Last Updated on 4 months by zajira news
আন্তর্জাতিক ডেস্ক, জাজিরা নিউজ: ‘ভোলে বাবা’ নামে পরিচিত এক ব্যক্তি ভারতের উত্তর প্রদেশের হাথরস জেলায় ধর্মীয় আয়োজনটি করেছিলেন । তাঁর অনুসারীরাই ওই ধর্মীয় আয়োজনে গিয়েছিলেন। পরে হুড়োহুড়িতে পদদলিত হয়ে প্রাণ হারান ১২১ জন, আহত হন আরও অনেকে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে।
ঘটনার পরদিন বুধবার (০৩ জুলাই) সকালে উত্তরপ্রদেশ পুলিশের একটি বড় দল ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়েছে। তবে ধর্মীয় গুরুর সন্ধান এখনও মেলেনি বলে জানিয়েছে পুলিশ।
রতি ভানপুর গ্রামে এ ঘটনার পর থেকে ভোলে বাবার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। তাঁকে খুঁজছে উত্তর প্রদেশের পুলিশ। ভোলে বাবার নাম নারায়ণ শাকর হরি। তিনি শাকর বিশ্ব হরি বা ভোলে বাবা নামে পরিচিত।
স্থানীয় গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, বুধবার উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ঘটনাস্থলে যেতে পারেন। প্রশাসনের একটি সূত্র জানিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রী এই ঘটনার তদন্তের জন্য একটি বিশেষ কমিটি গঠন করেছেন। এই কমিটির নেতৃত্বে রয়েছেন আগরার অতিরিক্ত ডিজিপি।
প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, সৎসঙ্গে যে প্যান্ডেল তৈরি করা হয়েছিল তা ছিল অপর্যাপ্ত। গরম এবং আর্দ্রতার কারণে ভক্তরা সৎসঙ্গ শেষ হতেই মাঠ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য ধাক্কাধাক্কি শুরু করেন। সংকীর্ণ গেট দিয়ে বেরোনোর সময় ভিড়ে পদদলিত হয়ে অনেকে মারা যান।
পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, ফুলরাই গ্রাম থেকে প্রায় ১০০ কিলোমিটার দূরে মৈনপুরি এলাকায় অবস্থিত ভোলেবাবার আশ্রমে তদন্তকারীরা উপস্থিত হয়েছেন। প্রশাসন নির্দেশ দিয়েছে, এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত অভিযুক্তদের কঠোর শাস্তি দিতে হবে।
এই ঘটনার পর প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। পদদলিত হওয়ার জন্য অনেকেই আয়োজক ‘সৎসঙ্গ কমিটি’কে দায়ী করেছেন, আবার অনেকেই প্রশাসনের দিকে আঙুল তুলছেন। কিছু মানুষের দাবি, ভক্তদের অতিরিক্ত ভিড়ের কারণেই এই দুর্ঘটনা ঘটেছে।
ঘটনার সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি লোকসভায় বক্তৃতা দিচ্ছিলেন। বিষয়টি জানার পর তিনি শোকপ্রকাশ করেন এবং রাজ্য সরকারকে সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দেন। পরে প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে ঘোষণা করা হয়, নিহতদের পরিবারকে ২ লক্ষ টাকা এবং আহতদের ৫০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়া হবে।
স্বঘোষিত ধর্মগুরু ভোলে বাবার দাবি, অতীতে তিনি গোয়েন্দা বিভাগে কাজ করেছেন। ধর্মীয় বাণী প্রচারের জন্য ২৬ বছর আগে চাকরি ছেড়েছিলেন। তার ভক্তরা গোটা ভারতে ছড়িয়ে রয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার কোনো অ্যাকাউন্ট নেই, তবে তার অনুপ্রেরণা সমাজে বিভিন্ন স্তরে কাজ করে।
প্রতি মঙ্গলবার আলিগড়ে ভোলে বাবার নামে ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় যেখানে হাজার হাজার ভক্ত জড়ো হন। মহামারি করোনার সময়ও তার অনুষ্ঠান নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছিল।