Last Updated on 6 days by zajira news
আন্তর্জাতিক ডেস্ক, জাজিরা নিউজ: বাংলার মাটিতে বাবরি মসজিদ নির্মাণের ঘোষণার পরই পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলার ভরতপুর আসনের বিধায়ক হুমায়ুন কবীরকে সাসপেন্ড করেছে শাসকদল তৃণমূল।
তারপরও গত ৬ ডিসেম্বর বেলডাঙায় ফিতা কেটে বাবরি মসজিদের ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন করেন হুমায়ুন। সেই সভাস্থলে বাংলার বহু মানুষের সমাগম হয়।
সে দিনই স্টিলের তৈরি ১১টি বড় দানবাক্স রাখা হয় সভাস্থলে। মসজিদ নির্মাণের জন্য সকলের কাছে অর্থ সাহায্যের আবেদন করেন হুমায়ুন। তারপর থেকে দান আসছে। দান পাওয়া সেই অর্থ হুমায়ুন কবীরের বাড়িতেই গণনা হচ্ছে।
জানা গেছে, রোববার রাতে টাকা ভর্তি ১১টি ট্রাঙ্ক আনা হয় তার বাড়িতে। সিসি টিভির নজরদারীতে ৩০ জন মিলে টাকা গুনছেন। দায়িত্বে রয়েছেন ‘পশ্চিমবঙ্গ ইসলামিক ফাউন্ডেশন অব ইন্ডিয়া’র আলেম-উলামরা। নগদ অর্থ গুনতে মেশিনও ব্যবহার করা হচ্ছে।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সকাল পর্যন্ত ৭টি ট্রাঙ্ক খোলা হয়েছে, তা থেকে ৩৭ লাখ রুপি সংগ্রহ হয়েছে। সব গণনা শেষ হতে বিকেল পর্যন্ত সময় লাগবে বলে জানিয়েছেন হুমায়ুন। এছাড়া ইচ্ছুকরা অনলাইনে হুমায়ুনের ব্যাঙ্কে ৯৩ লাখ রুপি ট্রান্সফার করেছেন। সব মিলিয়ে মসজিদ নির্মাণের জন্য মোট ১ কোটি ১০ লাখ রুপি দান এসেছে। হুমায়ুনের দাবি, ব্যাঙ্কে ট্রান্সফার লাগাতার চলছেই।
৬ ডিসেম্বর অযোধ্যায় বাবরি মসজিদ ধ্বংসের দিনই মুর্শিদাবাদের রেজিনগরে বাবরি মসজিদের ভিত্তি প্রস্থর স্থাপন করেন হুমায়ুন কবীর। সেইদিনই তিনি জানিয়েছেন, বাবরি মসজিদ তৈরি করতে খরচ হবে আনুমানিক ৩০০ কোটি রুপি। তবে অর্থ নিয়ে তিনি চিন্তিত নন, কারণ নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি সেইদিনই ৮০ কোটি রুপি দান করবেন বলে জানিয়েছেন। আরও বহু মানুষ প্রতিনিয়ত অর্থ দান করছেন।
নগদ অর্থ ছাড়াও সাধারণ মানুষ মসজিদ নির্মাণের জন্য ইট ও বালু দান করছেন। স্থানীয়দের তথ্য অনুযায়ী, কয়েক লাখ ইট এবং কয়েক হাজার বালুর বস্তা মসজিদ নির্মাণের জমিতে পৌঁছেছে। ফলে তৃণমূলের সাসপেন্ড হওয়া নেতা হুমায়ুনের বাবরি মসজিদ তৈরির আগেই তার জনপ্রিয়তা বোঝা যাচ্ছে দানের বহর দেখে।
গত ৪ ডিসেম্বর পশ্চিমবঙ্গে ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধনের (এসআইআর) বিরুদ্ধে সভা করতে মুর্শিদাবাদে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বহরমপুরের সেই সভাস্থলে উপস্থিত ছিলেন হুমায়ুনও। কিন্তু সেদিনই জানানো হয়, হুমায়ুনকে দল সাসপেন্ড করেছে। ক্ষুব্ধ হুমায়ুন সভাস্থল থেকে বের হয়ে যান এবং আগামী ২২ ডিসেম্বর নতুন দল গড়ার হুঁশিয়ারি দেন।
তিনি জানিয়েছেন, ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মাটিতে বাবরি মসজিদ তিনি তৈরি করবেনই। এবং আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনে তার নতুন দল রাজ্যের ৩০০ আসনের মধ্যে ১৩৫টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে। সমস্ত মুসলিম ভোটারদের একত্র হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর বিশ্ব হিন্দু পরিষদ এবং সহযোগী সংগঠনগুলো ভারতের উত্তরপ্রদেশের অযোধ্যায় ষোড়শ শতাব্দীর বাবরি মসজিদ ধ্বংস করেছিল। এরপর দীর্ঘকাল কেটে গেছে। ওই স্থানে আদালতের প্রস্তাবিত রায়ে রামমন্দির হলেও মসজিদের কাজ এখনও শুরু হয়নি। সুপ্রিম কোর্টের রায় অনুযায়ী, অযোধ্যায় ধ্বংসকৃত মসজিদ থেকে কিছুটা দূরে বাবরি মসজিদ নির্মাণের কথা। কিন্তু এখন পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়নি সেই কাজ।


