Last Updated on 1 year by zajira news
লাইফস্টাইল ডেস্ক, জাজিরা নিউজ: বার্ধক্য যত এগিয়ে আসে মানুষজন তত বেশি রোগাক্রান্ত হয়। তবে কিছু কিছু খাবার রয়েছে যেগুলো নিয়মিত খাওয়ার মাধ্যমে বার্ধক্যের প্রক্রিয়া ধীর করা যায় এবং সুস্থ থাকা যায়।
বয়স ত্রিশ পেরোলেই জীবনধারার প্রতি মনোযোগী হওয়া জরুরি। আজ হয়তো আপনি শারীরিকভাবে সুস্থ আছেন, কিন্তু শরীরের ভেতর নিজের অজান্তেই কোনো রোগ বাসা বাঁধছে কি না, আপনি জানেন না। স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের অভ্যাস গড়ে তুললে বহু জটিল রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব। জীবনধারার অন্যতম দিক খাদ্যাভ্যাস।
সুস্থ থাকতে হলে ত্রিশোর্ধ্ব মানুষ কোন কোন খাবার খেতে পারেন, জেনে নেওয়া যাক । এ বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছেন রাজধানীর গভর্নমেন্ট কলেজ অব অ্যাপ্লাইড হিউম্যান সায়েন্সের খাদ্য ও পুষ্টিবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক শম্পা শারমিন খান
দুধ ও দুগ্ধ জাতীয় খাবার
দুধ ক্যালসিয়ামের দারুণ এক উৎস। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে হাড়ক্ষয় রোধ করতে হলে আগে থেকেই ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। তাই দুধ কিংবা দুধের তৈরি খাবার খান রোজ। দুধে চিনি মেশাবেন না। মিষ্টান্ন খেতে চাইলে বাড়িতেই দুধ দিয়ে তৈরি করে নিন, তবে চিনির পরিমাণ অবশ্যই কম রাখুন। টকদইও খেতে পারেন। ক্যালসিয়াম যাতে দেহে শোষণ হয়, তার জন্য কিন্তু ভিটামিন ডি প্রয়োজন। তাই রোজ অন্তত মিনিট পনেরো রোদে থাকুন, এ সময় সানস্ক্রিনসামগ্রী ব্যবহার করবেন না। হাড়ক্ষয় প্রতিরোধে নারীদের বাড়তি সতর্কতা প্রয়োজন।
নিয়মিত ফলমূল খাওয়া খুবই জরুরী
ফলের রসের চাইতে গোটা ফল বা কাটা ফল ভালো। যেসব ফল খোসাসমেত খাওয়া যায়, সেগুলোর খোসা ফেলে দেবেন না যেন। টক ফল এবং পানসে ফল খাবেন প্রচুর পরিমাণে। তবে মিষ্টি স্বাদের ফল কম খাওয়াই ভালো। রোজ দুটি খেজুর খেতে পারেন।
প্রতিদিনের খাবার তালিকায় শাকসবজি রাখুন
রোজকার খাদ্যতালিকায় শাকসবজি রাখুন। আঁশসমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। যেসব সবজি কাঁচা খাওয়া যায়, সেগুলোর সালাদ খাওয়া খুবই ভালো অভ্যাস। শাক কিন্তু রাতেও খাওয়া যায়। যদি হজমে কোনো অসুবিধা না থাকে, তবে অনায়াসে রাতেও তা খেতে পারেন। তবে যেসব সবজি মাটির নিচে জন্মে, সেগুলো কম খাবেন। আলু, মুলা, কচু, গাজর, শালগম, মিষ্টি আলু প্রভৃতি কম খেতে হবে। মিষ্টিকুমড়াও খুব বেশি খাওয়া ঠিক হবে না।
রান্নায় তেলের পরিমান কম রাখুন
রান্নায় তেলের পরিমাণ সীমিত রাখুন । যতটুকু না হলেই নয়, কেবল ততটুকু তেলে খাবার রান্না করুন। বিনা তেলে রান্না খাবারও খেতে পারেন। রেস্তোরাঁর চাইতে বাড়িতে রান্না করা খাবার খাওয়াই স্বাস্থ্যকর। রান্নার জন্য সুর্যমুখী তেল, পাম তেল বা অলিভ তেল বেছে নিতে পারেন। শর্ষের তেলের রান্নাও খেতে পারেন অল্পস্বল্প। তবে অতিরিক্ত সরষের তেল কিন্তু স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে। অন্য তেল ব্যবহার করা সম্ভব না হলে অবশ্য সয়াবিন তেল ছাড়া গতি নেই, তবে অবশ্যই খেয়াল রাখুন এর পরিমাণের প্রতি। রান্নাবান্নায় একবার ব্যবহার করা কোনো তেলই পুনরায় ব্যবহার করা উচিত নয়।
মাছ ও মুরগির মাংস
মাছ এবং মুরগির মাংস খেতে পারেন রোজ। এই বয়সেও কিন্তু শরীরে আমিষের চাহিদা থাকে। তা ছাড়া মাছের তেলও স্বাস্থ্যকর। চর্বি বর্জনীয়। ফার্মের মুরগি খেতে পারেন ওজন এক-সোয়া এক কেজির মধ্যে ওজনের মুরগী গুলো ।
বাদাম, ছোলা, ডিম, ডাল
রোজ একটা ডিম খাওয়া যায় । ডাল ও ছোলাও খেতে পারেন। বাদাম স্বাস্থ্যকর নাশতা। তবে অতিরিক্ত কাজুবাদাম খাওয়া ঠিক নয়। দেশি চিনাবাদাম বা কাঠবাদাম বেছে নিতে পারেন।
শস্যদানা জাতীয় খাবার
গোটা শস্য বা ‘হোল গ্রেইন’ থেকে তৈরি খাবার খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন। লাল চাল বা মোটা চালের ভাত, লাল আটার রুটি খেতে পারেন। শস্যদানার তৈরি যেসব খাবার খসখসে, সেগুলো খেতে পারেন। খসখসে, বাদামি পাউরুটি খেতে পারেন। রিফাইনড বা পরিশোধিত শস্যদানা বর্জন করা উত্তম।