Last Updated on 4 days by zajira news
নিউজ ডেস্ক, জাজিরা নিউজ: ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে চলাচলকারী গাড়ি গতিসীমা অতিক্রম করলে ভিডিও নজরদারির মাধ্যমে আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি থেকে মামলা দেওয়া হবে।
শনিবার (০৮ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার কুড়িলে পরিচালনাকারী কোম্পানি ফার্স্ট ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানায়।
কোম্পানির যান চলাচল, সুরক্ষা ও নিরাপত্তা বিভাগের পরিচালক হাসিব হাসান খান বলেন, “আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি ১০০ কিলোমিটারের বেশি গতিসীমা অতিক্রম করলে মামলা করার জন্য পুলিশকে আমরা বলব। মামলা হবে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে।”
তিনি বলেন, “যেহেতু ভিডিও ক্যামেরাগুলো আমাদের কেন্দ্রীয় কমান্ড সেন্টারে, এখানে তো সার্বক্ষণিক পুলিশ কর্মকর্তাদের উপস্থিত থাকা সম্ভব না, সেজন্য আমরা একটা কেবলের মাধ্যমে পুলিশ দপ্তরে সংযোগ দেব, যাতে তারা সেখানে বসেই তদারকি করতে পারে।”
তিনি বলেন, “২০২৩ সালের ২ সেপ্টেম্বর ফার্স্ট ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে যাত্রা শুরু করে। এরপর থেকে আমরা প্রধানত পাঁচটি সমস্যা মোকাবেলা করেছি। এগুলো হল-ওভারহিট গাড়ি, চাকা পাংচার, জ্বালানি শেষ হয়ে যাওয়া, বিমানবন্দরের যাত্রী সেবা, দুর্ঘটনা ঘটা।”
সুরক্ষা পরিচালক হাসিব জানান, কেবল জানুয়ারিতেই চলাচল করা অবস্থায় ৯০টি গাড়ির ইঞ্জিনের সমস্যা দেখা দেয়। এছাড়া টায়ার বার্স্টের ঘটনা ঘটে ৫১টি, আর জ্বালানি ফুরিয়ে যাওয়ার ২০টি ঘটনা ঘটে। এর বাইরে এ পর্যন্ত বড় ধরনের ১০টি দুর্ঘটনা ঘটেছে বলে জানান তিনি।
হাসিব হাসান বলেন, “মামলার তথ্যের উপর ভিত্তি করে একই গাড়ি তিনবারের বেশি গতিসীমা লঙ্ঘন করলে ভবিষ্যতে ওই গাড়িকে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েতে চলাচল নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হবে।”
সংবাদ সম্মেলনে বেশ কিছু দুর্ঘটনা এবং উদ্ধারের ভিডিও চিত্রও প্রদর্শন করা হয়৷ এছাড়া চলাচলকারী গাড়ির জন্য নির্দেশনাও তুলে ধরা হয়-
১। সুশৃঙ্খল ট্রাফিক কার্যক্রম বজায় রাখতে সবসময় নির্ধারিত লেনের মধ্যে গাড়ি চলাচল করতে হবে।
২। সুনির্দিষ্ট কারণ ছাড়া লেইন পরিবর্তন করা হলে ওই গাড়ির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
৩। এক্সপ্রেসওয়েতে গাড়ি থামানো বা পার্কিং নিষেধ।
৪। চলাচলের সময় গাড়ি বা মেশিনারিজ ত্রুটি বা অন্য যেকোনো সমস্যা অনুভব করলে জরুরি লেইনে যেতে হবে এবং দ্রুত এক্সপ্রেসওয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।
৫। টোল প্লাজা, টোল সংগ্রহের বুথ, লেইন এবং এক্সপ্রেসওয়ের অবকাঠামোগত যেকোনো ক্ষতির জন্য যানবাহনের মালিকদের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
৬। উন্মুক্ত যান, অতিরিক্ত কালো ধোঁয়া নির্গত করে-এমন যানবাহন, যাত্রীরা দাঁড়িয়ে যাতায়াত করে-এমন খোলা যানবাহন এক্সপ্রেসওয়েতে চলাচল করতে পারবে না।
৭। এক্সপ্রেসওয়েতে যাত্রী নামানো সম্পূর্ণ নিষেধ। কোনো যাত্রীবাহী বাস অথবা অন্য কোনো যানবাহন যদি এক্সপ্রেসওয়েতে যাত্রী নামায়, তাহলে ওই গাড়ির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রতিটি যানবাহনের সঙ্গে আরেকটির নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
৮। যানবাহন থেকে যেকোনো জিনিসপত্র (যেমন টোল টিকেট, টিস্যু পেপার) এক্সপ্রেসওয়েতে ছুড়ে ফেলা নিষেধ।
৯। মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তির এক্সপ্রেসওয়েতে গাড়ি চালানো সম্পূর্ণ নিষেধ এবং গাড়ি ড্রাইভ করার সময় মোবাইল ফোন ব্যবহার করা যাবে না।
১০। অ্যালকোহল, ড্রাগ বা অন্য কোনও নেশাদ্রব্য বা ক্ষতিকারক কিছু গ্রহণ করে গাড়ি চালানো যাবে না।
১১। পণ্যবাহী ট্রাক, পিকআপে যথাযথভাবে পণ্য ঢেকে ও বেঁধে টোল প্লাজার লেইনে প্রবেশ করতে হবে।
১২। নির্মাণ কাজে নিয়োজিত কোনো ধরনের ভারী ও ধীরগতির যানবাহনের এক্সপ্রেসওয়েতে প্রবেশের অনুমতি নেই।
১৩। দুই বা তিন চাকার গাড়ির এক্সপ্রেসওয়েতে প্রবেশের অনুমতি নেই।
১৪। একটি যানবাহনকে আরেক যানের সঙ্গে বেঁধে টোল লেইনে প্রবেশের অনুমতি নেই।
১৫। খোলা ট্রাক-পিকআপে মানুষ ভরে টোল লেইনে প্রবেশ করা যাবে না।
১৬। টোল লেইনে প্রবেশের সময় যানবাহনের গতি ঘণ্টায় ২০ কিলোমিটারের নিচে থাকতে হবে।