Last Updated on 2 hours by zajira news
আন্তর্জাতিক ডেস্ক, জাজিরা নিউজ: মালয়েশিয়ায় উপকূলের কাছে অভিবাসীবাহী নৌকাডুবির ঘটনায় সবশেষ ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন শতাধিক লোক।
রয়টার্স জানিয়েছে, নৌকা ডুবে নিখোঁজদের বেশিরভাগই মিয়ানমারের নির্যাতিত রোহিঙ্গা সম্প্রদায়ের লোক। তাদের খুঁজতে সোমবার (১০ নভেম্বর) আন্দামান সাগরে মালয়েশিয়ান উপকূলীয় সামুদ্রিক টহলদল অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে।
দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় ল্যাংকাউই দ্বীপের পুলিশ প্রধান খাইরুল আজহার নুরুদ্দিন বলেন, ‘দুই সপ্তাহ আগে শত শত রোহিঙ্গা মালয়েশিয়ার দিকে একটি জাহাজে উঠেছিল। বৃহস্পতিবার তাদের দুটি দলে ভাগ করে দুটি পৃথক ছোট নৌকায় পাঠানো হয়েছিল। ঘটনাঘল থেকে ২৫৫.৭ নটিক্যাল মাইলজুড়ে অনুসন্ধান অভিযান চলছে।
মালয়েশিয়ার কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ল্যাংকাউই দ্বীপের কাছে ডুবে যাওয়া নৌকাটিতে প্রায় ৭০ জন যাত্রী ছিলেন। অন্যদিকে ২৩০ জন যাত্রী বহনকারী অন্য নৌকাটি সম্পর্কে এখনো কিছু জানা যায়নি। ইতোমধ্যে কর্তৃপক্ষ ১৩ জন জীবিত এবং সাত জনের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে।
থাইল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চলীয় সাতুন প্রদেশের গভর্নর সাক্রা কপিলাকার্ন রয়টার্সকে বলেন, ‘থাইল্যান্ডে দুটি রোহিঙ্গা মেয়েসহ চারটি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। নৌবাহিনী এবং মেরিন পুলিশ অতিরিক্ত অভিযান যালাচ্ছে।’
জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থার তথ্য অনুসারে, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে নভেম্বরের শুরুর দিকে ৫ হাজার ১০০ জনেরও বেশি রোহিঙ্গা নৌকায় করে মিয়ানমার ও বাংলাদেশ ছেড়ে পালিয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ৬০০ জনের মৃত্যু বা নিখোঁজ হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।
সমুদ্রযাত্রাগুলো নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণকারী ক্রিস লেওয়া বলেন, ‘অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে রোহিঙ্গা বহনকারী একাধিক নৌকা বাংলাদেশের কক্সবাজার ছেড়ে যায়। কক্সবাজার থেকে মালয়েশিয়ার জলসীমায় পৌঁছাতে ৭-১০ দিন সময় লাগে।
তিনি আরও বলেন, ‘রাখাইন রাজ্যের অভ্যন্তরীণ এলাকা থেকে আসা রোহিঙ্গাদের তুলে নেওয়ার জন্য নৌকাগুলো মিয়ানমারের জলসীমায়ও থেমে থাকতে পারে। কিন্তু গৃহযুদ্ধের কারণে বাস্তুচ্যুতি সেখানে আরও খারাপ হয়েছে।’
কক্সবাজার ছেড়ে যাওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে ছিলেন মোহাম্মদ ইব্রাহিম (২৯)। তার বড় ভাই ইউনুসের মতে ২৬ অক্টোবর টহসহ নৌকায় তগপড মালয়েশিয়া গিয়েছিলেন।
ভাইয়ের অবস্থান খুঁজে বের করার জন্য উন্মুখ ইউনুস রয়টার্সকে বলেন, ‘সে কাউকে কিছু না বলে মালয়েশিয়া চলে গেছে। আমি জানলে তাকে কখনোই যেতে দিতাম না। তার স্ত্রী, তিন সন্তান – তিন বছরের একটি ছেলে এবং ১০ মাস বয়সী যমজ মেয়ে আছে। তাদের কি হবে?’
দীর্ঘদিন ধরে নির্যাতনের শিকার রোহিঙ্গাদের কাছে মুসলিম প্রধান দেশ মালয়েশিয়া একটি পছন্দের আশ্রয়স্থল। যদিও দেশটি শরণার্থী মর্যাদা স্বীকার করে না। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে অভিযানের অংশ হিসেবে তারা অনেক নৌকা ফিরিয়ে দিয়েছে এবং রোহিঙ্গাদের আটক করেছে।
মালয়েশিয়ার সমুদ্র সংস্থার আঞ্চলিক প্রধান বলেছেন, জীবিতদের সন্ধানে থাইল্যান্ড এবং মালয়েশিয়া উভয় পক্ষই বিমান বাহিনীর সহায়তা নিচ্ছে। এটি আমাদের এবং আমাদের সমুদ্র সম্পদের জন্য সহজ হবে। অনুসন্ধান অভিযান প্রয়োজনে সাত দিন স্থায়ী করা হবে।
সোমবার (১০ নভেম্বর) মালয়েশিয়া পুলিশ জানিয়েছে, উদ্ধারকৃতদের অভিবাসন অপরাধের তদন্তের জন্য আটক করা হয়েছে।


