Last Updated on 1 month by zajira news
জেলা প্রতিনিধি, জাজিরা নিউজ: বান্দরবান , রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি ও এই তিন পার্বত্য জেলায় ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত পর্যটকদের ভ্রমণ না করার পরামর্শ দিয়েছে প্রশাসন।
আজ বিকেলে (০৬ অক্টোম্বর) তিন জেলার জেলা প্রশাসকেরা এই নির্দেশনা জারি করেন। আগামী ৮ অক্টোবর থেকে এই নিষেধাজ্ঞা কার্যকর হবে।
আজ বিকেল চারটার দিকে রাঙামাটি জেলা প্রশাসন থেকে গণমাধ্যমে পাঠানো এক খুদে বার্তায় উল্লেখ করা হয়, অনিবার্য কারণবশত পর্যটকদের ৮ থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত রাঙামাটি পার্বত্য জেলায় ভ্রমণ থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ করা হলো। এর আগে ৩ অক্টোবর রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নের সাজেকে পর্যটকদের না যেতে পরামর্শ দিয়েছিল জেলা প্রশাসন।
একই রকম এক বার্তায় খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. সহিদুজ্জামানও ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার কথা জানান। আজ বিকেলে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বার্তায় বলা হয়, চলমান পরিস্থিতির কারণে ৮ থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত পর্যটকদের খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায় ভ্রমণ থেকে বিরত থাকার জন্য বলা হচ্ছে। একই নির্দেশনা জারি করা হয় বান্দরবান জেলা প্রশাসন থেকেও।
ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা এমন সময়ে জারি করা হলো, যখন তিন পার্বত্য জেলায় নিরাপত্তার কারণ দেখিয়ে বৌদ্ধভিক্ষুরা কঠিন চীবরদান উৎসব না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। চলতি মাসের মাঝামাঝি থেকে কঠিন চীবরদান শুরু হওয়ার কথা ছিল।
বান্দরবানের জেলা প্রশাসক মোজাহিদ উদ্দিনের কাছে পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি কেবল নির্দেশনার কথা জানান। তিনি বলেন, অনিবার্য কারণে পর্যটকদের ভ্রমণ না করতে বলা হয়েছে। এই নির্দেশনা ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত বহাল থাকবে। এর বাইরে আর কোনো কিছু বলা সম্ভব নয়।
পর্যটনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট পরিবহনমালিক-শ্রমিকেরা বলেছেন, চলতি মাস থেকে রাঙামাটি ও খাগড়াছড়িতে হানাহানির ঘটনার পরও বান্দরবানে পর্যটকেরা এসেছেন। পর্যটকের সংখ্যা বাড়ছিল ধীরে ধীরে। চাঁদের গাড়ির লাইনম্যান ফখরুল ইসলাম জানিয়েছেন, এমন সময়ে আবার নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হলো, যখন পর্যটনশিল্প চাঙা হয়ে উঠছিল।
নতুন সশস্ত্র সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট বা কেএনএফের তৎপরতার কারণে ২০২২ সালের ২০ অক্টোবর বান্দরবানের রুমা, থানচি ও রোয়াংছড়ির দুর্গম এলাকায় প্রথম পর্যটকদের ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। পরে রুমা ও থানচি থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হলেও রোয়াংছড়িতে বহাল ছিল। এরপর খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে দুই দফা সহিংসতার কারণে রাঙামাটির সাজেক ভ্রমণে নিরুৎসাহিত করেছিল প্রশাসন।
গত ১৮ সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ি শহরে মোটরসাইকেল চুরির অভিযোগে গণপিটুনিতে এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটি জেলায় পাহাড়ি-বাঙালি সংঘাত ছড়িয়ে পড়ে। গত মঙ্গলবার দুপুরে খাগড়াছড়িতে এক স্কুলশিক্ষককে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ ওঠে। এ ঘটনার পর সহিংসতা ঠেকাতে পাহাড়ি ও বাঙালিদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন। পরদিন বুধবার বেলা তিনটার দিকে পৌর এলাকা থেকে ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার করা হয়। সূত্র: প্রথম আলো