃক্ততার প্রমাণও মিলেছে।

Last Updated on 4 weeks by zajira news

অনলাইন ডেস্ক, জাজিরা নিউজ: মেজর সাদিক, তার স্ত্রী সুমাইয়া এবং অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট গুলশান আরা— এই কেসটি বাইরে থেকে যতটা সহজ মনে হয়েছিল, আসলে ততটা নয়। বিশ্বস্ত সূত্র বলছে, তাদের পরিকল্পনা ছিল অত্যন্ত সুপরিকল্পিত, বিপজ্জনক এবং কার্যকর।

আওয়ামী লীগের কর্মীদের ট্রেনিং দেওয়ার অভিযোগে মেজর সাদিকের নাম ও পরিচয় সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশের পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তবে তার স্ত্রী সুমাইয়াকে গ্রেপ্তারের পরিকল্পনা শুরুতে ছিল না। কক্সবাজারের একটি রেস্টুরেন্টে সেনা কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় ডিসি-ডিবি দল সুমাইয়াকে গ্রেপ্তার করে। প্রথমে উপস্থিত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তাকে হস্তান্তরে অনীহা প্রকাশ করলেও পরে আর্মি হেডকোয়ার্টারের নির্দেশে ডিবির কাছে হস্তান্তর করা হয়।

বর্তমানে এই কেসটি হ্যান্ডেল করছে জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেল (JIC), যেখানে ডিজিএফআই, এনএসআই, এসবি ও ডিবি একসাথে কাজ করছে। এর আগে JIC মূলত ডিজিএফআইয়ের নিয়ন্ত্রণে থাকলেও এখন সমন্বিতভাবে পরিচালিত হচ্ছে। উল্লেখযোগ্যভাবে, ড. মুহাম্মদ ইউনুসের উদ্যোগে ডিবির কার্যক্রম সাম্প্রতিক সময়ে অনেক বেশি সক্রিয় ও কার্যকর হয়েছে।

তথ্যমতে, সাদিক ও সুমাইয়া যাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন, তারা দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী। প্রশিক্ষণের ধরন ছিল “সাব-ট্যাকটিক্যাল আর্বান ওয়ারফেয়ার”, যা গেরিলা ট্রেনিং হিসেবেও পরিচিত। পরিকল্পনায় ঢাকার গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা— বিদেশি দূতাবাস, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, সিএমএইচ, পপুলার হাসপাতাল, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়— সবই ছিল টার্গেটে।

উদ্দেশ্য ছিল অক্টোবর-নভেম্বরে দেশে অরাজকতা সৃষ্টি করা। দূতাবাসে হামলা হলে আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশ চাপে পড়ত, চলমান তদন্ত স্থগিত বা দীর্ঘায়িত হতো। পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন স্থানে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘর ও মন্দিরে হামলার পরিকল্পনাও ছিল।

এ সুযোগে ভারত সংখ্যালঘু নির্যাতনের ইস্যু তুলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে চাপ সৃষ্টি করত, লবিং ফার্মের মাধ্যমে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনে চাপ বাড়াত। এমনকি পরিকল্পনার সর্বোচ্চ পর্যায়ে সীমান্তে ২-৩ দিনের সীমিত বিমান হামলার সম্ভাবনাও ছিল।

জয়েন্ট ইন্টারোগেশন সেলের তথ্যমতে, এই ষড়যন্ত্রে ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার সরাসরি সম্পৃক্ততা ছিল। তবে দুই প্রধান পরিকল্পনাকারী ও প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ৪০ জনেরও বেশি গ্রেপ্তার হওয়ায় এই পরিকল্পনা আপাতত ভেস্তে গেছে বলে মনে করা হচ্ছে।

Reendex

Must see news