সময়ের জনমাধ্যম

সান্ডা খাওয়ার ব্যাপারে কী বলে ইসলাম ?

Last Updated on 1 month by zajira news

ধর্ম ডেস্ক, জাজিরা নিউজ: মরু অঞ্চলের প্রাণী সান্ডা ধরা ও খাওয়া নিয়ে সম্প্রতি মধ্যপ্রাচ্যে বসবাসরত এক প্রবাসী বাংলাদেশীর ভিডিও ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এরপর থেকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই প্রাণীটি নিয়ে নানা রকম আলোচনা চলছে। তৈরি হচ্ছে মজার কৌতুক, মিম ইত্যাদি।

এই প্রাণীটি খাওয়া কি ইসলামসম্মত? সান্ডা খাওয়া কি হালাল, না হারাম? এই প্রশ্নও উঠেছে—

সান্ডা মূলত এক ধরনের মরু অঞ্চলের টিকটিকি, বৈজ্ঞানিকভাবে যাকে বলা হয় ‘Uromastyx’, আর আরবি ভাষায় এর নাম ‘দাব্ব’ (ضبّ)। এটি আফ্রিকা ও মধ্যপ্রাচ্যের মরু অঞ্চলের প্রাণী। এর শরীর শক্ত, লেজ মোটা ও খাঁজযুক্ত, যা আত্মরক্ষায় ব্যবহার হয়। অনেক দেশে এর তেল ব্যবহৃত হয় আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায়, বিশেষত যৌন শক্তি বৃদ্ধির ওষুধ হিসেবে।

সান্ডা খাওয়ার ব্যাপারে নবিজি (সা.) কী বলেছিলেন?
আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি ও খালিদ ইবনে ওয়ালিদ (রা.) আল্লাহর রাসুলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সঙ্গে উম্মুল মুমিনীন হজরত মায়মুনার (রা.) বাড়িতে গেলাম। তখন ভুনা দব্ব বা সান্ডা আনা হলো।

আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) সেদিকে হাত বাড়াচ্ছিলেন। মায়মুনার (রা.) বাড়িতে উপস্থিত নারীদের একজন বললেন, আপনারা আল্লাহর রাসুলকে (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) জানান তিনি কী খেতে যাচ্ছেন। তখন তারা বললেন, হে আল্লাহর রাসুল, এটি দব বা সান্ডা। এ কথা শুনে আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) তার হাত তুলে নিলেন।

আমি বললাম, হে আল্লাহর রাসুল! এটা কি হারাম? রাসুল (সা.) বললেন, না। কিন্তু যেহেতু এটা (খাওয়ার প্রচলন) আমাদের এলাকায় ছিল না, তাই (অভ্যাস না থাকার কারণে) আমি এটা অপছন্দ বা অরুচিকর মনে করি

তখন খালিদ (রা.) নবিজির (সা.) সামনেই ওই পাত্রটি টেনে নিয়ে সান্ডার মাংস খেলেন। (সহিহ বুখারি, সহিহ মুসলিম) অর্থাৎ নবিজি (সা.) অরুচিকর মনে হওয়ায় নিজে সান্ডা খাননি, তবে সাহাবিদের খেতে নিষেধও করেননি। সাহাবিরা তার সামনেই এটি খেয়েছেন।

ফকিহ বা ইসলামি আইনবিশারদগণ সান্ডা খাওয়ার বিধানের ব্যাপারে মতভেদ করেছেন। হানাফি ফকিহদের মতে সান্ডা খাওয়া হারাম। কারণ এটা তাদের দৃষ্টিতে খাবাইস বা নাপাক ও অরুচিকর প্রাণীর অন্তর্ভুক্ত। যেসব হাদিসে সান্ডা খাওয়ার উল্লেখ পাওয়া যায়, সেগুলোকে তারা ইসলামের শুরুর সময়ের ঘটনা হিসেবে ব্যাখ্যা করেন—অর্থাৎ, সেই সময়ের, যখন কোরআনের এই আয়াত অবতীর্ণ হয়নি,

আর তিনি তাদের জন্য অপবিত্র বস্তুসমূহ হারাম করেছেন। (সুরা আ’রাফ: ১৫৭)