Last Updated on 5 months by zajira news
বিনোদন ডেস্ক, জাজিরা নিউজ: গত মঙ্গলবার গভীর রাতে আবার সাইফ আলী খানের বাসার বাইরে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে নিয়ে গিয়েছিল মুম্বাই পুলিশ। জানা গেছে, হামলার ঘটনাটি ‘রিক্রিয়েট’ করেছে ।
গতকাল বুধবারও পুলিশের একটা দল সাইফের অ্যাপার্টমেন্টে গেছে। দুই দিনের তদন্তে একটা প্রাথমিক প্রতিবেদনও প্রকাশ করেছে পুলিশ।
মঙ্গলবার রাতে মুম্বাই পুলিশের একটা দল অভিযুক্ত শরিফুল ইসলামকে সাইফ-কারিনার অ্যাপার্টমেন্ট সদগুরু শরণের ৫০০ মিটার দূরে নিয়ে গিয়েছিল। সেখানে ৫ মিনিট থাকার পর অভিযুক্ত ব্যক্তিকে নিয়ে পুলিশ বান্দ্রা পুলিশ স্টেশনে ফিরে এসেছিল।
পুলিশ জানায়, সাইফের ওপর হামলাকারী বাথরুমের জানালা দিয়ে তাঁর বাসায় ঢুকেছিলেন। আর সাইফের ওপর হামলার পর অভিযুক্ত ব্যক্তি সেই পথ ধরে পালিয়ে গিয়েছিল। সাইফ-কারিনার ছোট ছেলে জাহাঙ্গীরের ঘর থেকে পুলিশ অভিযুক্ত ব্যক্তির একটা শীত টুপি উদ্ধার করেছে। টুপিতে পাওয়া চুল ডিএনএ পরীক্ষার জন্য মুম্বাইয়ের স্কুল অব মেডিসিনে পাঠানো হয়েছিল।
অভিযুক্ত ব্যক্তির সঙ্গে ডিএনএ রিপোর্ট মিলেছে বলে পুলিশ সূত্র জানিয়েছে। এর পাশাপাশি হামলাকারীর জামায় লেগে থাকা রক্তের দাগ সাইফের কি না, তা পরীক্ষার জন্য ফরেনসিক ল্যাবে পাঠানো হয়েছে।
সাইফের অ্যাপার্টমেন্টের যে ঘরে ঘটনাটি ঘটেছিল, সেখান থেকে ১৯টি ফিঙ্গারপ্রিন্ট পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। আর ফিঙ্গারপ্রিন্টগুলো অভিযুক্ত ব্যক্তির সঙ্গে মিলে গেছে। সাইফ-কারিনার আবাসনের দুজন নিরাপত্তারক্ষী ঘুমিয়ে ছিলেন। আর এই বিলাসবহুল আবাসনের মূল ফটক ও গলিতে সিসিটিভি না থাকার সুযোগ নিয়েছিলেন হামলাকারী। কোনো রকম আওয়াজ যাতে না হয়, তাই পায়ের স্যান্ডেল খুলে ফেলেছিলেন তিনি। মুঠোফোন বন্ধ রেখেছিলেন।
জানা গেছে, বাসায় ফিরে সাইফ গৃহকর্মী এলিয়ামা ফিলিপের সঙ্গে দেখা করে তাঁকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। কারণ, সাইফকে হামলাকারীর হাত থেকে বাঁচাতে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন তিনি। গতকাল বুধবার সকালে সাইফের বাসায় কিছু পুলিশ কর্মকর্তা গিয়েছিলেন। বিভিন্ন সূত্রে পাওয়া খবর অনুযায়ী সাইফের বয়ান নিতে গিয়েছিল পুলিশ। এই মামলার জন্য সাইফের বয়ান সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
কিন্তু পুলিশ সাইফের বয়ানের বিষয়টি এখন পর্যন্ত প্রকাশ করেনি সংবাদমাধ্যমের কাছে। সাইফের পিআর এক সংবাদমাধ্যমকে জানান, অভিনেতার বক্তব্য এখনো নেওয়া হয়নি। এদিকে জানা গেছে, সাইফ-কারিনার নিরাপত্তা সংস্থা বদলানো হচ্ছে।
গতকাল বলিউড অভিনেতা রণিত রায় সাইফের বাসায় গিয়েছিলেন। খবর যে সাইফ-কারিনার নিরাপত্তার দায়িত্ব এখন রণিত রায়ের সংস্থাকে দেওয়া হচ্ছে। আগামীকাল শুক্রবার শরিফুলকে বান্দ্রা আদালতে পেশ করা হবে।
উল্লেখ্য, সাইফ আলীকে ছুরিকাঘাতের অভিযুক্ত ব্যক্তি ঘটনার বিবরন দিতে গিয়ে পুলিশের কাছে বলেছিলেন, তিনি দেখেছিলেন আবাসনের দুজন নিরাপত্তারক্ষী তখন অঘোরে ঘুমাচ্ছিলেন। এর মধ্যে একজন রক্ষী কেবিনের মধ্যে গভীর ঘুমে ছিলেন। আর একজন রক্ষী মূল ফটকের কাছেই ঘুমাচ্ছিলেন বলে জানিয়েছেন শরিফুল।
আরও দুজন নিরাপত্তারক্ষী ঠিকমতো পাহারা দিচ্ছিলেন না বলে দাবি করেন তিনি। সেখানে সিসিটিভি কাজ করছিল না। আর এই সুযোগ পুরোপুরি কাজে লাগিয়েছেন বলে পুলিশকে জানান শরিফুল। তিনি প্রথমে পেছনের সিঁড়ি দিয়ে এবং পরে ডাক্ট এলাকার পাইপ বেয়ে সাইফ-কারিনার অ্যাপার্টমেন্টে পৌঁছে যান। শৌচাগারের জানালার কাচ ভেঙে তৈমুর-জেহর বেডরুমে আততায়ী প্রবেশ করেছিলেন বলে জানা গেছে।
পুলিশের জেরায় অভিযুক্ত ব্যক্তি স্বীকার করেছেন যে শাহরুখ খানের বাংলো মান্নাতেও চুপিসারে ঢোকার পরিকল্পনা করেছিলেন তিনি। এমনকি মান্নাতের বিশাল প্রাচীর টপকানোর জন্য সাত থেকে আট ফুট উচ্চতার এক লোহার মই নিয়ে সেখানে হাজির হয়েছিলেন শরিফুল।
গত মঙ্গলবার পুলিশের এক কর্মকর্তা গনমাধ্যমকে জানিয়েছেন, অভিযুক্ত জানতেন না যে তিনি সাইফ-কারিনার বাসায় প্রবেশ করেছিলেন। সাইফের ওপর হামলার পরের দিন সকালে তিনি বিষয়টি জানতে পেরেছিলেন বলে পুলিশ জানিয়েছেন। হামলাকারী শুনেছিলেন, বান্দ্রায় বড়লোকেরা থাকেন, তাই তিনি এই এলাকা বেছে নিয়েছিলেন। আর পুলিশের দাবি অনুযায়ী, তারা এ ব্যাপারেও সম্পূর্ণ নিশ্চিত যে অভিযুক্ত শরিফুল বাংলাদেশের নাগরিক। তাঁর পরিবারের সবাই বাংলাদেশেই থাকেন। মেঘালয় দিয়ে অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেছিলেন শরিফুল।