Last Updated on 5 months by zajira news
আন্তর্জাতিক ডেস্ক, জাজিরা নিউজ: সৌদি আরবের সংবাদ মাধ্যম আল হাদাথ জানিয়েছে, সিনিয়র হামাস নেতা ইসমাইল হানিয়াকে গাইডেড মিসাইল দিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
সংবাদ মাধ্যমটি জানায়, স্থানীয় সময় আনুমানিক ২:০০ (বিএসটি ২৩:৩০) এ মিসাইলটি তেহরানে তার ব্যক্তিগত বাসভবনে আঘাত করে।
ইরানের বিপ্লবী গার্ডের সাথে সম্পর্কিত ফার্স নিউজ জানিয়েছে, হানিয়া তেহরানের উত্তরের একটি অবসরপ্রাপ্ত সেনাদের আবাসিক কেন্দ্রে অবস্থান করছিলেন। তিনি ‘আকাশ থেকে নিক্ষিপ্ত একটি প্রজেক্টাইল’ দ্বারা নিহত হন। প্রাথমিক তথ্য অনুসারে, একটি রকেট আঘাত হানলে হানিয়া এবং তার দেহরক্ষী মারা যান।
বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, ইসরায়েল সাধারণত বিদেশে তাদের কার্যক্রম সম্পর্কে মন্তব্য করে না। তবে এই আক্রমণটি ইসরায়েলের একটি পূর্ববর্তী অপারেশনের মতো হতে পারে।
চলতি বছরের ১৯ এপ্রিল নাতাঞ্জে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনার আশেপাশের ইরানি বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে লক্ষ্য করে রকেট ছোড়া হয়েছিল। ওই অপারেশনে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমান ইরানের আকাশসীমার বাইরে থেকে রকেট নিক্ষেপ করেছিল বলে ধারণা করা হয়।
ইসমাইল হানিয়া দীর্ঘদিন ধরে ইসরায়েলের হিট লিস্টে ছিলেন। গত বছরের ৭ অক্টোবর যখন হামাসের যোদ্ধারা ইসরায়েলে হামলা চালান তখন দখলদার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জাতিমন নেতানিয়াহু গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদকে নির্দেশ দেন “বিশ্বের যে কোনো প্রান্তে হামাসের নেতাদের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করার জন্য।”
ইরানে হানিয়াকে হত্যা করে ইসরায়েল বার্তা দিয়েছে যে তারা চাইলে তাদের সবচেয়ে বড় শত্রুর নাকের ডগায় যে কাউকে টার্গেট করতে পারবে। হানিয়াকে হত্যার ব্যাপারে এখন পর্যন্ত আনুষ্ঠানিক দায় স্বীকার করেনি ইসরায়েল। অবশ্য অন্য দেশের মাটিতে কোনো হামলার ব্যাপারে প্রকাশ্যে কোনো কিছু বলে না তারা।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির সাংবাদিক জেরেমি বাউয়েন বিশ্লেষণ করার চেষ্টা করেছেন- কেন এখন হানিয়াকে টার্গেট করা হলো
তিনি বলেছেন, আমি ইসমাইল হানিয়ার সঙ্গে প্রথম সাক্ষাৎ করি ১৯৯০ সালে। তখন তিনি হামাসের একজন উদীয়মান নেতা ছিলেন। ৭ অক্টোবরের পর তার পরিবারকে টার্গেট করা হয়েছে। তার ছেলে ও নাতি নাতনি ইসরায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন। হানিয়ার অন্যতম দিক হলো তিনি হামাসের অন্যান্য নেতাদের মতো আড়ালে থাকতেন না। আমি মনে করি ইসরায়েল হানিয়াকে হত্যা করেছে। যদিও তারা এখন পর্যন্ত মন্তব্য করেনি। কিন্তু কেন তারা হানিয়াকে এখন হত্যা করল? যখন পূর্বে তাদের সামনে অবশ্যই সুযোগ ছিল। রাজনৈতিকভাবে হানিয়াকে কাতারে হত্যা করা সম্ভব ছিল না। ইরানে তাকে হত্যার মাধ্যমে ইসরায়েলের একটি বার্তা পৌঁছেছে যে— কেউ নিরাপদ নয়।হানিয়া যুদ্ধবিরতি ও জিম্মি চুক্তি আলোচনার অংশ ছিলেন। যার অর্থ এখন এগুলো আর সহজ হবে না।
হানিয়া মূলত থাকেন কাতারে। তিনি ইরানের নতুন প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ানের শপথ অনুষ্ঠানে অংশ নিতে তেহরানে গিয়েছিলেন। সেখানেই গুপ্তহত্যার শিকার হয়েছেন তিনি।