সময়ের জনমাধ্যম

‘আমি বাংলায় গান গাই’ গানের শিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের প্রয়াণ

চিকিৎসাধীন অবস্থায় কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে প্রতুল মারা যান

Last Updated on 4 weeks by zajira news

নিউজ ডেস্ক, জাজিরা নিউজ: ‘আমি বাংলায় গান গাই, আমি বাংলার গান গাই’ গানের ভারতীয় শিল্পী প্রতুল মুখোপাধ্যায় দীর্ঘ রোগভোগের পর চলে গেলেন

শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে কলকাতার এসএসকেএম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় প্রতুল মারা যান বলে জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের সংবাদ মাধ্যম ‘সংবাদ প্রতিদিন’; তার বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর।

জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহ থেকে এই হাসপাতালে ভর্তি ছিলেন শিল্পী। এর মধ্যে প্রতুল মুখার্জির শরীরে একটি অস্ত্রোপচার হয়। এরপর তার হার্ট অ্যাটাকও হয় এবং তিনি আক্রান্ত হন নিউমোনিয়াতেও।

চেতনা হারালে গত মঙ্গলবার তাকে হাসপাতালের আইটিইউতে নেওয়া হয়েছিল। সেখান থেকে আর ফেরানো যায়নি গানে গানে মানুষের কথা বলে যাওয়া এই শিল্পীকে। গেল বছর থেকেই অসুস্থ ছিলেন প্রতুল মুর্খাজি। মাসখানেক আগেও তার হাসপাতালবাসের খবর এসেছিল।

এই শিল্পীর বহু গানের মধ্যে ‘চার্লি চ্যাপলিন’, ‘ডিঙ্গা ভাসাও আলু বেচো’ শিরোনামের গানদুটো অন্যতম। ২০১৬ সালে সিঙ্গুরে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপস্থিতিতে যখন ১৪ হাজার কৃষককে তাদের জমি ফেরত দেওয়া হয়, তখন প্রতুলের কণ্ঠে শোনা গিয়েছিল ‘আমি বাংলায় গান গাই’ গানটি।

এছাড়া বাংলাদেশে বেঙ্গল ফাউন্ডেশন থেকে প্রতুলের একটি অ্যালবাম প্রকাশিত হয় ২০১১ সাালের মার্চে। অ্যালবামটির নাম ‘আমি বাংলায় গান গাই’। এই গানেই প্রতুল বেশি মিশে গিয়েছিলেন বাংলাদেশের দর্শকদের মাঝে।

প্রতুল মুখোপাধ্যায়ের জন্ম ১৯৪২ সালে বাংলাদেশের বরিশালে। তার বাবা ছিলেন স্কুলশিক্ষক। সাতচল্লিশের দেশভাগের পর বাবা-মায়ের সঙ্গে প্রতুল চলে যান ওপার বাংলায়; তখন তাদের বসবাস শুরু হয় চুঁচুড়ায়।

১৯৫২ সালে তার স্কুলে যাওয়া শুরু। স্কুলের মঞ্চেই অভিনয় দক্ষতা দেখিয়েছিলেন তিনি। ‘গায়ক অভিনেতা’ হিসেবে একটি স্কুলের নাটকের মঞ্চে আত্মপ্রকাশ করেন প্রতুল।

‘গোঁসাইবাগানের ভূত’ সিনেমায় প্লেব্যাক করেছেন প্রতুল। তার অ্যালবামগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘পাথরে পাথরে নাচে আগুন’, ‘যেতে হবে’, ‘ওঠো হে’, ‘কুট্টুস কাট্টুস’, ‘স্বপ্নের ফেরিওয়ালা’, ‘তোমাকে দেখেছিলাম’, ‘স্বপনপুরে’, ‘অনেক নতুন বন্ধু হোক’, ‘হযবরল’, ‘দুই কানুর উপাখ্যান’, ‘আঁধার নামে’।

১৯৬২ সালে তিনি প্রথম গান লেখেন। এর আগে বিভিন্ন কবির কবিতায় সুর দিতেন তিনি। তারপর এক দশক ধরে বেশ কয়েকটি গণসংগীত রচনা করেছেন। নকশালদের মধ্যে তিনি পরিচিত ছিলেন ‘সেজদা কমরেড’ নামে।

ব্যাংকার হিসেবে কর্মজীবন শুরু করা প্রতুলের প্রথম একক অ্যালবাম ‘যেতে হবে’ প্রকাশিত হয় ১৯৯৪ সালে।