সময়ের জনমাধ্যম

হত্যার পর মরদেহ পুড়িয়ে ফেলার ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কাফী আটক

ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আব্দুল্লাহিল কাফি

Last Updated on 1 year by zajira news

নিউজ ডেস্ক, জাজিরা নিউজ: ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) মো. আব্দুল্লাহিল কাফিকে আটক করা হয়েছে। ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর থেকে ডিবি পুলিশের একটি দল তাকে আটক করে।

গত ৫ আগস্ট ঢাকার আশুলিয়ায় ছাত্র-জনতাকে হত্যার পর লাশ পোড়ানোর অভিযোগে তাকে আটক করেছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।

সোমবার (২ সেপ্টেম্বর) তার পালিয়ে যাওয়ার খবর পায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। দিনভর চেষ্টার পর রাত ১০টার দিকে তাকে বিমানবন্দর থেকে আটক করা হয়। ঢাকা জেলা উত্তরের ওসি (ডিবি) রিয়াজ উদ্দিন বিপ্লব গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

ডিবি পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গোপনসূত্রে আব্দুল্লাহিল কাফির পালিয়ে যাওয়ার খবর পায় ডিবি পুলিশ। এর পর দিনভর নানা নাটকীয়তার পর শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে তাকে আটক করতে সমর্থ হয় ডিবির একটি দল।

কাফির বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে উল্লেখ করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানায়, তিনি গত ৫ আগস্ট ঢাকার আশুলিয়ায় ছাত্রজনতাকে হত্যার পর লাশ পুড়িয়ে ফেলার অভিযোগে অভিযুক্ত।

সূত্রটি জানায়, এই ঘটনার সময় ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) দায়িত্বে ছিলেন মো. আব্দুল্লাহিল কাফি। পরে এ বিষয়ে কাফির এক সহকর্মী বক্তব্য দিয়েছেন গণমাধ্যমে। ঢাকা জেলা উত্তর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক রিয়াজ উদ্দিন আহমেদ বিপ্লব সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘মূলত সেদিন আমরা কাফির নির্দেশেই আশুলিয়া সড়কে পথ অবরোধ করে অপারেশন চালাই।’

এর আগে ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার আহাম্মদ মুঈদ জানিয়েছিলেন, পুলিশের ভেস্ট ও হেলমেট পরিহিত যে ব্যক্তি বা যারা মরদেহ তুলছিলেন ভ্যানে এবং আশেপাশে যারা ছিলেন বিভিন্ন গণমাধ্যমে তাদের পরিচয় সম্পর্কে লেখা হয়েছে। ইতোমধ্যেই তিন জনকে চিহ্নিত করা গেছে।

তিনি বলেন, ‘আমরা তিন জনকে ইতোমধ্যেই আইডেন্টিফাই করেছি। অলরেডি একটা ইনকোয়ারি কমিটি করেছি। তারা অলরেডি ইনকোয়ারি করছে। একটা কমপ্লিট রিপোর্ট আসবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘এ তিন জনই ওই থানার এলাকায় দায়িত্বে ছিলেন। এই মুহূর্তে নামটা আমরা ডিসক্লোজ করছি না। আরো তদন্তের স্বার্থে। এগুলো সব আইডেন্টিফাইড, সব। ভিজিবল, আর ভিডিও আছে যেহেতু। একইসাথে সাংবাদিকদের দেওয়া তথ্যের পাশাপাশি সাদা পোশাকেও পুলিশ কাজ করছে।’

এ ঘটনাকে ‘ক্রিমিনাল অফেন্স’ হিসেবে অভিহিত করে তিনি জানান, এ ঘটনায় ফৌজদারি মামলার পাশাপাশি সরকারি চাকরিজীবীদের যে রুলস রয়েছে, সেটার আওতায়ও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে এখনই নামগুলো প্রকাশ করা যাবে না।

ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার বলেন, ‘পুলিশের এসব সদস্যকে আইনের আওতায় আনার জন্য খোঁজা হচ্ছে। তাই পরিচয় প্রকাশ পেলে তাদের খুঁজে পাওয়া মুশকিল হবে। যত দ্রুত সম্ভব এটাকে আইডেন্টিফাই করে এগুলার ব্যাপারে আইনগত প্রক্রিয়া আমরা শেষ করবো।’

গত ৩০ আগস্ট ১ মিনিট ১৪ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় আলোচনায় আসে আব্দুল্লাহিল কাফির নাম। ভাইরাল ওই ভিডিওতে দেখা যায় পুলিশ সদস্যরা রাস্তা থেকে মৃতদেহ একটা ভ্যানে ছুড়ে ফেলছেন। একপর্যায়ে ভ্যানে স্তূপাকার লাশ একটি প্লাস্টিকের ব্যানার দিয়ে ঢেকে দেন পুলিশ সদস্যরা। ভ্যানে তোলা এক ব্যক্তির লাশ শনাক্তের মাধ্যমে জানা যায় ঘটনাটি আশুলিয়ার।

গত ৫ আগস্ট বিপুল জনরোষের মুখে পতন হয় ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের। সরকার পতনের তিন সপ্তাহ পর ভাইরাল হওয়া ভিডিওর সূত্র ধরেই মো. আব্দুল্লাহিল কাফিকে আটক করা হয়।

Reendex

Must see news