সময়ের জনমাধ্যম

প্রস্তাবিত সাইবার আইন মানবাধিকার লঙ্ঘনের হাতিয়ার: টিআইবি

Last Updated on 1 year by zajira news

নিউজ ডেস্ক, জাজিরা নিউজ: প্রস্তাবিত সাইবার নিরাপত্তা বিধিমালা, ২০২৪ মতপ্রকাশ, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের হাতিয়ার উল্লেখ করে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেছেন, সাইবার নিরাপত্তায় তৈরি খসড়া বিধিমালায় অনেক অসংগতি রয়েছে। আইনে ফাঁক থাকলে বিধিমালা ভালো হতে পারে না।

বৃহস্পতিবার (১৩ জুন) রাজধানীর মাইডাস সেন্টারে ‘প্রস্তাবিত সাইবার নিরাপত্তা বিধিমালা ২০২৪: পর্যালোচনা ও সুপারিশ’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলন এসব কথা বলেন ইফতেখারুজ্জামান।

তিনি বলেন, প্রথমে সাইবার নিরাপত্তা আইনে বিদ্যমান ত্রুটিগুলো সংশোধন করতে হবে। এরপর সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে বিধিমালাকে ঢেলে সাজাতে হবে।

বিধিমালাটি প্রণয়নের আগে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া হয়েছে, এমন প্রতিফলন খসড়ায় দেখা যাচ্ছে না উল্লেখ করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘সাইবার নিরাপত্তা আইনটি মূলত ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনেরই পরিবর্তিত মোড়ক এবং সমভাবে নিবর্তনমূলক। তথ্য প্রযুক্তিনির্ভর মাধ্যমে তথ্য ও মত-প্রকাশের যে অবারিত সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে, তা নিয়ন্ত্রণের অন্যতম হাতিয়ার হিসেবেই ডিএসএ’র অবিকল সিএসএ প্রণীত হয়েছে। প্রযুক্তি ব্যবহার করে মতপ্রকাশের যে সুযোগ প্রসারিত হয়েছে, (এই আইন দিয়ে) তা নিয়ন্ত্রণ করার উদ্যোগ হিসেবে দেখতে পাচ্ছি।’

তিনি বলেন, ‘আইনে প্রচুর পরিমাণ অস্পষ্টতা আছে। এতে জনগণের স্বাধীনতা আরও ব্যাপক হারে ক্ষুণ্ণ হওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। খসড়া বিধিমালা তৈরিতে বিশেষজ্ঞদের মতামত নেওয়া হয়েছে, এমন প্রতিফলন দেখা যায়নি।

সাইবার নিরাপত্তা আইন ও প্রস্তাবিত বিধিমালাটি অধিকতর অধিকারভিত্তিক, মতপ্রকাশ, গণতন্ত্র-সহায়ক ও চিন্তার স্বাধীনতা নিশ্চিতের অন্যতম সহায়ক অনুষঙ্গে পরিণত করতে আর্টিকেল নাইনটিন ও টিআইবি বেশ কিছু সুপারিশ করেছে। এগুলো মধ্যে রয়েছে-সাইবার নিরাপত্তা বিধিমালা, ২০২৪ চূড়ান্ত করার আগে কার্যকর অংশগ্রহণ প্রক্রিয়ায় অংশীজনদের মতামতের ভিত্তিতে ‘সাইবার নিরাপত্তা আইন, ২০২৩’ ঢেলে সাজাতে হবে। বিধিমালাটি সীমিত অর্থনৈতিক, প্রযুক্তিগত সক্ষমতা ও মানব সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য পুনর্বিবেচনা করতে হবে। সাইবার নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ন্যূনতম ব্যক্তিগত, শিক্ষাগত ও প্রযুক্তিগত যোগ্যতা সুনির্দিষ্টকরণ; দেশের ভেতর ও বাহির থেকে ডিজিটাল সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য বিধিমালায় আইনি কার্যবিধি অন্তর্ভুক্ত করা; জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা এজেন্সির একটি কার্যকর ও অর্থপূর্ণ সাংগঠনিক-কাঠামো থাকতে হবে।

এছাড়া নতুন ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাব প্রতিষ্ঠা না করে বর্তমান ফরেনসিক ল্যাবটিকে আধুনিক যন্ত্রপাতি, সফটওয়্যার ও লোকবল দিয়ে সমৃদ্ধ করতে হবে। এই অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে উপযুক্ত সময়ে নতুন ফরেনসিক ল্যাব স্থাপন করা যেতে পারে; জাতীয় সাইবার নিরাপত্তা এজেন্সি, জাতীয় সাইবার ইনসিডেন্ট রেসপন্স টিম ও ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাবের কার্যক্রমে যাতে নাগরিকদের মানবাধিকার ক্ষুন্ন না হয়, সে সংক্রান্ত সুরক্ষা বিধান প্রস্তাবিত বিধিমালায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।