সময়ের জনমাধ্যম

নিখোঁজ যুবককে পাওয়া গেল মিল্টন সমাদ্দারের আশ্রমে, পেটে কাটা দাগ

মিল্টন সমাদ্দারের আশ্রয়কেন্দ্র থেকে উদ্ধার হওয়া মো. সেলিম এর পেটে কাটা দাগ দেখে স্বজনেরা চিন্তিত । ছবিটি শুক্রবার বিকেলে ঈশ্বরগঞ্জের বৃ-পাঁচাশি গ্রামের- জাজিরা নিউজ

Last Updated on 1 year by zajira news

নিউজ ডেস্ক, জাজিরা নিউজ: প্রায় ছয় মাস আগে ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ থেকে নিখোঁজ হন মানসিক ভারসাম্যহীন মো. সেলিম (৪০)। রাজধানীর মিরপুরে মিল্টন সমাদ্দারের ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ আশ্রয়কেন্দ্র থেকে তাঁকে উদ্ধার করেছেন পরিবারের সদস্যরা। সেলিম ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার বৃ-পাঁচাশি গ্রামের মো. হাসিম উদ্দিনের ছেলে।

স্বজনেরা জানান, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ইউটিউবে প্রচারিত ভিডিও দেখে তারা সেলিমকে চিনতে পারেন। পরে ঈশ্বরগঞ্জ থেকে স্বজনেরা ঢাকায় গিয়ে মিল্টন সমাদ্দারের ‘চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এজ কেয়ার’ আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বৃহস্পতিবার (৯ মে) তাকে উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসেন।

সেলিমের ছোট ভাই মাহিন মিয়া বলেন, ভাইকে নিয়ে আসার সময় ফাউন্ডেশনে জাতীয় পরিচয়পত্রসহ বিভিন্ন কাগজ ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের প্রত্যয়নপত্র জমা দিতে হয়েছে। বাড়িতে আনার পর ভাইয়ের পেটের ডান পাশে অস্ত্রোপচারের বড় দাগ দেখে তারা সন্দেহ করছেন, ভাইয়ের শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গহানি হতে পারে। তিনি বলেন, ‘আমরা হতদরিদ্র পরিবার। অর্থের অভাবে এখন ভাইয়ের অঙ্গহানি হয়েছে কি না, তা পরীক্ষা করতে চিকিৎসকের কাছে যেতে পারছেন না।

সেলিমের মা রাবিয়া খাতুন বলেন, ‘আমার ছেলে মানসিকভাবে অসুস্থ ছিল, কিন্তু তার শরীরে কোনো দাগ ছিল না। পরিকল্পিতভাবে আমার ছেলেকে নির্যাতনের পর তার কোমরের দু’পাশে কাটাছেঁড়া করে কিডনি খুলে নেওয়া হয়েছে। আমরা এর বিচার চাই।’

স্বজনদের অভিযোগ, মিল্টন সমাদ্দারের আশ্রয়কেন্দ্রে সেলিমকে নির্মমভাবে নির্যাতন করে তার কিডনি বের করে নেওয়া হয়েছে। এ খবর ছড়িয়ে পড়লে আশপাশের মানুষজন সেলিমের বাড়িতে জড়ো হন। লাল কাপড় পরিহিত কাউকে দেখলেই ভয়ে আঁতকে উঠছেন সেলিম। ঠিকমতো হাঁটতেও পারছেন না। কোমরের দুপাশে কাটাছেঁড়ার দাগ। এখনো শুকায়নি সেই দাগগুলো।

স্ত্রী ফাতেমা বেগম বলেন, ‘আমার দুইটা মেয়ে। বড় মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। ছোট মেয়ে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ছে। পাগল হলেও তিনি আমার স্বামী। এখন তার যে অবস্থা করেছে, মনে হয় আমার মেয়েরা এতিম হবে। আমি বিধবা হয়ে যাব।’

সেলিমের চাচাতো ভাই আবদুর রশিদ বলেন, ‘সেলিমের অবস্থা খুব খারাপ। তার পেটের নাভির নিচে কাটা দাগ রয়েছে। তার শরীরে পানি জমে গেছে। তাকে চিকিৎসা করাতে ময়মনসিংহের চরপাড়া নগরীর একটি ক্লিনিকে নিয়ে আসছি। এখান থেকে ডাক্তার দেখিয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করাব।’

এ বিষয়ে ঈশ্বরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মাজেদুর রহমান বলেন, খবর পেয়ে ওই বাড়িতে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। পরিবারের লোকজনকে তার চিকিৎসা ও কিছু পরীক্ষার করার জন্য বলে দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষার পর বোঝা যাবে ঘটনাটা কী।

Reendex

Must see news