সময়ের জনমাধ্যম

স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি’ চান বেইলি রোড এলাকাবাসী

েইলি রোডে অগ্নিকাণ্ডে ভস্মীভূত ভবনের সামনে মানববন্ধন করেন এলাকাবাসী। ছবি: জাজিরা নিউজ

Last Updated on 7 months by admin

নিউজ ডেস্ক, জাজিরা নিউজঃ ‘স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চাই’ এই স্লোগানে মানববন্ধন করেছেন ঢাকার শান্তিনগর, সিদ্ধেশ্বরী ও বেইলি রোড এলাকার বাসিন্দারা। মানববন্ধন থেকে নগরীর ভবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং বাণিজ্যিক ভবনগুলোর ছাড়পত্র পরীক্ষার দাবি জানিয়েছেন তারা।

সোমবার (৪ মার্চ) বিকেলে বেইলি রোডের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে ভস্মীভূত গ্রিন কোজি কটেজ ভবনের সামনে দাঁড়িয়ে এই মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

বেইলি রোডের বাসিন্দা নারী অধিকার আন্দোলনের প্রবীণ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা রাশিদা কুদ্দুস রানুর সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য দেন- সিপিবির কেন্দ্রীয় নেতা ক্বাফী রতন, কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসরের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তাহমিনা সুলতানা স্বাতী।

এলাকাবাসীর মধ্যে বক্তব্য দেন- উদীচীর জাতীয় পরিষদ সদস্য মঞ্জুর মোর্শেদ মিল্টন, শ্রমিকনেতা হযরত আলী, বেইলি রোড বাসিন্দা রঞ্জনা দেবী সফটওয়্যার প্রকৌশলী কল্লোল বণিক, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি কাজী বোরহান, জাহিদ নগরসহ অনেকে।

বক্তারা বলেন, দায়িত্বে অবহেলার কারণেই এত বড় বিপর্যয় সংঘটিত হয়েছে। এটি একটি কাঠামোগত ও অবহেলাজনিত হত্যাকাণ্ড। বেইলি রোডের ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে নিহত নারী সাংবাদিককে নিয়ে উদ্দেশ্যমূলক তোলপাড় করা হচ্ছে। অথচ ভবনটির মালিক পক্ষ কারা এখনও প্রকাশ করার এবং তাদের আইনের আওতায় আনার কোনো উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে না।

তারা আরও বলেন, বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজের মত ঝুঁকিপূর্ণ প্রচুর ভবন রয়েছে এর আশপাশে ও সারা ঢাকাজুড়ে। ভবনগুলো নজরাদারিতে আনা, সংশ্লিষ্ট ভবনগুলোর ছাড়পত্র পরীক্ষা ও জনসাধারণের স্বাভাবিক মৃত্যুর নিশ্চয়তা বিধান করার দায়িত্ব সরকারের।

বক্তাদের মতে, কোনো একটি ঘটনা ঘটার পর সবাই মিলে কয়েকদিনের জন্য সোচ্চার হওয়া ও কিছু তৎপরতা চলে। আজ পর্যন্ত নিমতলী, চুড়িহাট্টাসহ কোনো ঘটনারই বিচার হয়নি। ফলে এ ধরনের মৃত্যুকূপের পুনরাবৃত্তি ঘটে চলেছে।

সারা বছর কাজ না করা রাজউক, কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদফতরসহ সরকারি সংস্থাগুলো এখন অতি তৎপরতা শুরু করেছে। তারা পাঁচ বছরের নিষ্ক্রিয়তা এক সপ্তাহে ঢাকতে চাচ্ছে। যার ফলে ছোটখাটো ব্যবসায়ীরা হয়রানির শিকার হচ্ছে,’ অভিযোগ এলাকাবাসীর।

বক্তারা দাবি জানান, বাণিজ্যিক ও রেস্তোরাঁ ভবনগুলোর বিদ্যমান অনিরাপদ অবস্থাকে শুধরে নিতে অন্তত ছয়মাস মেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করে তা কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। এত মানুষের জীবনের বিনিময়ে শহরের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম নিরাপদ জীবন লাভ করুক এটাই সবার চাওয়া। এর ব্যত্যয় ঘটিয়ে এই মর্মান্তিক ঘটনা যেন কতিপয়ের উপরি রোজগারের উপলক্ষ না হয়।

বক্তারা অবিলম্বে সব ভবন তদারকির দাবি জানান। তারা বলেন, এখনই দেখতে হবে এসব ভবনে নিয়মনীতি অনুসরণ করা হয়েছে কি না। নাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে এবং যারা ঘুষ খেয়ে দায়িত্বে অবহেলা করেছে তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে।

উল্লেখ্য, গত ২৯ ফেব্রুয়ারি রাত ৯টা ৫০ মিনিটে বেইলি রোডের গ্রিন কোজি কটেজ ভবনে ভয়াবহ আগুনের ঘটনা ঘটে। ফায়ার সার্ভিসের ১৩টি ইউনিটের ২ ঘণ্টার চেষ্টায় রাত ১১টা ৫০ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

এই অগ্নিকাণ্ডে এখন পর্যন্ত ৪৬ জনের মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। আর আশঙ্কাজনক অবস্থায় পাঁচজন হাসপাতালে ভর্তি আছেন।