সময়ের জনমাধ্যম

সীমান্ত এলাকায় বাড়ছে মাইন বিস্ফোরণ

Last Updated on 2 months by zajira news

কক্সবাজার প্রতিনিধি, জাজিরা নিউজ: কক্সবাজার ও বান্দরবান-সংলগ্ন মিয়ানমার সীমান্তে স্থল মাইন বিস্ফোরণের ঘটনা বাড়ছে। গত চার মাসে কমপক্ষে ২০টি বিস্ফোরণের ঘটনায় ২০ জন গুরুতর আহত হয়েছেন । বিশেষ করে দোছড়ি ও নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউনিয়নের ফুলতলির ৪৭, ৪৮ ও ৪৯ নম্বর সীমানা পিলার এলাকায় এই বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটছে।

ঘুমধুমের বিপরীতে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে পাহাড়ে বাঁশ কাটতে গিয়ে গত বৃহস্পতিবার (পহেলা মে) আরাকান আর্মির পুঁতে রাখা স্থলমাইন বিস্ফোরণে মনসুর আহমেদ (২৬) নামে এক বাংলাদেশি নাগরিক গুরুতর আহত হয়েছে। তাকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি উখিয়া উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের সিরাজুল ইসলামের ছেলে।

নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসরুরুল হক গতকাল বাংলাদেশি নাগরিক আহত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, কক্সবাজার ব্যাটালিয়ন (৩৪ বিজিবি)-এর অধীন তুইঙ্গাঝিরি বিওপির দায়িত্বপূর্ণ সীমান্তের ৩৯ নম্বর পিলার-সংলগ্ন কাঁটাতারের পার্শ্ববর্তী স্থানে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে বাঁশ কাটার সময় স্থলমাইন বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। ঘটনায় গুরুতর আহত বাংলাদেশি নাগরিকের বাম পায়ের আঙুল ও পাতা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। তাকে চিকিৎসার জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।

স্থল মাইন বিস্ফোরণের ঘটনা বাড়ছে জানিয়ে নাইক্ষ্যংছড়ির ১১ বিজিবি অধিনায়ক লে. কর্নেল এস কে এম কফিল উদ্দিন কায়েস জানান, বিস্ফোরণ থেকে বাঁচার জন্য কোনোভাবেই সীমান্ত রেখা অতিক্রম করা যাবে না। বারবার সতর্ক করার পরও অনেকে সীমান্ত বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে শূন্য রেখা অতিক্রম করে ঢুকে পড়লে এই আহতের ঘটনা ঘটছে। এ জন্য সচেতনতা প্রয়োজন।

২৪ জানুয়ারি উপজেলার দোছড়ি ও নাইক্ষ্যংছড়ি সদর ইউপির ফুলতলির ৪৭, ৪৮ ও ৪৯ নম্বর সীমান্ত পিলারের মিয়ানমারের অভ্যন্তরে পৃথক স্থলমাইন বিস্ফোরণে আরও তিনজন আহত হওয়ার ঘটনা ঘটে।

ফুলতলির ৪৮ নম্বর সীমান্ত পিলারের মিয়ানমার অভ্যন্তরে ৩ ফেব্রুয়ারি স্থলমাইন বিস্ফোরণে তরিকুল নামে এক যুবক আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় তার বাম পায়ের গোড়ালি বিচ্ছিন্ন হয়েছে।

৮ এপ্রিল জারুলিয়াছড়ি বিওপির সীমান্তবর্তী ৪৬-৪৭ নং পিলারে শূন্য রেখায় স্থল মাইন বিস্ফোরণে মো. তৈয়ব (৩৫) নামে এক যুবকের পা বিচ্ছিন্ন হয়েছে। ২৬ এপ্রিল রাতে চাকঢালা বিওপির সীমান্তে শূন্য রেখায় মিয়ানমারের অভ্যন্তরে বিস্ফোরণে নাইক্ষ্যংছড়ি ইউনিয়নের চাকঢালা এলাকার লাম্বা মাঠ ৬ নম্বর ওয়ার্ডের আবদুল হক শানের ছেলে মো. জুবাইরের (২৫) পা বিছিন্ন হয়ে যায়।

স্থানীয়রা জানান, বাংলাদেশের পণ্য পাচারের জন্য মিয়ানমার সীমান্তের ওপারে যান। ওপার থেকে গরুসহ বিভিন্ন পণ্য নিয়ে এপারে যাওয়া-আসার সময় সীমান্তে শূন্য লাইন এলাকায় মিয়ানমারের অভ্যন্তরে পুঁতে রাখা স্থল মাইন বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটছে। বেসরকারি হিসাব মতে গেল চার মাসে ২০ জনের অধিক স্থল মাইন বিস্ফোরণে আহত হয়েছেন।