সময়ের জনমাধ্যম

৫০ লাখে বিসিএস পাসের প্রশ্নফাঁস প্যাকেজ

ছবি: প্রতিকি

Last Updated on 12 months by zajira news

নিউজ ডেস্ক, জাজিরা নিউজ: বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) গত ১২ বছরে বিসিএসসহ ৩০টি নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নফাঁসের অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগের ভিত্তিতে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনা করে সিআইডি। প্রশ্নফাঁসের জড়িত অভিযোগে ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। এবার তাদের কাছ থেকে উঠে এসেছে চাঞ্চল্যকর কিছু তথ্য।

সিআইডি জানায়, চক্রের সদস্যদের হোয়াটসঅ্যাপ কথোপকথন থেকে প্রশ্ন ফাঁস সম্পর্কে বেশ কিছু তথ্য মিলেছে। এ ছাড়া মিলেছে বেশ কিছু ডিজিটাল আলামত। তাদের কাছ থেকে দুটি বিসিএস পরীক্ষার শত শত প্রবেশপত্রের ফটোকপি পাওয়া গেছে। তবে কোন দুটি বিসিএস পরীক্ষার প্রবেশপত্র এ বিষয়ে কিছু জানায়নি সিআইডি।

গ্রেপ্তার ১৭ জন দুটি গ্রুপে কাজ করতেন। চুক্তি অনুযায়ী একজন প্রার্থীর কাছে প্রিলিমিনারি পরীক্ষার আগে তারা এক থেকে দুই লাখ টাকা নিতেন। একইভাবে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার আগে এক থেকে দুই লাখ টাকা দিতে হতো। নিয়োগ চূড়ান্ত হয়ে গেলে দিতে হতো বাকি টাকা। সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে ১৮ থেকে ২০ লাখ টাকা নিতেন তারা। আর বিসিএসের জন্য চুক্তি হতো ৪৫ থেকে ৫০ লাখ টাকায়।

চক্রটি এক যুগ ধরে বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস করে আসছে। এর সঙ্গে বিজি প্রেসকেন্দ্রিক একটি দল জড়িত বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রশ্নপত্র হোয়াটসঅ্যাপ বা মেসেঞ্জারে দেয়া হতো না; বরং পরীক্ষার আগের রাতে চুক্তিবদ্ধ পরীক্ষার্থীদের নেয়া হতো গোপন আস্তানায়।

পিএসসির প্রশ্ন ফাঁসে জড়িত অভিযোগে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সাবেক গাড়িচালক সৈয়দ আবেদ আলীসহ ১৭ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তাদের মধ্যে রয়েছেন পিএসসির উপপরিচালক আবু জাফর, উপপরিচালক জাহাঙ্গীর আলম, সহকারী পরিচালক আলমগীর কবির।

এছাড়াও ডেসপাস রাইডার খলিলুর রহমান, অফিস সহায়ক সাজেদুল ইসলাম, অডিটর প্রিয়নাথ রায়, সেনাবাহিনীর সাবেক সদস্য নোমান সিদ্দিকী, ঢাবির প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগের রাজনীতি করা ব্যবসায়ী আবু সোলায়মান মো. সোহেল, ব্যবসায়ী জাহিদুল ইসলাম, ঢাকার ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অফিসের কর্মী মামুনুর রশীদ, ব্যবসায়ী সাখাওয়াত হোসেন ও তাঁর ভাই সায়েম হোসেন, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির ছাত্র লিটন সরকার, নারায়ণগঞ্জ আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের নিরাপত্তাকর্মী শাহাদাত হোসেন, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের টেকনিশিয়ান নিয়ামুন হাসান ও আবেদ আলীর ছেলে ছাত্রলীগ নেতা সৈয়দ সোহানুর রহমান সিয়াম।

ইতোমধ্যে প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের (বিপিএসসি) ঊর্ধ্বতন তিন কর্মকর্তাসহ গ্রেপ্তার ৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে পুলিশ। এছাড়া এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্তদের সাময়িক বরখাস্তও করেছে পিএসসি। তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত করতে দুর্নীতি দমন কমিশনকে চিঠি দিয়েছে সংস্থাটি।