Last Updated on 2 years by admin
অনলাইন ডেস্ক, জাজিরা নিউজ: সুইজারল্যান্ডের দাভোসের ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের এবারের আসর বসার আগে অক্সফাম ইন্টারন্যাশনাল এই প্রতিবেদনটি প্রকাশ করেছে। এতে বলা হয়, ২০২০ সালে এ ধনীদের সম্পদের পরিমাণ ছিল ৪০ হাজার ৫০০ কোটি ডলার। গত বছর তা ৮৬ হাজার ৯০০ কোটি ডলারে উন্নীত হয়েছে। একই সময়ে, বিশ্বব্যাপী প্রায় ৫০০ কোটি মানুষ আরও দরিদ্র হয়েছে, যাদের উচ্চ মূল্যস্ফীতি, যুদ্ধ-সংঘাত ও জলবায়ু সংকটের সঙ্গে লড়তে হচ্ছে। অক্সফাম ইন্টারন্যাশনাল আরও জানিয়েছে, বিশ্বব্যাপী ধনী-গরিবের সম্পদের ব্যাপক বৈষম্যের এই অবস্থায়, বর্তমান পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করে দারিদ্র্যদূরীকরণে প্রায় ২৩০ বছর সময় লাগবে।
বিশ্বের অতিধনীদের সম্পদের পরিমাণ বাড়ছেই। সম্প্রতি অক্সফাম ইন্টারন্যাশনালের প্রকাশিত বার্ষিক বৈষম্য প্রতিবেদন অনুযায়ী, সামগ্রিকভাবে ২০২০ সালের পর শীর্ষ পাঁচ ধনীর সম্মিলিত সম্পদের পরিমাণ ৩৪ শতাংশ বেড়েছে। অর্থাৎ এই সময়ে হওয়া মূল্যস্ফীতির হারের চেয়ে তাদের বিত্ত তিনগুণ দ্রুত বেড়েছে। ঠিক এই সময়ে শীর্ষ ধনীদের সম্পদ দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে, অন্যদিকে বিশ্বজুড়ে দরিদ্র মানুষের আয় কমেছে।
এই শতকোটিপতিরা হলেন টেসলার প্রধান নির্বাহী ইলন মাস্ক, এলভিএমএইচের প্রধান বানার্ট আর্নল্ট, ওরাকলের সহ-প্রতিষ্ঠাতা ল্যারি এলিসন, অ্যামাজনের প্রধান জেফ বেজোস এবং বিনিয়োগকারী ওয়ারেন বাফেট।
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে সবচেয়ে বেশি সম্পদ বেড়েছে টেসলার প্রধান ইলন মাস্কের। ইলন মাস্ক বিশ্বের শীর্ষ ধনকুবের। বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা টেসলা, মহাকাশ অনুসন্ধান সংস্থা স্পেসএক্স, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সসহ (সাবেক টুইটার) বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী। টেসলা, পেপ্যালসহ বেশ কয়েকটি বড় প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িয়ে আছে ইলন মাস্কের নাম। অর্থ আদান-প্রদানের জনপ্রিয় মাধ্যম পেপ্যালের এই সহ-প্রতিষ্ঠাতা সবচেয়ে দ্রুতগতির হাইপারলুপ নামক কল্পিত উচ্চগতিসম্পন্ন পরিবহন ব্যবস্থারও উদ্ভাবক।
বিশ্বব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ইলন মাস্কের সম্পদ কলম্বিয়া, ফিনল্যান্ড, পাকিস্তান, চিলি ও পর্তুগালের মতো দেশগুলোর জিডিপির চেয়ে বেশি। ফোর্বসের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, মাস্ক সম্পদ আহরণের দিক দিয়ে নতুন সীমায় নিয়ে গেছেন নিজেকে। আমেরিকার বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান টেসলার ২৩ শতাংশ শেয়ারের মালিক তিনি। শীর্ষ এই ধনকুবেরের সম্পদের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশই টেসলার সাফল্যের সঙ্গে জড়িত।
যদিও ২০২২ সালটি ছিল মাস্কের সম্পদমূল্য কমার বছর। তবে ২০২৩ সাল তার জন্য আশীর্বাদই। কারণ এ বছর তার সম্পদমূল্য কয়েক শ কোটি ডলার পর্যন্ত বেড়ে যায়। এর পেছনে রয়েছে স্টক মার্কেটে শেয়ার। ২০২৩ টেসলার শেয়ারের দাম ১০৭ শতাংশ বেড়ে যায়। ফলে স্পেসএক্সের প্রতিষ্ঠাতা মাস্কের মোট সম্পদের মূল্য ১৩৮ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার থেকে বেড়ে গিয়ে দাঁড়ায় ২৩২ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার। তবে এর আগে ২০২১ সালে তার সম্পদের পরিমাণ ছিল ২৭৭ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার।
২০২২ সালের অক্টোবরে ইলন মাস্ক ৪৪০০ কোটি মার্কিন ডলারের বিনিময়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম টুইটার কিনেছিলেন। এর আগে ২০১০ সালে তিনি টেসলার শেয়ার জনসাধারণের জন্য উন্মুক্ত করেছিলেন। প্রতিষ্ঠানটি ২০২০ এবং ২০২১ সালের মধ্যে বাজার মূলধনে উল্লেখযোগ্য মুনাফা লাভ করে। ফলে ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে ইলন মাস্ক বিশ্বের শীর্ষ ১০ ধনী ব্যক্তির শীর্ষ অবস্থানে চলে আসেন। একই বছরের নভেম্বরে তার ভাগ্য বদলে যায়। ইলন মাস্ক হয়ে ওঠেন বিশ্বের শীর্ষ ধনী। তখন তার সম্পদ ৩ হাজার ২০০ কোটি মার্কিন ডলারে পৌঁছায়।