Last Updated on 12 hours by zajira news
আন্তর্জাতিক ডেস্ক, জাজিরা নিউজ :গাজায় হামাসের সাথে ইসরায়েলের যুদ্ধবিরতি চুক্তি কার্যকরের পরও পরিস্থিতি ক্রমশ উত্তেজনাপূর্ণ হয়ে উঠছে।
গাজার সরকারি মিডিয়া অফিস অভিযোগ করেছে, গত ১০ অক্টোবর যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর থেকে ইসরায়েল কমপক্ষে ৪৭ বার চুক্তি লঙ্ঘন করেছে। এই সহিংসতায় এ পর্যন্ত ৩৮ জন ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১৪৩ জন আহত হয়েছেন বলে জানানো হয়েছে।
গতকাল রবিবার (১৯ অক্টােম্বর) প্রকাশিত এক বিবৃতিতে গাজার মিডিয়া অফিস জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় হওয়া এই চুক্তির লঙ্ঘনগুলোর মধ্যে রয়েছে বেসামরিকদের ওপর সরাসরি গুলি চালানো, ইচ্ছাকৃত গোলাবর্ষণ এবং কয়েকজন বেসামরিক নাগরিককে গ্রেফতার করার মতো ঘটনা।
গাজা কর্তৃপক্ষ জাতিসংঘ এবং চুক্তির মধ্যস্থতাকারী পক্ষগুলোর কাছে অবিলম্বে হস্তক্ষেপ করে ইসরায়েলকে তাদের আগ্রাসন বন্ধ করতে এবং নিরস্ত্র বেসামরিকদের রক্ষা করতে বাধ্য করার আহ্বান জানিয়েছে।
রবিবার গাজা উপত্যকার বিভিন্ন এলাকায় নতুন করে ইসরায়েলি হামলার খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে দক্ষিণে রাফা এবং উত্তরে জাবালিয়া উল্লেখযোগ্য। এই হামলায় কমপক্ষে দু’জন নিহত এবং আরও বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।
যদিও চুক্তিতে গাজায় মানবিক সহায়তার প্রবেশাধিকার দেওয়ার কথা ছিল। তবে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু জানিয়েছেন, রাফা ক্রসিং বন্ধ থাকবে যতক্ষণ না হামাস গাজায় থাকা মৃত বন্দিদের সমস্ত দেহ হস্তান্তর করছে। এই ক্রসিংটি গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশের জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পথ।
অন্যদিকে, নেতানিয়াহুর কার্যালয় নিশ্চিত করেছে যে তার মন্ত্রিসভা হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের অভিযোগ আনার পরই তিনি সেনাবাহিনীকে গাজায় জোরালো পদক্ষেপ নিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
ইসরায়েলি সামরিক মুখপাত্র আভিচাই আদরাই দাবি করেছেন, সামরিক বাহিনীর পদক্ষেপগুলো ছিল যুদ্ধবিরতির চরম লঙ্ঘনের জবাব। তিনি আরও হুমকি দিয়েছেন যে ইসরায়েল দৃঢ় ও শক্তিশালীভাবে জবাব দেবে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী হামাসের বিরুদ্ধে গাজার ভেতরে তাদের বাহিনীর ওপর রকেট ও স্নাইপার হামলা চালানোর অভিযোগ এনেছে।
তবে, হামাস এই হামলায় জড়িত থাকার কথা অস্বীকার করে যুদ্ধবিরতির মেনে চলার পূর্ণ অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেছে। হামাস এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, রাফা এলাকায় কোনো ঘটনা বা সংঘর্ষ হয়েছে বলে তাদের জানা নেই।
ইসরায়েলের এই সাম্প্রতিক হামলাগুলো ভঙ্গুর যুদ্ধবিরতিকে হুমকির মুখে ফেলেছে। এই যুদ্ধবিরতির ফলেই গাজায় সীমিত মানবিক সহায়তা প্রবেশ করতে পারছিল।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলের দুই বছরের যুদ্ধে এ পর্যন্ত ৬৮ হাজার ১৫৯ জন মানুষ নিহত এবং ১ লাখ ৭০ হাজার ২০৩ জন আহত হয়েছেন। এই যুদ্ধে ২০ লক্ষেরও বেশি মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। গাজার বেশিরভাগ অবকাঠামো ধ্বংস হয়েছে এবং মানবিক সহায়তার ওপর নির্ভরশীল প্রায় পুরো জনসংখ্যাই।