Last Updated on 1 year by admin
ধর্ম ডেস্ক, জাজিরা নিউজ: ইমাম নববী (রহ.) বলেছেন, আলোচ্য হাদিস থেকে জানা যায়, ভালো কাজের প্রচলন ঘটানো মুস্তাহাব এবং মন্দ কাজের প্রচলন ঘটানো হারাম।
আবু সিরমাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি অন্যের ক্ষতি করে আল্লাহ তা দিয়েই তার ক্ষতি করেন। আর যে ব্যক্তি অন্যকে কষ্ট দেয়, আল্লাহ তাকেও কষ্ট দেন। (সুনানে আবি দাউদ, হাদিস : ৩৬৩৫)
জারির বিন আব্দুল্লাহ (রা.) বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি ইসলামের মধ্যে কোনো সুন্দর বা ভালো কাজ চালু করল এবং পরবর্তী সময়ে সে অনুসারে আমল করা হলো, তাহলে আমলকারীদের প্রতিদানের সমান প্রতিদান তার জন্য লেখা হবে। এতে আমলকারীদের প্রতিদান থেকে কিছু কমিয়ে দেওয়া হবে না।
পক্ষান্তরে যে ব্যক্তি ইসলামের মধ্যে কোনো মন্দ কাজ চালু করল এবং পরবর্তী সময়ে সে অনুসারে আমল করা হলো, তাহলে আমলকারীদের গুনাহের সমান গুনাহ তার জন্য লেখা হবে। এতে আমলকারীদের গুনাহ থেকে কিছু কমিয়ে দেওয়া হবে না। (মুসলিম, হাদিস : ১০১৭)
আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি হিদায়াত তথা সঠিক পথের দিকে ডাকে তাতে তার অনুসরণকারীদের যে সওয়াব মিলবে, তারও সে পরিমাণ সওয়াব মিলবে। অনুসরণকারীদের সওয়াব তাতে কিছুই কমে যাবে না। আর যে ভুল পথের দিকে ডাকে তাতে তার অনুসরণকারীদের যে গুনাহ মিলবে, তারও সে পরিমাণ গুনাহ মিলবে। অনুসরণকারীদের গুনাহ তাতে কিছুই কমে যাবে না। (আবু দাউদ, হাদিস : ৪৬০৯)
আলোচ্য হাদিস শরিয়তের দুটি মূলনীতিকে প্রমাণ করে। তা হলো, এক. মানুষের কাজের ওপর তার ভালো ও মন্দ প্রতিদান নির্ভর করে, দুই. অন্যের ক্ষতি করা ও নিজে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া ইসলামে নিষিদ্ধ।
প্রতিদান মানুষের কাজের অনুরূপ হওয়া মহান আল্লাহর প্রজ্ঞা ও ন্যায়বিচারের নীতির অনুরূপ। আল্লাহ পবিত্র কোরআনের একাধিক স্থানে মানুষের প্রতিদান তার কাজের অনুরূপ হবে বলে
ঘোষণা দিয়েছেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘কেউ অণু পরিমাণ ভালো কাজ করলে সে তা দেখবে এবং কেউ অণু পরিমাণ মন্দ কাজ করলে সেও তা দেখবে।’
(সুরা জিলজাল, আয়াত : ৭-৮) অর্থাৎ পরকালে মানুষের সব কাজ দৃশ্যমান হবে এবং তার কাজের অনুরূপ প্রতিদান দেওয়া হবে।
হাদিসে এসেছে, যে ব্যক্তি আল্লাহর পছন্দনীয় কাজ করে আল্লাহ তাকে ভালোবাসেন আর যে ব্যক্তি আল্লাহর অপছন্দনীয় কাজ করে আল্লাহ তার ওপর ক্ষুব্ধ হন।
একইভাবে বলা হয়েছে, যে ব্যক্তি মুসলমানের প্রতি সহজ আচরণ করবে, আল্লাহ তার জন্য দুনিয়া ও আখিরাত সহজ করবেন। আর যে ব্যক্তি কোনো মুমিনের দুনিয়ার একটি কষ্ট দূর করে দেয়, আল্লাহ তার কিয়ামতের কষ্ট দূর করে দেবেন। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি কোনো মুমিনের পার্থিব দুঃখ-কষ্ট দূর করবে, আল্লাহ কিয়ামতে তার দুঃখ-কষ্ট দূর করবেন।
যে ব্যক্তি কোনো সংকটাপন্ন ব্যক্তির সংকট নিরসন করবে, আল্লাহ দুনিয়া ও আখিরাতে তার যাবতীয় সংকট নিরসন করে দেবেন। যে ব্যক্তি কোনো মুসলিমের দোষ-ত্রুটি গোপন রাখে, আল্লাহ দুনিয়া ও আখিরাতে তার দোষ-ত্রুটি গোপন রাখবেন। আর আল্লাহ ততক্ষণ পর্যন্ত বান্দার সাহায্য করে থাকেন, যতক্ষণ পর্যন্ত বান্দা নিজ ভাইয়ের সাহায্যে রত থাকে।’ (মুসলিম ও তিরমিজি)
অন্যের ক্ষতি দুই প্রকার। ক. যা শান্তি ও স্বস্তি নষ্ট করে, খ. যা কোনো প্রকার অপকার করে।